ফাগুন-ভ্যালেন্টাইন ডের পোশাক
প্রকাশ: ২০১৭-০২-০৪ ১৬:৪৬:১৮
শীত বিদায়ের পালা। যাচ্ছি যচ্ছি করছে শীত। তবে রাতের শেষে ও সকালের দিকে ঠাণ্ডার হিমেল পরশ শীতের উপস্থিতি জানান দেয়। কিন্তু যত যাই হোক, বসন্তের উপস্থিতি বলে কথা। আর কদিন পরই বসন্ত উপস্থিত হবে রঙিন প্রকৃতি নিয়ে। ফুলেল উৎসবে মেতে উঠবে প্রকৃতি। প্রকৃতির মতো মানুষের মনেও ছড়িয়ে পড়বে বসন্তের রঙের ছটা। আর তাই বসন্তের প্রথম দিনকে ঘিরেই যত ভাবনা। তবে বাঙালির বসন্তের আমেজ নতুন নয়। সেকাল থেকে একাল, স্বগৌরবে বসন্তের রঙে সেজে উঠতে চায় বাঙালি মন।
আসলে কয়েক দশক আগেও ফাগুন উৎসবের চিত্র ছিল ভিন্ন। আর বর্তমানে ফাগুন আর ভ্যালেন্টাইন ডে মিলেমিশে একাকার। পাশ্চাত্যের এই বিশেষ দিবসকে ঘিরেও চলে তারুণ্যের নানা আয়োজন। পয়লা ফাল্গুনের ঠিক পরের দিনটিই ভ্যালেন্টাইন ডে হওয়ার কারণে যেন দুই দিনের উৎসবে মাতে সারাদেশ।
যেহেতু বসন্ত মানেই রঙের বাহার, তাই বসন্তের পোশাকেও রয়েছে রঙের সমাহার। আর বাঙালিয়ানা মানেই শাড়ি। তাই তো শাড়িতেই সেজে উঠতে চান রমণীরা। তবে শাড়ির পাশাপাশি সালোয়ার-কামিজ, ফতুয়ার ফ্যাশনও কম যায় না। আর ছেলেদের পাঞ্জাবির সঙ্গে ফতুয়া বা ওয়েস্টার্ন আউটফিটেরও চল বর্তমানে একটু বেশি।
সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে দেশিয় ফ্যাশন হাউসগুলো সব সময়ই তাদের পোশাকের ঢং আর ডিজাইনে নিয়ে আসে পরিবর্তন ও নতুনত্ব। এবারও তারা তৈরি করেছে নানা রঙের বসন্তের পোশাক। বেশিরভাগ ফ্যাশন হাউজই বসন্তের পোশাকে উজ্জ্বল রংকে প্রাধান্য দেয়। আর এসব আয়োজনে থাকে বাহারি রঙের শাড়ি, পাঞ্জাবি, ফতুয়া, থ্রিপিস, টি-শার্ট, শার্ট ইত্যাদি। সব ধরনের পোশাকেই রয়েছে বসন্তের ছোঁয়া। পোশাকের মধ্যে বসন্ত এসে যেন নিজে স্পর্শ করেছে।
বসন্তকে ঘিরে পোশাকগুলোতে কাজ করা হয়েছে ব্লক, টাইডাই, স্প্রে ব্লক, চুনরি, স্ক্রিনপ্রিন্ট, কারচুপি ইত্যাদি। পোশাকে তুলে ধরা হয়েছে তারুণ্যের রুচিবোধের কথা। বাসন্তী বা হলুদকে ফাল্গুনের রং মনে করা হয়। তবে বর্তমানে আর সেই ধারা নেই। এখন বাসন্তী ও হলুদ রঙের সঙ্গে কমলা, লাল এবং নতুন পাতার সবুজ রংকেও বসন্তের রং ধরা হয়।
তবে বসন্ত উৎসবে একরাঙা শাড়িই বেছে নেন তরুণীরা। তাই বরাবরই ব্লাউজেও থাকে বাহারি রঙের ছোঁয়া। আর এর সঙ্গে যোগ হয়েছে নিত্যনতুন ডিজাইন। বর্তমানে সামান্য উঁচু গলার ব্লাউজ যেকোনো শাড়িতে মানিয়ে যায়। তা ছাড়া স্লিভলেস ট্রেন্ড এখন সব তরুণীর পছন্দের। বসন্তকে কেন্দ্র করে দেদার বিক্রি হচ্ছে বাসন্তী, গেরুয়া, লাল রঙের শাড়ি। এবারের বসন্ত রঙিন হয়ে উঠবে টাঙ্গাইলের নানা রঙের শাড়িতে।
অল্পবয়সীরা টাঙ্গাইলের ব্লক বা স্প্রে করা শাড়ি পরবেন। সঙ্গে খোঁপায় গুঁজে দিতে পারো পমপম, জারবারা বা লাল গাঁদা ফুল। আবার যারা অফিস করবেন তারা পরতে পারেন চিকন পাড়ের তাঁতের শাড়ি। উৎসবের আমেজ চাইলে রংচঙে ব্লাউজ বেছে নিন। গলায় পরবেন কাঠ-পুঁতি দিয়ে তৈরি মালা। এমনই উজ্জ্বল রঙে সেজে উঠতে পারেন আপনিও। চুলে গাঁদা ফুল। হালকা সাজ। সঙ্গে একটা ছোট্ট টিপ পরে ফেলুন। ব্যস, অফিসের গাম্ভীর্যও নষ্ট হবে না আবার কাজের মধ্যেই নিমন্ত্রণ জানাতে পারবেন ঋতুরাজকে। যারা শাড়ি পরতে অভ্যস্ত নন, তারা পরতে পারেন সালোয়ার-কামিজ বা ফতুয়া। আর এতেই পাল্টে যাবে আপনার লুক। আপনিও তখন সেজে উঠবেন ঋতুরাজ বসন্তের ঢঙে।
দেশীয় ফ্যাশন হাউসগুলো প্রতি বছরই বসন্তের রঙিন পোশাকের পসরা সাজায়। এ বছরও নানা রং, ডিজাইন আর মোটিফ নিয়ে বৈচিত্র্যময় পোশাকের আয়োজন করেছে হাউসগুলো। বিশ্ব রঙ, ইনফিনিটি, আড়ং, অঞ্জন’স, রঙ, বিবিয়ানা, কে-ক্রাফট, টাস্ট মার্ট, বাংলার মেলা, দেশাল ও নিপুণে পেয়ে যাবেন পছন্দের ফাল্গুনের পোশাক। এ ছাড়া বসুন্ধরা শপিং মল, যমুনা ফিউচার পার্ক, কর্ণফুলী গার্ডেন সিটি, মৌচাক মার্কেট, ফরচুন শপিং মল এবং নিউমার্কেট ও গাউসিয়া, উত্তরার বিভিন্ন মার্কেট থেকে বেছে নিতে পারেন বাসন্তী পোশাক।