ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে ব্রিটেনের বেরিয়ে যাওয়া এবং নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের গদিতে বসাকে কেন্দ্র করে মার্কিন নীতি নিয়ে যে অস্থিরতা কাজ করছে, তাতে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে নিরাপদ বিনিয়োগের একটা তাড়া লেগেছে। ফলে স্বর্ণের বাজার দিন দিন ফুলছে। আন্তর্জাতিক বাজারে আজ সোমবারও পণ্যটির দর আরেক দফা বেড়েছে।
রয়টার্সের খবরে বলা হয়, এদিন স্পট গোল্ড বিক্রি হয় ০.৫ শতাংশ বেড়ে আউন্সে (এক আউন্স=২.৪৩ ভরি) ১ হাজার ২০৩ ডলার। আর ইউএস গোল্ড ০.৬ শতাংশ দর বেড়ে বিক্রি হয় ১ হাজার ২০৩ ডলারে।
আন্তর্জাতিক বাজারে স্বর্ণের দরের উত্থান-পতন হলে বাংলাদেশের বাজারেও দর উঠানামা হয়। স্বর্ণের দর নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাজুস নতুন দর ঠিক করে। এ হিসেবে আন্তর্জাতিক বাজারে দর বাড়লে শিগগির দেশের বাজারে আরও এক দফা দর বাড়তে পারে।এ নিয়ে টানা ৭ সপ্তাহ পণ্যটির দর উর্ধ্বমুখী প্রবণতায় সময় পার করছে।
গত শুক্রবার বাজুস সর্বশেষ দর ঠিক করে। নতুন দর অনুযায়ী, আজ সোমবার সবচেয়ে ভালো মানের অর্থাৎ ২২ ক্যারেটের স্বর্ণ বিক্রি হচ্ছে প্রতি ভরি (১১ দশমিক ৬৬৪ গ্রাম) ৪৬ হাজার ৭৩ টাকা। গত বছরের ৭ ডিসেম্বর থেকে ১৩ জানুয়ারি পর্যন্ত এ মানের স্বর্ণের ভরিপ্রতি বিক্রয়মূল্য ছিল ৪৪ হাজার ৭৯০ টাকা।
২১ ক্যারেটের স্বর্ণ প্রতি ভরি ৪২ হাজার ৬৯০ টাকা থেকে এক হাজার ৩৪২ টাকা বাড়িয়ে ৪৪ হাজার ৩২ টাকা নির্ধারণ করা হয়। এছাড়া ১৮ ক্যারেটের স্বর্ণ এক হাজার ৪৫৮ টাকা বেড়ে ভরিপ্রতি বিক্রি হচ্ছে ৩৮ হাজার ৪৯১ টাকা দরে।
অন্যদিকে, সনাতন স্বর্ণ ভরিপ্রতি ২৪ হাজার ২৮ টাকার থেকে এক হাজার ৫০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ২৫ হাজার ৭৮ টাকায়।
ব্রায়ান ল্যান নামে এক স্বর্ণ বাজার বিশ্লেষক জানান, বিনিয়োগে অনিশ্চয়তাই মূলত বিনিয়োগকারীদের কপালে ভাজ ফেলে দিচ্ছে। যে কারণে তারা নিরাপদ বিনিয়োগ পণ্য নামে পরিচিত স্বর্ণবাজারের দিকে ছুটছে। ফলে দাম বাড়ছে।
আগামী মাসের শেষের দিকে উদযাপিত হতে যাচ্ছে চীনা নববর্ষ। নববর্ষের বাজারেও স্বর্ণের চাহিদা বেড়ে যাবে।
তিনি বলেন, বিনিয়োগকারীরা এও মনে করছে নববর্ষকে সামনে রেখে বিশেষ করে চীনে স্বর্ণের বড় চাহিদা তৈরি হবে। এ সময়ে আরও ভালো দামে পণ্যটি বিক্রি হবে।
এই বিশ্লেষক মনে করেন, স্বর্ণের বাজার এখন ১ হাজার ২০৫ ডলারের স্বাদ নিচ্ছে। এটি এবার ১ হাজার ২২০ ডলার অতিক্রম করতে পারে।
এর আগে ডোনাল্ড ট্রাম্প তার নির্বাচনী ইশতেহারে কর কমানোসহ যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন অবকাঠামো খাতে ব্যয়ের ঘোষণা দেন। যা মার্কিন বাজারকে ফুলে উঠায়। আগের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে নতুন রেকর্ড তৈরি করে যুক্তরাষ্ট্রের বাজার। কিন্তু তার এই ইশতেহারে অনেক বিনিয়োগকারীদের জন্য হতাশা হয়ে দাঁড়ায়।
ক্ষমতায় এসে তিনি অর্থনৈতিক পলিসিতে কী ধরনের পবিরর্তন আনছেন তার দিকেই এখন চেয়ে আছে তারা।
এদিকে, ভি হারেশ নামের আরেক বিশ্লেষক জানান, স্বর্ণের দাম বাড়তে পারে, তবে তা ১৩০০ ডলারের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে। এটা ১৪০০ ডলারে যাবে না।