প্রেমিককে বিয়ে করতে ব্যাকুল প্রেমিকা। একই সঙ্গে ভাবী শ্বশুরবাড়ির কাছে নিজেকে প্রমাণ করার আগ্রহ। এই দুই আকাঙ্ক্ষার মারণ চাপে স্বেচ্ছায় দেহ ব্যবসায় নামেন রাজস্থানের এক নারী। যৌনতা, ব্ল্যাকমেলিং ও স্বাভাবিক জীবনের কামনা- সবে মিলে তার গল্প ফিল্মের চিত্রনাট্যের থেকে কম নয়। রাজস্থান পুলিশের স্পেশাল অপারেশন গ্রুপ ওই পতিতাবৃত্তির ঘটনা ফাঁস করেছে।
২৬ বছরের মেয়েটির জন্ম হংকংয়ে, থাকতেন ভারতের পঞ্জাবের ফরিদকোটে দাদা-দাদির সঙ্গে। ২০১২ সালে একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে বিবিএ পড়ার সময় তার সঙ্গে আলাপ হয় ওই বিশ্ববিদ্যালয়েরই এমবিএ ছাত্র রোহিত শর্মার। এরপর সেটা গড়ায় সম্পর্কে।
কোর্স শেষ হওয়ার পর বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নেন তারা। কিন্তু দু’জনের কেউই আয়-রোজগার না করার রোহিতের পরিবার বিয়েতে আপত্তি করে। পুলিশকে মেয়েটি জানিয়েছেন, প্রেমিকের মায়ের প্রত্যাখ্যানে ক্ষুব্ধ হয়ে তিনি সহজে টাকা রোজগারের রাস্তা খুঁজতে থাকেন। ২০১৩ সালে তার সঙ্গে আলাপ হয় এক মধুচক্রের পান্ডা অক্ষত শর্মার। মাসে ১২,০০০ টাকার বিনিময়ে তাকে নিয়োগ দেন তিনি। সেখানেই তার আলাপ মধুচক্রের অন্য সদস্যদের সঙ্গে।
চক্রের বাকিরা সহজেই বুঝতে পারে, এই মেয়েটি টাকা রোজগারে মরিয়া। ২০১৪ সালে তারা তাকে শহরের এক আবাসন নির্মাণকারীর কাছে নিয়ে যায়। পরে তারা ওই নির্মাণকারীকে ব্ল্যাকমেল করে, বলে ১.২০ কোটি টাকা না দিলে তার বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ করা হবে। এভাবেই দেহ ব্যবসার পাশাপাশি ব্ল্যাকমেলিংয়ে হাত পাকান ওই নারী। প্রথম অ্যাসাইনমেন্টে তার জোটে ৩০ লাখ টাকা।
তারপর থেকেই ওই চক্রের সদস্যরা সফট টার্গেট খুঁজে তার হাতে তুলে দিত। কখনও সেই টার্গেট ডাক্তার, কখনও ইঞ্জিনিয়ার আবার কখনও আবাসন নির্মাণকারী। মোট কথা তার আর টাকার অভাব হয়নি। এরই মধ্যে ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে পছন্দের মানুষের সঙ্গে তার বিয়ে হয়ে যায়। ততদিনে ১ কোটির ওপর রোজগার করে ফেলেছেন তিনি, ব্ল্যাকমেল করেছেন অন্তত ৬ জনকে।
তবে বিয়ের পরই মধুচক্রের সঙ্গ ছাড়েন ওই নারী। তখন তিনি চেয়েছিলেন সুস্থভাবে সংসার করতে। তার স্বামীও এত কিছু সম্পর্কে কিছুই জানতেন না।
দেহ ব্যবসা আর ব্ল্যাকমেলিংয়ে রোজগার করা লাখ লাখ টাকা খরচ খরচ করলেন কীসে? মেয়েটি জানিয়েছেন, তার শখ ছিল রোহিতের জন্য দামী উপহার কেনা, তা সে পারফিউমই হোক বা গহনা। রোহিতের পরিবারের কাছে তার প্রমাণ করার ছিল, তিনি তাদের ছেলের থেকে বেশি রোজগার করতে পারেন। তাই তার এই অন্ধকার পথে হাঁটা। সূত্র: এবিপি আনন্দ।