মিয়ানমারের গণতন্ত্রকামী নেত্রী অং সাং সু চি’র নোবেল শান্তি পুরস্কার ফিরিয়ে নেয়ার জন্য অনলাইনে এক আবেদনে স্বাক্ষর করেছেন প্রায় এক লাখ মানুষ। মিয়ানমারের সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা মুসলিমদের বিরুদ্ধে ব্যাপক মাত্রায় মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনায় কার্যকর অবস্থান নিতে ব্যর্থ হওয়ায় তার বিরুদ্ধে ‘চেঞ্জ ডট অর্গে’ এ আবেদন জানানো হয়েছে। আবেদনটি ইন্দোনেশিয়া থেকে করা হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
বলা হয়েছে, আন্তর্জাতিক শান্তি এবং ভ্রাতৃত্ববোধ রক্ষায় যারা কাজ করেন, তাদেরকেই নোবেল শান্তি পুরস্কারের মতো সর্বোচ্চ পুরস্কার দেয়া হয়। সুচির মতো নোবেল শান্তি পুরস্কারপ্রাপ্তরা জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত এ মূল্যবোধ রক্ষা করবেন, সকলে এমটাই আশা করে। যখন একজন নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী শান্তি রক্ষায় ব্যর্থ হন, তখন শান্তির স্বার্থেই নোবেল কমিটির উচিত এ পুরস্কার হয় জব্দ করা, নয়তো ফিরিয়ে নেওয়া।
চেঞ্জ ডট অর্গে সুচির নোবেল শান্তি পুরস্কার প্রত্যাহারের আবেদনের শুরুতে বিবিসির এক সাংবাদিক মিশাল হোসেন সম্পর্কে তিনি যে মন্তব্য করেছিলেন, সে ঘটনারও উল্লেখ করা হয়েছে। ২০১৩ সালে সু চি’র সাক্ষাতকার নেন মিশাল। এতে রোহিঙ্গা মুসলিমদের সঙ্গে মিয়ানমারের রাষ্ট্রীয় আচরণ নিয়ে তাকে অনেক অপ্রিয় এবং কঠিন প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হয়।
পরে সু চি মন্তব্য করেছিলেন, ‘মিশাল হোসেন যে একজন মুসলিম কেউ তো আগে আমাকে জানায়নি।’ সু চি’র মুখে এমন কথা সেসময় অনেককেই অবাক করেছিল। ফলে মিয়ানমারের মুসলিম সংখ্যালঘুদের ব্যাপারে তার মনোভাব নিয়ে অনেকের মনে প্রশ্নের জন্ম দেয়।
তাই নরওয়ের নোবেল শান্তি কমিটির উদ্দেশ্যে এ আবেদনে সু চি’র এ পুরস্কার প্রত্যাহারের দাবি জানানো হয়। বলা হয়, যারা বিশ্ব শান্তি বজায় রাখতে অঙ্গীকারবদ্ধ তাদেরকেই শুধু সম্মানজনক এ পুরস্কার দেওয়া উচিত।
প্রসঙ্গত, রোহিঙ্গা মুসলিমদের ওপর মিয়ানমারে ধারাবাহিক নির্যাতনের ব্যাপারে অং সা সু চি তার নিশ্চুপ ভূমিকার কারণে সমালোচিত হয়েছেন। তিনি দেশটিতে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূতকে অনুরোধ জানিয়েছেন যেন রোহিঙ্গাদের এ নামে ডাকা না হয়।
সূত্র: বিবিসি