একচল্লিশেও ‘তরুণ’ মিসবাহ

প্রকাশ: ২০১৫-১০-২৫ ১৮:২০:১৮


Misbah.1৩৫ বছর পেরিয়ে যাওয়ার পর অধিকাংশ ক্রিকেটাররাই নিজের অবসর নিয়ে ভাবনা শুরু করেন। অথচ মিসবাহ-উল-হক ৪১ বচর বয়সেও যেন চির-তরুণ। দিব্যি শুধু খেলছেন না, পাকিস্তানকে সামনে থেকে নেতৃত্বও দিচ্ছেন তিনি। আধুনিক ক্রিকেটে মিসবাহ বোধ হয় একমাত্র ক্রিকেটার যার বয়স ৪০ পেরুনোর পরও তাকে পারফরম্যান্স নিয়ে কোনো সমালোচনার মুখে পড়তে হচ্ছে না।

৪০ বছর বয়স পেরুনোর পর শুধু খেলছেন না, একের পর এক সেঞ্চুরি করে যাচ্ছেন মিসবাহ-উল-হক। ৪০ এর পর এই নিয়ে চারটি সেঞ্চুরি করলেন পাকিস্তান অধিনায়ক। সর্বশেষটি ইংল্যান্ডের বিপক্ষে দুবাই টেস্টের প্রথম ইনিংসে। রোববার টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসেও সেঞ্চুরির পথে ছিলেন এই বর্ষীয়ান ক্রিকেটার। তবে অ্যান্ডারসনের বলে মিড-অফে অ্যালেস্টার কুকের হাতে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফেরেন তিনি।

মিসবাহর বুড়ো হাঁড়ের ভেলকি দেখানো শুরু হয়েছে গত বছরের অক্টোবরে। সেবার শক্তিশালী অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সংযুক্ত আরব আমিরাতে টানা তিনটি সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছেন তিনি। এর মধ্যে ৫৬ বলে সেঞ্চুরি করে করে ভিভ রিচার্ডসনের দ্রুততম টেস্ট সেঞ্চুরির রেকর্ডে ভাগ বসান তিনি। ওয়ানডে ক্রিকেটে ধীরস্থির ব্যাটিংয়ের জন্য ‘টুক-টুক’ উপাধি পাওয়া এই পাকিস্তানি অধিনায়ক টেস্ট ক্রিকেটে ছক্কা হাঁকিয়ে যাচ্ছেন অবলীলায়। পাকিস্তানের হয়ে টেস্ট ক্রিকেটে সর্বাধিক ৬৪টি ছক্কার মালিক তিনি।

বয়স যে নিতান্ত একটি সংখ্যা নিজের পারফরম্যান্স দিয়ে সেটি বুঝিয়ে দিচ্ছেন মিসবাহ-উল-হক। ইংল্যান্ড সিরিজের পর নিজের টেস্ট ক্যারিয়ারের ভবিষ্যত নিয়ে সিদ্ধান্ত নিবেন বলে জানিয়েছে ২০১৫ বিশ্বকাপ শেষে ওয়ানডে ক্রিকেটকে বিদায় জানানো এই ক্রিকেটার। তবে বর্তমান যেই পারফরম্যান্স তাতে করে আরো দু’এক বছর তিনি অবলীলায় খেলে যেতে পারবেন বলেই মনে হচ্ছে।

ইতোমধ্যেই নিজেকে পাকিস্তানের সর্বকালের সেরা টেস্ট অধিনায়ক হিসেবে প্রমাণ করেছেন মিসবাহ-উল-হক। ২০১০ সালে ম্যাচ ফিক্সিংয়ের ঘটনায় পাকিস্তান ক্রিকেট টালমাটাল হওয়ার পর টেস্ট দলের অধিনায়কত্ব পান মিসবাহ-উল-হক। এরপর পাকিস্তান দলকে স্বল্প সময়ের মধ্যে এক সূঁতোয় বাঁধেন তিনি।

মিসবাহ-উল-হকের নেত্বত্বে ২০১২ সালে পাকিস্তান দল ইংল্যান্ডকে ৩-০ তে টেস্ট সিরিজে হোয়াইটশ করে। এরপর গত বছর অস্ট্রেলিয়াকে মাটিতে নামিয়ে আনে মিসবাহর দল। টেস্ট সিরিজে প্রতাপশালী অস্ট্রেলিয়াকে ২-০ তে হোয়াইটওয়াশ করে পাক শিবির। এছাড়া চলতি বছরের জুন-জুলাইয়ে শ্রীলংকাকে তাদেরই মাটিতে টেস্ট সিরিজে ২-১ ব্যবধান পরাজিত করে দেশে ফিরেছিল মিসবাহর পাকিস্তান।

পাকিস্তানি অধিনায়কদের মধ্যে সর্বাধিক ১৪ টেস্ট জয় নিয়ে সবার ওপরে থাকা জাভেদ মিয়াঁদাদ ও ইমরান খানকে গত বছরই ছাড়িয়ে যান মিসবাহ-উল-হক। এবার নিজেকে ছাড়িয়ে যাওয়ার প্রতিযোগিতায় নেমেছেন এই বর্ষীয়ান ক্রিকেটার। আপাতত ১৮টি টেস্ট জয় নিয়ে পাকিস্তানি অধিনায়কদের মধ্যে সবার ওপরে রয়েছেন তিনি। আগামী দিনগুলোতে এই সংখ্যাকে আরো বাড়িয়ে নেয়ার সুযোগ পাবেন মিসবাহ।

সানবিডি/ঢাকা/এসএস