আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘নির্বাচন কমিশন (ইসি) পুনর্গঠনের বিষয়ে রাষ্ট্রপতির সিদ্ধান্তের ওপর আমাদের পূর্ণ আস্থা আছে। তিনি যে সিদ্ধান্ত নেবেন, তা আমাদের বিরুদ্ধে গেলেও মেনে নেব।’
বুধবার সন্ধ্যায় ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন ওবায়দুল কাদের।
ইসি পুনর্গঠনের বিষয়ে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে আওয়ামী লীগের সংলাপের বিষয়ে জানাতে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
বুধবার বিকেলে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দলের ১৯ সদস্যের প্রতিনিধিদল বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের সঙ্গে সংলাপ করে।
নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠনের বিষয়ে রাষ্ট্রপতির কাছে আওয়ামী লীগ যেসব প্রস্তাব দিয়েছে, তা সংবাদ সম্মেলনে তুলে ধরেন ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধান ও দেশে বিদ্যমান সব আইন-কানুনের ওপর শ্রদ্ধাশীল। রাষ্ট্রপতির সুদীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনের সুগভীর প্রজ্ঞা ও সুবিবেচনার প্রতি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের পরিপূর্ণ আস্থা ও বিশ্বাস আছে। নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠনে মহামান্য রাষ্ট্রপতি কর্তৃক গৃহীত যেকোনো ন্যায়সঙ্গত উদ্যোগের প্রতি আওয়ামী লীগের পূর্ণ সমর্থন থাকবে।
রাষ্ট্রপতির সিদ্ধান্ত অন্যান্য দলগুলো মেনে নেবে, এ আশা ব্যক্ত করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, আমরা দৃঢ় আশাবাদী, তবে এই মুহূর্তে বলতে পারছি না, সালিশ মানি কিন্তু তালগাছটা আমার- এরকম কোনো মানসিকতা নিয়ে অন্য কেউ বসে আছে কি না?
অপর এক প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, আমরা রাষ্ট্রপতিকে আমাদের দলের পক্ষে প্রস্তাব দিয়েছি। এগুলো সিদ্ধান্ত নয়। ইসির ব্যাপারে সব সাংবিধানিক এখতিয়ার রাষ্ট্রপতির। তিনিই সিদ্ধান্ত নেবেন। মহামান্য রাষ্ট্রপতি ইসি গঠনে যে সিদ্ধান্ত নেবেন সেভাবেই ইসি গঠন হবে।
নতুন ইসি গঠনের বিষয়ে মতামত নিতে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ গত ১৮ ডিসেম্বর থেকে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ শুরু করেন। প্রথমে তিনি বিএনপির সঙ্গে সংলাপ করেন। পরে ধারাবাহিকভাবে নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধিত ২২টি দলের সঙ্গে পৃথকভাবে সংলাপ করেন রাষ্ট্রপতি।
রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সংলাপে আওয়ামী লীগের প্রতিনিধিদলে ছিলেন- সভাপতি শেখ হাসিনা, সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আবুল মাল আবদুল মুহিত, আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ, সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত, এইচ টি ইমাম, মো. জমির, ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মতিয়া চৌধুরী, অ্যাডভোকেট সাহারা খাতুন, মোহাম্মদ নাসিম, সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ডা. দীপু মনি, জাহাঙ্গীর কবির নানক, আইনবিষয়ক সম্পাদক আব্দুল মতিন খসরু, আনিসুল হক, প্রচার সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ এবং দপ্তর সম্পাদক ড. আবদুস সোবহান গোলাপ।
এর আগে ইসি গঠনের বিষয়ে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সংলাপে আওয়ামী লীগের প্রস্তাব ও সুপারিশমালা তৈরি করতে দলটির পক্ষ থেকে ১০ সদস্যের একটি কমিটি করা হয়। প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচ টি ইমামের নেতৃত্বে কমিটির সদস্যরা কয়েক দফা বৈঠক করে এ সংক্রান্ত প্রস্তাবমালা তৈরি করেন।
আগামী ফেব্রুয়ারি মাসে বর্তমান ইসির মেয়াদ শেষ হচ্ছে। নতুন ইসি গঠনে প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি প্রয়াত জিল্লুর রহমানের মতো বর্তমান রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদও রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ করলেন।