খবরের কাগজে দেখলাম সিলেটে একটা মেয়েকে নির্মম ভাবে কোপানো হয়েছে, মেয়েটার নাম খাদিজা। খাদিজা এখন হাসপাতালে এবং ওর অবস্থা খুবই আশংকাজনক। ডাক্তাররা এখনো নিশ্চিত বলতে পারছেন না খাদিজা বিপদ কাটিয়ে উঠতে পেরেছে কিনা কিংবা পারবে। পরিক্ষা শেষে মেয়েটি যখন বাড়ী ফিরছিল তখনই মেয়েটির উপর বর্বর ও কাপুরুষচিত হামলা করে বদরুল নামের এক যুবক। মেয়েটার কি অপরাধ ছিল? মেয়েটা বদরুলের প্রত্যাখান করেছিল। প্রেমের প্রস্তাব প্রত্যাখান করার কারনে খাদিজাকে নির্মম ভাবে কুপিয়ে আহত করে বদরুল। কতটা নিশংস ও নির্মম হলে একজন মানুষ কে এভাবে হামলা করা যেতে পারে।
ঘটনার বেশ কিছু প্রতক্ষ্যদশী ছিল, মোবাইল ফোনে ধারণকৃত ভিডিও ফুটেজ ও বেশ কিছু ছবিও আছে। অপরাধিকে ধরাও হয়েছে। অপরাধি বলছি কারন বদরুল নিজেও হামলার দায় স্বীকার করেছে। তাহলে এই হামলার বিচার করতে কত সময়ের প্রয়োজন হবে? চাক্ষুষ প্রমাণ আছে, স্বাক্ষীও আছে, তবে স্বাক্ষী আদালতে স্বাক্ষ্য দিবে কিনা এটা নিশ্চিত করা যাচ্ছে না।কারন আমরা স্বাক্ষীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে অক্ষম এবং এই নিরাপত্তাহীনতার জন্য দায়ী সরকার, আইন শৃংখলা বাহিনী ও বিচার বিভাগ। বদরুল সরকার দলীয় ছাত্র সংঘটনের কর্মী। এই কারনে প্রকৃত স্বাক্ষীরা নিরাপত্তার কারনে স্বাক্ষী দিতে যাবে না। কিন্তু এই নিরাপত্তা নিশ্চিত করার কাজ সরকারের।ঘটনার পর বদরুলকে দল থেকে বহস্কার করা হয়েছে, বহস্কার যদি অন্যায় করার কারনে করা হয়ে থাকে তাহলে তো খুবই ভালো কথা। নাকি দায় এড়ানোর জন্য বহস্কার করা হয়েছে সেটাইই বিবেচ্য বিষয়।
এই মেয়েটা যে আজকে মৃত্যুর সাথে লড়ছে, সে কি তার এদেশে জন্মানোর দায় শোধ করছে। এই দায় কি তার একার। রাষ্ট্র, আইন ও বিচার বিভাগের কি কোন দায় নেই?
সিলেটের বদরুল কিংবা ব্লগার হত্যাকারীদের মধ্যেও কোন মৌলিক পার্থক্য নাই। পার্থক্য একটাই এদের রাজনৈতিক ও ধর্মিয় মতাদর্শ হয়ত আলাদা। এদের চেহারা ভাষা রাজনৈতিক বা সামাজিক অবস্থান যেরকমই হোক, এদের সমূলে উৎপাটন করতে হবে।এর জন্য প্রয়োজন নিরপেক্ষ দৃস্টি ভঙ্গি।
মনুষ্যত্ব বোধ বিবর্জিত কাওকেই আমি মানুষ হিসাবে গণ্য করি না তেমনি আমার হিসাবে বদরুল ও মানুষের মধ্যে পড়ে না। বদরুলের শাস্তি চাই বলবো? বদরুলের শাস্তিও কি দাবী বা লড়াইটা করেই আদায় করতে হবে? আমার এই লড়াইটা সার্বজনীন। আমার এই প্রতিবাদ সকল অন্যায় ও অত্যাচারের বিরুদ্ধে। আমরা যদি বদরুলের সঠিক শাস্তি দিতে পারি তাহলে খাদিজার প্রতি অন্যায় কিছুটা হলেও লাঘব হবে।