হাটা চলা, কথা বলা, বই পড়া এবং অন্যের সঙ্গে যোগাযোগসহ দৈনন্দিন সব কাজ নিজেই করতে পারছেন সিলেটের কলেজছাত্রী খাদিজা আক্তার নার্গিস। শিগগিরই বাড়ি ফিরে যাবেন তিনি।
বৃহস্প্রতিবার দুপুরে সাভারের সিআরপিতে সংবাদ সম্মেলনে এমনটাই জানালেন খাদিজার চিকিৎসায় নিয়োজিত মেডিক্যাল টিমের সদস্যরা। খাদিজার শারীরিক অগ্রগতি জানাতে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে খাদিজা বলেন, ‘আমি যখন সিআরপিতে আসি, তখন আমি হুইল চেয়ারে চলাফেরা করতাম। এখন আমি কথা বলতে পারি, নিজে হাটতে পারি। এ জন্য আমি আল্লাহর কাছে কৃতজ্ঞ। দেশবাসী, সাংবাদিক এবং আমার চিকিৎসায় নিয়োজিত চিকিৎসকদের কাছেও আমি কৃতজ্ঞ। বাড়িতে গিয়ে আমি আবার পড়ালেখা চালিয়ে যেতে চাই।’
বদরুলের শাস্তির বিষয়ে জানতে চাইলে খাদিজা বলেন, ‘আমি তার সর্বোচ্চ শাস্তি চাই।’ খাদিজার চিকিৎসায় নিয়োজিত মেডিক্যাল টিমের প্রধান ডা. সাইদ উদ্দিন হেলাল বলেন, ‘২৮ নভেম্বর খাদিজাকে সিআরপিতে আনা হয়। আমরা তখন তিন মাসের একটি লক্ষ্য নির্ধারণ করি। আমরা বর্তমানে সেই লক্ষ্য শতভাগ অর্জন করেছি। আমরা দুই এক দিনের মধ্যেই খাদিজাকে তার বাড়িতে পাঠাবো। তবে খাদিজাকে আরো ৫ থেকে ৬ বছর সতর্কতার সঙ্গে থাকতে হবে। এই সময়ের মধ্যে তিনি দ্রুত হাটা এবং শারীরিক শক্তি অর্জন করবে। বাড়িতে থাকা অবস্থায় চিকিৎসার প্রয়োজন হলে সিআরপির সিলেট শাখা থেকে চিকিৎসা নিতে পারবে।’
সংবাদ সম্মেলনে খাদিজার বড় ভাই শাহীন আহমেদ বলেন, ‘খাদিজার এই অগ্রগতির জন্য আমরা অনেক খুশি। সে আবার আমাদের মাঝে আগের মত হাটা চলা করবে তা আমরা ভাবতেও পারিনি। এ জন্য আমি প্রধানমন্ত্রী, দেশবাসী এবং সংবাদ কর্মীদের ধন্যবাদ জানাই। চিকিৎসকদের কথামত আমরা তাকে দুই একদিনের মধ্যে খাদিজাকে সিলেটে নিয়ে যাবো।’
সংবাদ সম্মেলনে ফিজিওথেরাপিস্ট শ্যামা বিশ্বাস, স্পিচ এ্যান্ড ল্যাংগুয়েজ থেরাপিস্ট তাহমিনা সুলতানা, অকুপেশনাল থেরাপিস্ট মানসুরা আক্তারসহ অন্য চিকিৎসকরা বক্তব্য রাখেন।
প্রসঙ্গত, গত বছর ৩ অক্টোবর সিলেটের এমসি কলেজ কেন্দ্রে পরীক্ষা দিয়ে বের হওয়ার পর হামলার শিকার হন সিলেট সরকারি মহিলা কলেজের স্নাতক দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী খাদিজা। ঘটনার পর রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে তাকে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়। অবস্থার উন্নতি হওয়ায় গত ১৩ অক্টোবর তার লাইফ সাপোর্ট খোলা হয়। স্কয়ার হাসপাতালে চিকিৎসা শেষে ২৮ নভেম্বর খাদিজাকে সাভারে সিআরপিতে নেওয়া হয়।