পানামা খাল দখলের হুমকি দিলেন ট্রাম্প

আন্তর্জাতিক ডেস্ক আপডেট: ২০২৪-১২-২৩ ১২:৫২:৪৭


পানামা খালকে যুক্তরাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণে ফিরিয়ে দিতে কিংবা ব্যবহারের ফি কমানোর দাবি জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তার অভিযোগ, মধ্য আমেরিকার দেশটি যুক্তরাষ্ট্রের জাহাজ ও অন্য নৌযান থেকে অতিরিক্ত ফি আদায় করছে।

রবিবার অ্যারিজোনায় এক সমাবেশে ট্রাম্প বলেন, ‘পানামা যে ফি আদায় করছে, তা হাস্যকর, একেবারেই অন্যায্য।’ তিনি বলেন, ‘আমাদের দেশের সাথে এই প্রতারণা অবিলম্বে বন্ধ হওয়া উচিত।

’ অন্য দেশের ভূখণ্ড দখলে নেওয়ার বিষয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট কিংবা দেশটির কোনো নেতার এমন মন্তব্য বিরল।

ট্রাম্পের এ মন্তব্যের জের ধরে দ্রুতই প্রতিক্রিয়া এসেছে পানামার প্রেসিডেন্ট হোসে রাউল মুলিনোর কাছ থেকে। তিনি বলেন, এই খাল ও আশেপাশের এলাকার প্রতি বর্গমিটার এলাকা তার দেশের, যুক্তরাষ্ট্রের নয়। তিনি বলেন, পানামার সার্বভৌমত্ব এবং স্বাধীনতা কোন বিতর্কের বিষয় নয়।

যদিও পানামা খাল যুক্তরাষ্ট্র কীভাবে নিয়ন্ত্রণে নেবে সে বিষয়ে কিছুই বলেননি ট্রাম্প। তবে এটি একটি ইঙ্গিত দেয় যে আগামী ২০ জানুয়ারি তার শপথ গ্রহণের পর যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রনীতি ও কূটনীতির কেমন পরিবর্তন হতে পারে।

এর আগে রবিবার ট্রাম্প একই ধরনের আরেকটি পোস্ট করেছিলেন। সেখানে তিনি লিখেছিলেন, পানামা খাল যুক্তরাষ্ট্রের জন্য ‘গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় সম্পদ’।

নৌপরিবহন ফি কমানো না হলে ‘আমরা দ্রুতই সর্বাত্মক ও কোন প্রশ্ন ছাড়াই পানামা খাল ফিরিয়ে নেওয়ার দাবি তুলবো।’

লাতিন আমেরিকার দেশ পানামার সাথে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক বেশ ঘনিষ্ঠ ছিল। তবে, গত বছর অর্থাৎ ২০২৩ সাথে পানামার সাথে চীন নতুন করে অর্থনৈতিক সম্পর্ক উন্নয়নের আলোচনা শুরুর পরই পানামার সাথে সম্পর্ক নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন করে ভাবনা তৈরি হয়েছে। চীন ও যুক্তরাষ্ট্রই এই খালটিকে সবচে বেশি ব্যবহার করে থাকে।

৫১ মাইল বা ৮২ কিলোমিটার দীর্ঘ পানামা খাল আটলান্টিক ও প্রশান্ত মহাসাগরের মধ্যে সংযোগ স্থাপন করেছে এবং এটি বিশ্ব বাণিজ্যে মালামাল পরিবহনের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

পানামা খালের কারণে দেশটির বিশাল ভূরাজনৈতিক গুরুত্ব রয়েছে। আটলান্টিক ও প্রশান্ত মহাসাগরকে একসাথে যুক্ত করেছে এই পানামা খাল। কয়েক বছর বন্ধ থাকার পর ২০১৬ সালের জুনে পানামা খালকে আরো প্রশস্ত করার পর খালটিকে জাহাজ চলাচলের জন্যে আবারও খুলে দেওয়া হয়।

শতাব্দী প্রাচীন এই খালটি ১৯০০ সালের শুরুর দিকে তৈরি করা হয়েছিলো এবং ১৯৭৭ সাল পর্যন্ত এর রক্ষণাবেক্ষণ যুক্তরাষ্ট্রের হাতেই ছিলো। এরপর পর্যায়ক্রমে পানামার হাতে ছেড়ে দেয়ার জন্য করা এক চুক্তির আওতায় একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত খালটি যৌথ ব্যবস্থাপনায় ছিলো। ১৯৯৯ সালে এর পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নেয় পানামা। প্রতি বছর প্রায় ১৪ হাজার জাহাজ এ খাল ব্যবহার করে থাকে। কন্টেইনারবাহী এসব জাহাজ মূলত গাড়ী, প্রাকৃতিক গ্যাস, সামরিক উপকরণসহ বিভিন্ন পণ্য পরিবহন করে থাকে।

সূত্র : বিবিসি বাংলা।

এনজে