ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ফলিত পদার্থ ইলেকট্রনিক্স অ্যান্ড কমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের র্যাগিংয়ের নামে নির্যাতন করেছে ওই বিভাগের শিক্ষার্থীরা। র্যাগিংয়ের সাথে জড়িত এসব শিক্ষার্থীদের শস্তি না দিয়ে তাদেরকে বাঁচাতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন প্রক্টর অধ্যাপক ড. মাহবুবর রহমান। নির্যাতিত ওই ছাত্রীকে এটা নিয়ে বাড়াবাড়ী করতেও নিষেধ করেছে বলে জানাগেছে।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, গত বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে বারোটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ফলিত পদার্থ ইলেকট্রনিক্স অ্যান্ড কমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ৩১৯ নং কক্ষে ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীরা ক্লাস করতে যায়। এসময় একই বিভাগের ২০১৪-১৫ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী রিসালাত হাসান মেরিন, ২০১৫-১৬ বর্ষের জাকির হোসেন, আশিক চন্দ্র দাসসহ ৫-৬জন শিক্ষার্র্থীরা ওই ক্লাস রুমে প্রবেশ করে। রুমে প্রবেশ করে তারা নবীন শিক্ষার্থীদের র্যাগ দেওয়ার নাম করে শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন ভাবে নির্যাতন শুরু করে। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, ‘বড় ভাইরা আমাদের শার্ট খুলে ফেলতে বলে। এতে আমরা অপরাগতা প্রকাশ করলে আমাদেরকে অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ এবং কান ধরে দাড়িয়ে থাকতে বলা হয়।’ এছাড়াও তাদের বিরুদ্ধে ছাত্রীদের র্যাগিং এর নাম করে যৌন হয়রানির অভিযোগ উঠে।
একই দিনে বিকাল তিনটায় উক্ত বিভাগের এক ছাত্রীকে ফোন দিয়ে সাদ্দাম হলের সামনে আসতে বলে। এতে সে অপরাগতা প্রকাশ করলে তাকে নানান ভাবে চাপ দিতে থাকে। এসময় ওই ছাত্রী বাধ্য হয়ে তাদের খালেদা জিয়া হলের সামনে আসতে বলে এবং কোনো বান্ধবীদরে নিয়ে আসতে বলে। খালেদা জিয়ার হলের সামনে আসলে ৫-৬জন ছাত্রীকে ঘিরে ফেলে এবং বিভিন্ন ভাবে কটুক্তি করে। পরে সেখানে উপস্থিত অন্য শিক্ষার্থীরা তাকে উদ্ধার করে। জানা যায় জাকির, মেরিন, আশিকসহ ওই দিন র্যাগিংয়ের সাথে জড়িত সবাই ফলিত পদার্থ ইলেকট্রনিক্স অ্যান্ড কমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী এবং সাদ্দাম হোসেন হল শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক কামরুজ্জামান খাঁন সাগরের অনুসারী।
এদিকে বিষয়টি ক্যম্পাসে জানাজানি হলে তোলপাড়ের সৃষ্টি হয়। শনিবার বেলা দেড়টার দিকে প্রক্টর অধ্যাপক ড. মাহবুবর রহমান ওই ছাত্রীকে প্রক্টর অফিসে ডেকে পাঠান। এসময় প্রক্টর উল্টো ওই ছাত্রীকে বিষয়টি নিয়ে বাড়াবাড়ি করতে নিষেধ করেন। এদিকে প্রক্টরের এই বক্তব্যে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে ওই ছাত্রী ও প্রক্টর অফিসে উপস্থিত অন্যন্য শিক্ষার্থীরা। তাদের অভিযোগ,‘ কামরুজ্জামান সাগরের অনুসারীদের বাঁচানোর জন্য তিনি এ পন্থা অবলম্বন করেছেন।’
এ নিয়ে প্রক্টর অধ্যাপক ড. মাহবুবর রহমানের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন ধরেননি।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. হারুন উর রশিদ আশকারী বলেন, ‘আমি সংশ্লিষ্ট বিভাগীয় সভাপতির সাথে কথা বলে ঘটনার সাথে জড়িত শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে তদন্ত করে শোকজ করার ব্যাবস্থা গ্রহণ করব।’
সানবিডি/ইবি/তারিক/এসএস/জেইএচ