এসকে সুরের ভোল্টে অভিযান

পেছনের দরজা দিয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ছাড়লেন দুদক কর্মকর্তারা

সানবিডি২৪ প্রতিবেদক প্রকাশ: ২০২৫-০১-২৬ ১৯:৪৭:০২


দিনভর অভিযান শেষে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর এস কে সুরের লকার অসন্ধান করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন দুদক। অনুসন্ধান শেষে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পেছনের দরজা দিয়ে সাংবাদিকদের কিছু না জানিয়েই স্থান ত্যাগ করেছেন কর্মকর্তারা। দিনভর নাটকীয়তা শেষে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক আমজাদ হোসেন সাংবাদিকদের বলেন এ বিষয়ে আমি কিছু জানি না।

এর আগে রোববার সকালে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর এসকে সুরের ব্যক্তিগত লকার খুলতে বাংলাদেশ ব্যাংকে আসে দুর্নীতি দমন কমিশনের ৭ সদস্যের দল। বাংলাদেশ ব্যাংকের সূত্র জানায় সকালেই স্বর্ণকারকে খবর দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। স্বর্ণকার আসলেও তার অবদান সম্পর্কে কিছু জানায়নি কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

লকার খোলার সময় উপস্থিত থাকার জন্য একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটসহ দুদক পরিচালক কাজী মো. সায়েমুজ্জামানের সাথে সাত সদস্যের প্রতিনিধি দল বাংলাদেশ ব্যাংকে উপস্থিত হন।

গত ১৯ জানুয়ারি অভিযান চালিয়ে রাজধানীর ধানমন্ডিতে এস কে সুরের বাসা থেকে ১৬ লাখ ২৫ হাজার টাকা জব্দের সময় তাঁর নামে বাংলাদেশ ব্যাংকে ভল্ট থাকার তথ্য পায় দুদক। পরে সংস্থাটি জানতে পারে, সেটি ভল্ট নয়, কেন্দ্রীয় ব্যাংকে কর্মরত ও অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মূল্যবান সামগ্রী রাখার লকার (সেফ ডিপোজিট)।

এর পর দুদক থেকে বাংলাদেশ ব্যাংককে দেওয়া চিঠিতে লকারের সামগ্রী স্থানান্তর ও হস্তান্তর না করতে বলে। ২১ জানুয়ারি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নিরাপত্তা শাখা থেকে দুদককে ফিরতি চিঠি দিয়ে লকারের সামগ্রী স্থানান্তর স্থগিত করার তথ্য জানায়। চিঠিতে বলা হয়, বাংলাদেশ ব্যাংকের লকারে বিধি অনুযায়ী ব্যাংকে কর্মরত ও অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ব্যক্তিগত মূল্যবান সামগ্রী তাদের নিজ নামে প্যাকেট অথবা কৌটায় নিজ দায়িত্বে সিলগালাযুক্ত অবস্থায় জমার তারিখ থেকে ২০ বছর পর্যন্ত রাখা হয়।

এর পর ২৩ জানুয়ারি বাংলাদেশ ব্যাংক আরেক চিঠিতে জানায়, এস কে সুর তিনটি লকার নম্বরে মূল্যবান সামগ্রী রেখেছেন। এর মধ্যে গত বছর ২৫ সেপ্টেম্বরের এসডি-৪৪/৬১ এবং ২০১৮ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারির এসডি-৪৮/১২ নম্বরের নমিনি করেছেন স্ত্রী সুপর্ণা সুর চৌধুরীকে।

আর ২০১৭ সালের ১২ জুলাইয়ের এসডি-৪৭/৩৫ নম্বরে রাখা সামগ্রীর নমিনি করেছেন মেয়ে নন্দিতা সুর চৌধুরীকে। সামগ্রীগুলোর ধরন চিঠিতে সম্পর্কে বলা হয়, সেগুলো কাপড়ে মোড়ানো গালাযুক্ত কৌটা বা প্যাকেট। তবে ওই তিনটি লকারে কী রেখেছেন এস কে সুর, তা বাংলাদেশ ব্যাংক জানায়নি।

সূত্র জানায়, লকারে রাখা প্যাকেট ও কৌটা সম্পর্কে বাংলাদেশ ব্যাংকের নিরাপত্তা শাখা জানলেও, এর ভেতরে সামগ্রীর বিষয়ে জানে না। বাংলাদেশ ব্যাংকের এ চিঠির পর দুদক সেটি খুলে দেখার জন্য অনুমতি চায়। বাংলাদেশ ব্যাংক বলেছে, লকার খুলতে আদালতের অনুমতি লাগবে। পরে ২২ জানুয়ারি দুদকের উপপরিচালক নাজমুল হুসাইন স্বাক্ষরিত আবেদন ঢাকা মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজের কাছে জমা দেওয়া হয়। পরদিন লকার খোলার অনুমতি দেন আদালত।

এএ