১ জানুয়ারি শুরু হচ্ছে ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার (ডিআইটিএফ) ২২তম আসর। এবারের মেলায় দৃষ্টিনন্দন প্যাভিলিয়ন নির্মাণে চমক সৃষ্টি করতে যাচ্ছে দেশের ইলেকট্রনিক্স জায়ান্ট ওয়ালটন। বিশাল জায়গা নিয়ে তৈরি হয়েছে অপূর্ব স্থাপত্য শৈলীর দৃষ্টিনন্দন তিনতলা মেগা প্রিমিয়ার প্যাভিলিয়ন। যেখানে থাকছে সেলফি প্রেমীদের জন্য বিশেষ কর্নার, ট্রান্সপারেন্ট ডিসপ্লেসহ অনেক চমক।
কর্তৃপক্ষের অনুমতিসাপেক্ষে দুটি প্রিমিয়ার প্যাভিলিয়ন (২৬ ও ২৭) একত্রিত করে তৈরি হচ্ছে একটি মেগা প্যাভিলিয়ন। ওয়ালটনের ইন্টেরিয়র ডিজাইন বিভাগের এ্যাসিস্ট্যান্ট জেনারেল ম্যানেজার শাদী মোহাম্মদ রুম্মান জানান, ১৫ হাজার বর্গফুট আয়তনের বিশাল দৃষ্টিনন্দন প্যাভিলিয়ন হচ্ছে তাদের। প্রতিটি ফ্লোরে স্পেস রয়েছে ৫ হাজার বর্গফুট। চারপাশে থাকবে ফুল-সবুজের সমারোহ।
তিনি আরো জানান, মোবাইলে সেলফি একটি নতুন ট্রেন্ড। এর প্রতি কম বেশি সবাই আকর্ষণ বোধ করে। বিষয়টি মাথায় রেখে ওয়ালটন স্পেশাল সেলফি কর্নারের ব্যবস্থা রেখেছে। ক্রেতা-দর্শণার্থীদের সুবিধার্থে থাকছে অত্যাধুনিক সুপরিসর লিফট। একসঙ্গে যাতে অনেক দর্শক ঢুকতে এবং বের হতে পারে সেজন্য রয়েছে ১৬ ফুটের মূল ফটক। বিভিন্ন ফ্লোরে যাতায়াতের জন্য লিফটের পাশাপাশি থাকবে ৭ ফুট চওড়া সিঁড়ি। শারীরিকভাবে অসুস্থ বা প্রতিবন্ধী ক্রেতা-দর্শণার্থীরা যাতে সহজে ওয়ালটন প্যাভিলিয়নে প্রবেশ করতে পারে সেজন্য র্যাম্প সিঁড়ির (ধাপ বিহীন) ব্যবস্থা রাখা হচ্ছে।
মেলায় ওয়ালটন প্যাভিলিয়নে সবচেয়ে উপভোগ্য হবে ট্রান্সপারেন্ট ডিসপ্লে। এ বিষয়ে ওয়ালটনের ব্র্যান্ড ডেভলপমেন্ট বিভাগের প্রধান কাফি আমান বলেন, ওয়ালটনের বিভিন্ন পণ্যের উৎপাদন প্রক্রিয়ায় ব্যবহৃত প্রযুক্তি, খুচরা যন্ত্রাংশ এবং পণ্যের বিশেষ ফিচার সম্পর্কে অবহিত করতে স্থাপন করা হচ্ছে ৪৬ ইঞ্চির ট্রান্সপারেন্ট ডিসপ্লে।
ওয়ালটনের ইন্টেরিয়র ডিজাইন বিভাগের সিনিয়র ডেপুটি ডিরেক্টর স্থপতি রিনা চৌধূরী জানান, নিরাপত্তার বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে শক্ত স্টিলের কাঠামোর ওপর করা হয়েছে প্যাভিলিয়নের পুরো স্থাপনা। ইন্টেরিয়র ডেকোরেশনে ব্যবহার করা হচ্ছে ফায়ার রেসিস্ট্যান্ট এসিপি (এ্যালুমিনিয়াম কম্পোজিট প্যানেল) বোর্ড, গ্লাস এবং স্টিলের ফ্রেম। থাকবে পর্যাপ্ত পরিমাণে অগ্নি নির্বাপক যন্ত্র।
তিনি আরো জানান, প্যাভিলিয়ন নির্মাণে গ্রিন টেকনোলজি ব্যবহার করা হয়েছে। মেলার পর এসব ম্যাটেরিয়ালস দীর্ঘস্থায়ী কাঠামো নির্মাণেও কাজে লাগবে। স্টিল ও এসিপি বোর্ডগুলোর ৯০ শতাংশই পরবর্তীতে ব্যবহারযোগ্য। ব্যবহৃত বোর্ড এবং স্টিলগুলোর ফায়ার রেসিস্ট্যান্ট ক্ষমতা কমপক্ষে ৯০ মিনিট।
ওয়ালটনের পিআর এন্ড মিডিয়া বিভাগের নির্বাহী পরিচালক মো. হুমায়ুন কবীর বলেন, ‘প্রযুক্তি পণ্য উৎপাদনে ওয়ালটনের আকাশ ছোঁয়ার আকাঙ্খার সঙ্গে মিল রেখে তৈরি হয়েছে প্যাভিলিয়নটি। ইলেকট্রনিক্স পণ্য উৎপাদন ও বিক্রিতে যেমন ওয়ালটন শীর্ষে, তেমনি প্যাভিলিয়ন নির্মাণ শৈলীতেও আমরাই সেরা। যার বিগত বছরগুলোর মেলাতে প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছে ওয়ালটন।
ওয়ালটন প্যাভিলিয়নে প্রদর্শন ও বিক্রি হবে তাদের নিজেদের ব্র্যান্ডের রেফ্রিজারেটর, ফ্রিজার, এলইডি টেলিভিশন, এয়ার কন্ডিশনার, ওয়াশিং মেশিন, ইলেকট্রিক ও মাইক্রোওয়েব ওভেন, ইন্ডাকশন কুকার, ব্লেন্ডারসহ ৪’শতাধিক মডেলের বিশ্বমান সম্পন্ন ইলেকট্রনিক্স হোম এ্যাপ্লায়েন্সেস। থাকছে এলইডি বাল্ব, সুইচ, সকেট, রিচার্জেবল ব্যাটারি, জেনারেটরসহ আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন ইলেকট্রিক্যাল এ্যাপ্লায়েন্সেস। আরো থাকছে সর্বাধুনিক ফিচার সম্বলিত ওয়ালটন ব্র্যান্ডের আকর্ষণীয় ডিজাইনের ল্যাপটপ ও এন্ড্রয়েড স্মার্টফোন।
ইপিবি সূত্রে জানা গেছে, গত বছর মেলায় সেরা প্যাভিলিয়ন এবং শীর্ষ ভ্যাটদাতার পুরষ্কার জিতেছিল ওয়ালটন। সেবার ২১টি দেশ অংশগ্রহণ করলেও এবার অংশ নিচ্ছে ২৫টি দেশ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্জন হলের আদলে তৈরি হচ্ছে মেলার প্রবেশপথ। আগামি ১ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মেলা উদ্বোধন করবেন।
মেলার সার্বিক প্রস্তুতি প্রসঙ্গে ইপিবির উপ-পরিচালক ও ২২তম ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার সদস্য সচিব মোহাম্মদ রেজাউল করিম বলেন, ‘রাস্তাঘাট নির্মাণসহ বেশিরভাগ কাজ শেষ পর্যায়ে রয়েছে। আশা করছি, নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হবে।’
সানবিডি/ঢাকা/এসএস