বৃহস্পতিবার, ১২ ডিসেম্বর ২০২৪
আজকের মধ্যে আয়কর রিটার্ন না দিলে জরিমানা
প্রকাশিত - নভেম্বর ৩০, ২০১৬ ৫:৫৩ পিএম
আজ ৩০ নভেম্বর ব্যক্তিশ্রেণির করদাতার আয়কর দেওয়ার শেষ দিন। সরকার নতুন করে এ দিনটিকে ‘ট্যাক্স ডে’ হিসেবে ঘোষণা করেছে। আজকের মধ্যে আয়কর রিটার্ন জমা না দিলে বাড়তি অর্থ গুণতে হবে। অতীতে উপ-কর কমিশনারের কাছ থেকে সময় বাড়ানোর আবেদন করা হলে জরিমানা দিতে হতো না। কিন্তু এবার উপ -কর কমিশনারের কাছে সময় বাড়ানোর আবেদন করা হলেও বার্ষিক (৩৬৫ দিন হিসেবে) ২৪ শতাংশ হিসেবে প্রতিদিনের জন্য সুদ গুণতে হবে। আর সময় বাড়ানোর আবেদন না করে পরবর্তীতে রিটার্ন জমা দিলে, জরিমানার সঙ্গে বাড়তি মাশুলও গুণতে হবে।
আয়কর বিভাগের সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, রিটার্ন দাখিলের জন্য সময়ের আবেদন করা হলে তা অনুমোদনের পর প্রযোজ্য করের উপর বার্ষিক ২৪ শতাংশ হারে সুদ গুণতে হবে। তবে সেটি হবে, রিটার্ন দাখিলের সময় যে পরিমাণ অর্থ কর হিসেবে জমা হবে - কেবল ওই অর্থের উপর। এ অর্থ প্রতিদিনের হিসেবে প্রযোজ্য হবে। ধরা যাক, একজন করদাতার চলতি করবর্ষে আয়কর হবে ২০ হাজার টাকা। তার যদি একটি গাড়ি থাকে, তাহলে তিনি নিবন্ধনের সময় বিআরটিএ অফিসে হয়ত ১৫ হাজার অগ্রিম কর দিয়েছেন। এখন সময়মত আয়কর না দেওয়ার জন্য তার সুদ গুণতে হবে বাকি ৫ হাজার টাকার উপর। যদি তিনি নির্ধারিত সময়ের ২০ দিন পর আয়কর রিটার্ন জমা দেন, তাহলে তার সুদ গুণতে হবে প্রায় ৬৬ টাকা। এই বাড়তি টাকা তাকে পরিশোধ করতেই হবে। এবার আসা যাক সময় বাড়ানোর আবেদন না করলে কী পরিমাণ জরিমানা গুণতে হবে সেই হিসেবে। বিদ্যমান আয়কর অধ্যাদেশের ১২৪ ধারায় বলা হয়েছে, কোনো করদাতা যদি কোনো কারণ ছাড়াই নির্দিষ্ট সময়ে রিটার্ন দাখিল না করেন, আবার এজন্য অনুমোদনও না নেন, সেজন্য তার পূর্ববর্তী বছর প্রদেয় করের ১০ শতাংশ বা ১ হাজার টাকার মধ্যে যেটি বড় অংক - ওই পরিমাণ অর্থ জরিমানা হবে। সেই সঙ্গে যতদিন দেরি হবে, প্রতিদিনের জন্য ৫০ টাকা হারে বাড়তি মাশুলও গুণতে হবে। এনবিআরের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ইত্তেফাককে বলেন, আলোচ্য সব সুদ, জরিমানাই পরিশোধ করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। তবে জরিমানার অঙ্কের ক্ষেত্রে উপ-কর কমিশনার চাইলে অনুমোদন না নিয়ে দেরি করার জরিমানা আংশিক বা পুরোটা মওকুফ করে দিতে পারবেন।
এবার নতুন পে স্কেল ঘোষণার পর সরকারি কর্মকর্তাদের মূল বেতন ১৬ হাজার টাকার বেশি হলে তাদের আয়কর রিটার্ন দাখিল করা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। যে সব সকরকারি কর্মকর্তা আয়কর রিটার্ন দাখিল না করবেন তারা আগামী জানুয়ারি থেকে বেতনের অর্থ উত্তোলন করতে গিয়ে সমস্যায় পড়বেন বলে এনবিআর সূত্র জানিয়েছে। সূত্র জানিয়েছে, পে স্কেল ঘোষণার আদেশ অনুযায়ী যে সব সরকারি কর্মকর্তার আয়কর রিটার্ন দেওয়ার কথা তা এজি অফিস (হিসাব মহা-নিয়ন্ত্রকের কার্যালয়) পরীক্ষা করবে। এটি নিশ্চিত করতে এনবিআর ইতোমধ্যে এজি অফিসকে আনুষ্ঠানিকভাবে অনুরোধও জানিয়েছে। আগামী জানুয়ারি মাসের বেতন পরিশোধের সময় আয়কর রিটার্ন পরিশোধ করতে হবে। অন্যথায় তারাও বাড়তি অর্থ পরিশোধ করতে হবে।
শেষ সময়ে আয়কর অফিসে ভিড়
এদিকে গতকাল রাজধানীর আয়কর অফিসগুলোতে রিটার্ন দাখিলে করদাতার ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। আয়কর অফিসগুলো করদাতাদের রিটার্ন দাখিলের সুবিধার্থে বিশেষ ব্যবস্থা নিয়েছে। রাজধানীর সেগুনবাগিচায় মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের সামনে দুটি ভবনের নিচতলায় কর অঞ্চল ১, কর অঞ্চল ৭ ও ১১ এর আওতাধীন করদাতাদের রিটার্ন জমা নেওয়া হচ্ছে। আমিনুল ইসলাম নামে একজন করদাতা এই ব্যবস্থা থাকায় সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। ইত্তেফাকের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, এখানেও আয়কর মেলার আমেজ লক্ষ্য করা যাচ্ছে। অতীতে কর অফিসে গিয়ে কিছু বাড়তি অর্থ খরচ করতে হতো। কিন্তু এবার তা করতে হয়নি।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আয়কর অফিসেই আয়কর মেলার মত করদাতাবান্ধব পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে। কেননা আয়কর মেলায় সব করদাতার পক্ষে রিটার্ন দাখিল কার্যত সম্ভব হয় না। ধরা যাক এবার ১৪ লাখ ব্যক্তি রিটার্ন দাখিল করবেন। এর মধ্যে সম্প্রতি অনুষ্ঠিত আয়কর মেলায় দাখিল হয়েছে মাত্র সোয়া দুই লাখ। বাদবাকি রিটার্ন তো আয়কর অফিসেই দাখিল করতে হবে। সে জন্য আয়কর অফিসকে করদাতাবান্ধব করার বিকল্প নেই।
Copyright © 2024 Sunbd24 - Latest News Update About DSE, CSE Stock market.. All rights reserved.