সেলফি নেশায় আসক্ত এখন অনেকেই। একটু ভাল ব্যাকগ্রাউন্ড, ভাল জায়গা পেলে বা বিভিন্ন মেলা কিংবা কোন অনুষ্ঠানে গেলে অনেকেই ব্যস্ত হয়ে পড়েন সেলফি তুলতে। নিজে কিংবা প্রিয়জনের সঙ্গে সেই মুহূর্তটা স্মৃতি করে রাখতে ফ্রেমবন্দী হতে দেরি করেন না সেলফি আসক্তরা। বিশেষ করে, উঠতি বয়সী তরুণ-তরুণীরা সেলফিতে বেশি আসক্ত। বাড়তি বিনোদন আর স্মৃতি ধরে রাখার বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে এবারের ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলায় ওয়ালটন করেছে সেলফি কর্ণার। ক্রেতা-দর্শনার্থীদের বিনোদনে সঙ্গী হতে একমাত্র ওয়ালটনই করেছে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর আকর্ষণীয় এ সেলফি কর্ণার।
আনন্দঘন মুহুর্তকে ধরে রাখতে সেলফি তোলা হয়। কিংবা সেলফি তুলে আনন্দঘন মুহুর্তকে ধরে রাখা হয়। তাই গতকাল মেলার ২০তম দিন বাণিজ্যমেলায় সেলফি তোলায় ধুম পড়ে। রাজধানীর আগারগাঁওয়ে চলমান মাসব্যাপী মেলায় এমন দৃশ্যই লক্ষ্য করা গেছে। দিন দিন যে মোবাইল ফোনে সেলফি তোলা জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে তা বলার অপেক্ষা রাখে না। বিষয়টি আরো বেশি করে নজর কাড়ে ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলায়। দেখে যে কারো মনে হতেই পারে এ যেন সেলফি মেলা! মেলায় সরেজমিন ঘুরে বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষের সেলফিতে মজে থাকতে দেখা যায়। মেলায় এসে স্কুল কলেজ পড়ুয়ারা যেমন সেলফি তুলছেন। সেলফি তোলায় পিছিয়ে নেই বয়স্করাও। সেলফি তোলার অনুভূতি প্রসঙ্গ আরিফ বলেন, বন্ধুরা মিলে মেলায় ঘুরতে এসেছি। আবার কবে সবাই একসঙ্গে আসবো, তার তো কোনো ঠিক নেই। তাই এই সময়টা স্মৃতি হিসেবে ধরে রাখার জন্যই আমরা সবাই একসঙ্গে একই ফ্রেমে নিজেদের বন্দি করছি।
এবারের ২২তম মেলায় প্রথমবারের মতো সেলফি কর্ণার নির্মাণ করে মেলার শুরুতেই চমক দেখিয়েছে শীর্ষস্থানীয় ব্র্যান্ড ওয়ালটন। দেশীয় এ প্যাভেলিয়নের পণ্য প্রদর্শন আর বিক্রয়কর্মীর উপস্থাপন মুগ্ধ করছে ক্রেতা-দর্শনার্থীদের।
মেলা ঘুরে দেখা গেছে, বাণিজ্য মেলার প্রধান প্রবেশদ্বার দিয়ে ঢুকেই মূল টাওয়ারের পাশেই নির্মাণ করা হয়েছে দেশীয় প্রতিষ্ঠান ওয়ালটনের প্রদর্শনী কেন্দ্রটি। প্রতিবারের মতো এবারো দৃষ্টিনন্দন প্যাভিলিয়ন নির্মাণ করে চমক সৃষ্টি করেছে ওয়ালটন। বিশাল জায়গা নিয়ে তৈরি হয়েছে অপূর্ব স্থাপত্য শৈলীর দৃষ্টিনন্দন তিনতলা মেগা প্রিমিয়ার প্যাভিলিয়ন। প্যাভিলিয়নে প্রবেশ ফটকের বাইরে হাতের বাম পাশে লিফটের কাছে করা হয়েছে ওয়ালটন সেলফি কর্ণার। প্রতিদিন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত সেলফিপ্রেমীদের পদচারণায় মুখর থাকে ওয়ালটন সেলফি কর্ণার। শিশু-কিশোর, তরুণ-তরুণী, মধ্যবয়সী এমনকি বৃদ্ধদেরও সেলফি তুলতে দেখা যায়। কারও সঙ্গে স্ত্রী, কারও সঙ্গে প্রেমিকা, কেউ কেউ বন্ধুদের সঙ্গে আবার কেউ কেউ বাবা-মা ও স্বজনদের সঙ্গে সেলফি তুলছেন। রীতিমতো লাইন ধরে দাঁড়াতে হচ্ছে। সেলফির তোলার আনন্দ থেকে বঞ্চিত হননি বিদেশীরাও। ওয়ালটনের এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর (পিআর এ্যান্ড মিডিয়া) হুমায়ূন কবীর বলেন, মানুষ এখন এতোই কর্মচঞ্চল যে ব্যস্ততার কারণে হাসতে ভুলে গেছে। আমরা মনে করি যিনি খুব বেশি হাসেন তার মনটা খুব ভাল থাকে। চিকিৎসকরাও বলেন, হাসলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেড়ে যায়। যান্ত্রিকতার এই ইট-কাঠ-পাথরে ঘেরা ঢাকা শহরে চিত্তবিনোদনের বড়ই অভাব। ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলা হচ্ছে একটি মিলনমেলা। এই মিলনমেলায় সত্যিকার অর্থে ক্রেতা ও দর্শনার্থীদের সামান্যতম হলেও বিনোদন দিতে ওয়ালটন সেলফি কর্ণার অগ্রণী ভূমিকা রাখছে। ক্রেতা-দর্শনার্থীদের বিনোদনে ভিন্ন মাত্রা যোগ করার বিষয়টি মাথায় রেখেই ওয়ালটন সেলফি কর্ণার করা হয়েছে বলে তিনি জানান। তাছাড়া নতুন বছরের শুরুতে মেলায় আগত ক্রেতা-দর্শণার্থীদের নতুন কিছু উপহার দিতেই ওয়ালটনের এই বিশেষ উদ্যোগ।
বাণিজ্যমেলায় সরেজমিন ঘুরে বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষের সেলফিতে মজে থাকতে দেখা যায়। মেলায় এসে স্কুল-কলেজ পড়ুয়া ছেলে-মেয়েরা যেমন সেলফি তুলছেন, পিছিয়ে নেই বয়স্করাও। বাণিজ্যমেলায় সেলফি উৎসব কেউ মেলায় প্রবেশের আগে, কেউ ভেতরে প্রবেশ করেই, কেউ ছোটদের খেলনার কাছে, কেউ আইসক্রিম খেতে খেতে, কেউ সেলফি তুলছেন কোন প্রিয় জিনিস কেনার সময় প্রিয় মানুষদের সঙ্গে।
ওয়ালটনের ইন্টেরিয়র ডিজাইন বিভাগের এ্যাসিস্ট্যান্ট জেনারেল ম্যানেজার শাদী মোহাম্মদ রুম্মান জানান, মোবাইলে সেলফি একটি নতুন ট্রেন্ড। এর প্রতি কম বেশি সবাই আকর্ষণ বোধ করে। বিষয়টি মাথায় রেখে ওয়ালটন স্পেশাল সেলফি কর্নারের ব্যবস্থা করেছে।
ওয়ালটন প্যাভিলিয়নের ইনচার্জ মো. শফিকুল ইসলাম জানান, মেলার শুরু থেকেই ওয়ালটন প্যাভিলিয়নে ক্রেতা-দর্শনার্থীদের উপস্থিতি আশানুরুপ। একই সঙ্গে বেচাবিক্রি। তিনি বলেন, মেলায় যারা আসছেন তাদের বেশির ভাগ লোক ওয়ালটন প্যাভিলিয়নের আসছেন। অনেকেই কেনাকাটা করতে, অনেকেই পণ্যের তথ্য নিতে, আবার অনেকেই আসছেন সেলফি কর্ণারে ছবি তুলতে। সব মিলে মেলার প্রথম দিন থেকে প্রতিদিনই ক্রেতা-দর্শনার্থী ও বিনোদন প্রেমিদের ভিড়ে জমজমাট থাকে ওয়ালটনের মেগা প্রিমিয়ার প্যাভিলিয়ন।
এদিকে মেলায় সেলফি তুলুন এবং তা নির্দিষ্ট পণ্য প্রতিষ্ঠানের ফেসবুক পেইজে শেয়ার করুন। যদি সেলফিটিতে সবচেয়ে বেশি লাইক আর কমেন্ট পড়ে, তবেই ছক্কা। মিলবে ৩২ ইঞ্চি সম্পূর্ণ এইচডি (হাই ডেফিনেশন) টেলিভিশন। ক্রেতাদের আকৃষ্ট করতে এমন সুযোগ দিচ্ছে দেশীয় প্রযুক্তি পণ্য প্রতিষ্ঠান ইউনিটেক। প্রতিষ্ঠানটি মেলায় এনেছে ফ্রিজ, রেফ্রিজারেটর, টেলিভিশন ও এয়ারকন্ডিশনার মেশিন। ইউনিটেক এর সেলস এক্সিকিউটিভ শাহাদাত হোসেন বলেন, ৩২ ইঞ্চি এইচডি টিভি পুরস্কার পেতে আগ্রহীকে আমাদের প্যাভিলিয়ানে আসতে হবে। এরপর সেলফি তুলে আমাদের পণ্যের ফেসবুক পেইজে পোস্ট দিতে হবে। অনেকেই পোস্ট করছেন, যে সেলফিতে সবচেয়ে বেশি লাইক ও কমেন্ট পড়বে- মেলা শেষ হলে তিনিই পাবেন পুরস্কার।