নার্সিং ও মিডওয়াইফারি অধিদফতরের অধীনে নিয়োগপ্রাপ্ত সাড়ে নয় হাজার সিনিয়র স্টাফ নার্স নিয়োগে একটি চক্র ‘গুড পোস্টিং’-এর নামে কোটি টাকার চাঁদাবাজিতে নেমেছে। অভিযোগ উঠেছে, ঢাকা ও এর আশপাশের হাসপাতালে পদায়নের ক্ষেত্রে সর্বনিম্ন এক লাখ থেকে সর্বোচ্চ দেড় লাখ এবং ঢাকার বাইরে ৬০ হাজার থেকে সর্বোচ্চ ৮০ হাজার টাকায় পদায়ন চলছে।
স্বাধীনতা নার্সেস পরিষদ (স্বানাপ) ডিপ্লোমা বেকার নার্সেস অ্যাসোসিয়েশন ও ডিপ্লোমা নার্সেস অ্যাসোসিয়েশনের এক শ্রেণির নেতা ভালো পোস্টিং পাইয়ে দেয়ার নামে আগাম অর্থ সংগ্রহ করছেন। ইতোমধ্যেই নার্সিং ও মিডওয়াইফারি অধিদফতরের নবনিযুক্ত মহাপরিচালক ডা. কাজী মোস্তফা সরওয়ারকে দিয়ে কয়েক শত নার্সের পদায়নে স্বাক্ষর নিয়েছে বলেও জোর গুঞ্জন চলছে।
পাবলিক সার্ভিস কমিশনের (পিএসসি) সুপারিশক্রমে গত ৫ সেপ্টেম্বর মোট নয় হাজার ৪৮৪ সিনিয়র স্টাফ নার্স নিয়োগের চূড়ান্ত ফল প্রকাশ করে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। নিয়োগপ্রাপ্তদের সুষ্ঠু পদায়নের জন্য বর্তমান মহাপরিচালককে সভাপতি ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের (নার্সিং শাখা) সিনিয়র সহকারী সচিব লুৎফর রহমানকে সদস্যসচিব করে চার সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়।
নার্সিং ও মিডওয়াইফারি অধিদফতরে কর্মরত একাধিক কর্মকর্তা জাগো নিউজকে জানান, যখনই নার্স নিয়োগ বা পদায়ন হয় তখনই কথিত এ নেতারা ক্ষমতাসীন দলের লোক সেজে চাঁদাবাজি করে। ২০১৩ সালে একই চক্র ৪ হাজার ১০০ নার্স পদায়নে কোটি কোটি টাকার বাণিজ্য করেছে।
বেসরকারি হাসপাতালে কর্মরত নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক নার্স জানান, তার বাড়ি গাজীপুরে। ঢামেক হাসপাতালে কর্মরত একজন চিকিৎসক নেতা তাকে রাজধানীর একটি সরকারি হাসপাতালে পদায়ন পাইয়ে দিতে দেড় লাখ টাকা দাবি করেছেন। টাকা দিলে এক সপ্তাহে আর না দিলে পদায়ন ঢাকার বাইরে দূরের জেলায় হবে বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন।
এদিকে অভিযোগ সম্পর্কে মঙ্গলবার রাতে নার্সিং ও মিডওয়াইফারি অধিদফতরের মহাপরিচালক ডা. কাজী মোস্তফা সারওয়ার বলেন, পদায়ন পেতে কোনো টাকাপয়সা খরচ করতে হবে না। নার্সদের নিজ নিজ জেলায় পদায়ন করা হবে।
তিনি আরো বলেন, নীতিমালার বাইরে কারো তদবির কিংবা সুপারিশে নিয়োগ হচ্ছে না। তবে কোনো চক্র আর্থিক উৎকোচ নিচ্ছে কিনা- সে ব্যাপারে তিনি সতর্ক দৃষ্টি রাখবেন বলে জানান।