উত্তরাঞ্চলের অর্থনীতি-কর্মসংস্থানের পালে নতুন হাওয়া

প্রকাশ: ২০১৫-১০-২৫ ১৪:৫৬:১৫


Shilpoউত্তারাঞ্চলে শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে না ওঠায় অনেকেই বিনিয়োগে আগ্রহ দেখান না। তৈরি হয় না নতুন উদ্যোক্তা। বেকারের সংখ্যা বাড়ার পাশাপাশি তাই পিছিয়ে পড়ছিলো দেশের উত্তরাঞ্চলের জেলাগুলো। তবে এবার আশার আলো জেগে উঠছে। দেশি-বিদেশি বিনিয়োগের পাশাপাশি গড়ে উঠবে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প প্রতিষ্ঠান। খুলে যাবে কর্মসংস্থানের দুয়ার।

উত্তারাঞ্চলের রাজশাহী ও নাটোর জেলায় গড়ে তোলা হবে অর্থনৈতিক অঞ্চল। এতে আশপাশের জেলার মানুষেরাও কর্মসংস্থানের পাশাপাশি আর্থিকভাবে হবেন স্বাবলম্বী।

বুধবার (২১ অক্টোবর) বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ বেজা’র বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাজশাহী ও নাটোর জেলায় দু’টি অর্থনৈতিক অঞ্চলের অনুমোদন দেন।

সূত্র জানায়, বুধবার বৈঠকে মোট ২৪টি অর্থনৈতিক অঞ্চলের জন্য সুপারিশ করা হয়। প্রতিটি অনুমোদন পায়। এরমধ্যে রাজশাহী ও নাটোরও ছিল। অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে উঠলে এ অঞ্চলের ব্যবসা ও অর্থনীতির ‘রক্ত সঞ্চালন’ শুরু হবে বলে মনে করেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক অর্থনীতিবিদ ড. ইলিয়াস আলী।

তিনি বলেন, অর্থনীতিতে যেমন প্রাণ ফিরে পাবে, ঠিক তেমনি নতুন উদ্যোক্তাও তৈরি হবে। ব্যবসায়ীরা পাবেন বিশেষ কিছু সুবিধা। তৈরি হবে কর্মসংস্থানের বিশাল ক্ষেত্র। দেশীয় কাঁচামাল ভিত্তিক শিল্প গড়ে ওঠার অপার সম্ভবানাও আছে। সবমিলিয়ে এ অঞ্চলের মানুষের জন্য অর্থনৈতিক অঞ্চল আর্শীবাদস্বরূপ।

এদিকে এ বিষয়ে রাজশাহীর বাঘা-চারঘাট আসনের সংসদ সদস্য ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহারিয়ার আলম রাজশাহী ও নাটোর জেলায় অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলা হচ্ছে বলে ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেন। এতে ওই দুই অঞ্চলের বিবরণ তুলে ধরা হয়।

রাজশাহী অর্থনৈতিক অঞ্চল: রাজশাহী জেলার পবা উপজেলার কয়রা, জয়কৃঞ্চপুর, মাড়িয়া, বালানগর ও ভবানীপুর এলাকায় এ অঞ্চল গড়ে উঠবে। মোট জমির পরিমাণ ২০৪ দশমিক ০৬ একর। এরমধ্যে ব্যক্তি মালিকাধীন ২০২ দশমিক ৪০ একর এবং সরকারি খাস জমি এক দশমিক ৬৬ একর।

প্রস্তাবিত স্থান: প্রস্তাবিত অর্থনৈতিক অঞ্চলটি রাজশাহীর হারিয়ান রেল স্টেশন থেকে ১০ কিলোমিটার এবং রাজশাহী বিমানবন্দর থেকে ১০ কিলোমিটার দূরে। স্থানটির সঙ্গে সড়ক, রেল ও প্লেন যোগাযোগের সুবিধা রয়েছে। কাটাখালী বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে প্রায় সাত কি.মি ও গ্যাসলাইন থেকে তিন কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। স্থানটি সিটি করপোরেশন, পৌরসভা ও ক্যান্টনমেন্ট বোর্ডের আওতাভুক্ত নয়। এখানে বছরে এক ফসলের চাষ হয়। ছয় ফুট মাটি ভরাটের প্রয়োজন হবে। কোনো ঘরবাড়ি নেই। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও জনসাধারণের সমর্থন রয়েছে। জমি অধিগ্রহণে সম্ভাব্য ৯৬ কোটি টাকা ব্যয় হতে পারে।

নাটোর অর্থনৈতিক অঞ্চল: নাটোর জেলার লালপুর উপজেলার আরজী, বাকনাই, রসুলপুর, বন্দোবস্ত গোবিন্দপুর, বাকনাই বালিতিতা, লালপুর ও চরজাজিরা এলাকায় নাটোর অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলা হবে। এর জমির পরিমাণ তিন হাজার ২২০ একর।

প্রস্তাবিত স্থান: প্রস্তাবিত জমি পয়স্তি খাস। ঈশ্বরদী-বাঘা-রাজশাহী জাতীয় সড়ক প্রকল্প থেকে পাঁচ কিলোমিটার দূরে। প্রকল্প এলাকা থেকে মূল পদ্মা নদীর দূরত্ব পাঁচ থেকে ছয় কিলোমিটার। ঈশ্বরদী রেলওয়ে জংশনের দূরত্ব ১৫ কিমি। ঈশ্বরদী বিমানবন্দরের দূরত্ব ১০ কিমি। মূল পদ্মা নদীকে নদীবন্দর হিসেবে গড়ে তোলা বা ব্যবহার করা যাবে।

পার্শ্ববর্তী ঈশ্বরদী উপজেলায় গ্যাসলাইন থাকায় গ্যাস সংযোগের সুবিধা পাওয়া যাবে। কৃষিনির্ভর এলাকা হওয়ায় প্রয়োজনীয় কাঁচামালের পর্যাপ্ত সুবিধা পাওয়া যাবে। প্রস্তাবিত স্থানকে বন্যামুক্ত উচ্চতায় উন্নীত করতে আনুমানিক চার থেকে পাঁচ ফুট মাটি ভরাটের প্রয়োজন হবে। স্থানীয় জনপ্রতিনিদের পূর্ণ সমর্থন রয়েছে। সূত্র: বাংলানিউজ

সানবিডি/ঢাকা/এসএস