স্বামীর নির্যাতনের শিকার হলেও দেশের ৭২ দশমিক ৭ শতাংশ নারী তা গোপন রাখেন। নির্যাতনের কথা নারীরা নিজের পরিবার, শ্বশুরবাড়ির লোকজন ও প্রতিবেশীদের কাছে জানালেও আনুষ্ঠানিকভাবে পুলিশ, চিকিৎসক, ধর্মীয় বা এলাকার মুরব্বিদের কাছে তা জানানোর সংখ্যা খুব কম। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) ‘ভায়োলেন্স এগেইনস্ট উইমেন সার্ভে ২০১৫’ শীর্ষক দ্বিতীয় জরিপের এক ফলাফলে এ চিত্র উঠে এসেছে।
জরিপের তথ্যমতে, নির্যাতনের কথা গোপন করার দিক থেকে বরিশাল এগিয়ে। এখানকার প্রায় ৭৬ শতাংশ নারী কাউকে জানাননি নির্যাতনের কথা। সারা দেশে নির্যাতনের পর আইনি সহায়তা নিয়েছেন মাত্র ২ দশমিক ৬ শতাংশ নারী। এর মধ্যেও সালিসব্যবস্থা প্রাধান্য পেয়েছে।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) এই জরিপ আরো বলছে, বর্তমানে বিবাহিত নারীদের ৮০ দশমিক ২ শতাংশ জীবনের কোনো না কোনো সময় স্বামীর হাতে কোনো না কোনো ধরনের নির্যাতনের শিকার। ২০১১ সালে প্রথম জরিপে এ সংখ্যা ছিল ৮৭ দশমিক ১ শতাংশ। ৩৯ দশমিক ৩ শতাংশ নারী নির্যাতনের কথা কাউকে জানানোরই প্রয়োজন মনে করেননি। এ ক্ষেত্রেও শহর ও গ্রামের চিত্র প্রায় একই।
নির্যাতনের পর পুলিশের কাছে যান ১ দশমিক ১ শতাংশ নারী। স্থানীয় নেতাদের কাছে যান ২ দশমিক ১ শতাংশ আর এনজিওর সহায়তা চেয়েছেন মাত্র ২ দশমিক ১ শতাংশ নারী। সরকারি প্রতিষ্ঠানের কাছে সহায়তা চাওয়ার সংখ্যাও কম।
দেশের সাতটি বিভাগের শহর, গ্রাম, সিটি করপোরেশন এবং সিটি করপোরেশনের বাইরের শহরকে এ জরিপের আওতায় আনা হয়েছে। শারীরিক, যৌন, অর্থনৈতিক, স্বামীর নিয়ন্ত্রণমূলক আচরণ বা মনোভাব এবং আবেগজনিত নির্যাতনকে জরিপে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এতে ১৫ বছরের বেশি বয়সী ২১ হাজার ৬৮৮ জন নারীর সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়েছে। মাঠপর্যায়ে ২০১৫ সালের ১৩ থেকে ২২ আগস্ট পর্যন্ত তথ্য সংগ্রহ করা হয়।