নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভীর গত পাঁচ বছরে সম্পদ অনেকটাই বেড়েছে।
হলফনামায় দেয়া তথ্যমতে তার সম্পদ প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। গত পাঁচ বছরে সিটি কর্পোরেশনের মেয়র থাকাকালীন তুলনামূলকভাবে নগদ অর্থসহ সম্পদ পরিমাণের অনেকটাই বেড়েছে আইভীর।
আইভী নিজেকে স্বচ্ছ মনে করলেও সম্পদের পরিমাণ বৃদ্ধির ফলে নানা মহলে প্রশ্ন উঠেছে। মেয়র থাকাকালীন আইভীর বিরুদ্ধে নানা ধরনের দুর্নীতির অভিযোগ তুলেছেন একই দলের সাংসদ শামীম ওসমান। তবে আনীত অভিযোগ প্রমাণ করতে পারেননি তিনি।
এদিকে ২০১১ সালের সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের আগে যে হলফনামা তিনি জমা দিয়েছিলেন ও পাঁচ বছর পর এবার নির্বাচনে দেয়া হলফনামায় সম্পদের পরিমাণ বেড়ে দ্বিগুণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
২০১১ সালের সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে আইভীর অস্থাবর সম্পত্তির টাকা হিসেবে ১০ লাখ টাকা থাকলেও এবার (২০১৬) নির্বাচনে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে পৌনে ১৯ লাখ টাকা।
২০১১ সালের ৩০ অক্টোবরে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের প্রথম নির্বাচনে মেয়র পদে লড়েন আইভী। তার প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে আওয়ামী লীগের সমর্থিত প্রার্থী ছিলেন প্রভাবশালী আওয়ামী লীগ নেতা শামীম ওসমান। ওই সময় আইভী মোট আয় দেখিয়েছিলেন ১৬ লাখ টাকা। এর মধ্যে ২৬ হাজার ১৭৫ টাকা কর দিয়েছেন।
নিজের সম্পত্তি হিসেবে তিনি পৈতৃক সূত্রে পাওয়া ১৪ শতাংশ কৃষিজমির কথা উল্লেখ করেছেন। তিনি ওই সময়ে হলফনামায় উল্লেখ করেছেন, বাবার বাড়িতে তিনি বসবাস করেন এবং তার খরচ তার স্বামী বহন করেন। তার দুই ছেলের লেখাপড়ার খরচও স্বামী দেন। তার কোনো বাড়ি বা ফ্ল্যাট নেই। কোনো ব্যবসাও নেই।
ব্যাংকে শেয়ার বা সঞ্চয়পত্র নেই। অস্থাবর সম্পত্তি হিসেবে ব্যাংকে ১০ লাখ টাকা জমা রয়েছে বলে উল্লেখ করেছেন। নির্বাচনের খরচ হিসেবে তিনি ওই ১০ লাখ টাকা দেখিয়েছেন। মেয়র হিসেবে তিনি এ টাকা সম্মানী হিসেবে পেয়েছেন বলে উল্লেখ করেছেন।
এদিকে ২০১৬ সালের ২২ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিতব্য নির্বাচন উপলক্ষে দেয়া হলফনামায় আইভী উল্লেখ করেছেন, মেয়র হিসেবে তিনি বছরে বেতন পান ১১ লাখ ৩৪ হাজার টাকা। অস্থাবর সম্পদের মধ্যে নগদ টাকা ৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমা অর্থের পরিমাণ ১৫ লাখ ২১ হাজার ৪৭১ টাকা।
স্বর্ণ ও অন্য অলংকার ২ লাখ ৬০ হাজার টাকার। ইলেট্রনিক সামগ্রী ২ লাখ টাকার। আসবাবপত্র ১ লাখ ৯৩ হাজার টাকার। স্থাবর সম্পত্তির মধ্যে যৌথ মালিকানার ১১২ শতাংশ অকৃষি জমির ৮ ভাগের ১ ভাগের মালিক। আইভী পরিবারকে ১৭ লাখ টাকা ঋণ দিয়েছেন বলে উল্লেখ করেছেন।
আইভীর মোট সম্পদের পরিমাণ ৪২ লাখ টাকা। এছাড়া চিকিৎসাশাস্ত্রে পড়াশোনা করা আইভী তার শিক্ষাগত যোগ্যতার ঘরে লিখেছেন ডক্টর অব মেডিসিন (এমডি)। আইভীর কোনো ব্যক্তিগত গাড়ি নেই।
প্রসঙ্গত, নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে ৯ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র দাখিল করলেও ৮ জনের মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করে রিটার্নিং অফিসার। মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ তারিখ ৪ ডিসেম্বর। ভোট গ্রহণ ২২ ডিসেম্বর।