বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ইন্টার্ন চিকিৎসকদের ধর্মঘট এখনও চলছে। পঞ্চম দিনের মতো ধর্মঘট পালনকালে ইন্টার্ন চিকিৎসকদের পক্ষ থেকে বলা হয়, শাস্তি মওকুফের খবর শুনেছি.। লিখিত না পাওয়া পর্যন্ত ধর্মঘট কর্মসূচি চলবে।
সোমবার বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসকদের মুখপাত্র কুতুব উদ্দিন বলেন, শাস্তি মওকুফের লিখিত চিঠি না পাওয়া পর্যন্ত ধর্মঘট প্রত্যাহার করা হবে না। একই সঙ্গে এ ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটির রিপোর্ট প্রত্যাহার করতে হবে। একই সঙ্গে দোষীদের শাস্তি দিতে হবে এবং চিকিৎসকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।
এসব ঠিকঠাক হওয়ার পর আমাদের ধর্মঘট কর্মসূচি প্রত্যাহার করবো। তা না হলে ধর্মঘট চলবেই। তিনি বলেন, সোমবার সন্ধ্যা ৬টায় আমাদের ৭২ ঘণ্টার আলটিমেটাম শেষ হবে। সন্ধ্যার পরও দাবি পূরণ না হলে আন্দোলনের নতুন কর্মসূচি দেয়া হবে।
সোমবার সরেজমিনে দেখা যায়, বেলা ১১টায় ইন্টার্ন চিকিৎসকরা প্রশাসনিক ভবনের মূল ফটকের সামনে রাস্তায় মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন। ১১টা থেকে ১২টা পর্যন্ত তারা এই কর্মসূচি পালনে অবস্থান নেন। তাদের সঙ্গে একত্মতা ঘোষণা করেন বগুড়া বিএমএর সভাপতি ডা. মোস্তফা আলম নান্নু, সাধারণ সম্পাদক ডা. রেজাউল আলম জুয়েল, স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের সভাপতি ডা. সামির হোসেন মিশুসহ হাসপাতালের বেশ কিছু চিকিৎসক যোগ দেন।
ধর্মঘট ঘিরে সকাল থেকেই হাসপাতালের বহির্বিভাগে রোগীর টিকিট দেয়া ও দেখা বন্ধ থাকতে দেখা যায়। দূর-দূরান্ত থেকে আসা রোগীদের সকাল থেকেই বহির্বিভাগের বাইরে বসে থাকতে দেখা গেছে। অন্যদিকে বিভিন্ন ওয়ার্ডেও চিকিৎসক স্বল্পতায় রোগীদের দুর্ভোগে পড়তে দেখা যায়।
জয়পুরহাটের কালাই উপজেলার মোলামগাড়ীর সাফিয়া খাতুন জাগো নিউজকে জানান, বুকের ব্যথার সমস্যার জন্য তিনি এসেছেন। বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত বহির্বিভাগে চিকিৎসক দেখানোর টিকিট তিনি পাননি। টিকিট কাউন্টারসহ চিকিৎসকদের চেম্বার এ সময় পর্যন্ত বন্ধ থাকতে দেখা যায়।
এভাবেই সিরাজগঞ্জের শাজাহাদপুর উপজেলার পুকুরপাড় গ্রাম থেকে কিডনি সমস্যায় আসা আব্দুল বাতেন ও বগুড়া শহরের খান্দারে মনোয়ারাকে বসে থাকতে দেখা যায়। হাসপাতালের ভেতরে সার্জারি ওয়ার্ডের ৩৬৪নং রুমে বাবুলের সঙ্গে কথা হয়। তিনি এসেছেন সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া থেকে।
কথা হয় নওগাঁ ধামইরহাটের নূর আলমের সঙ্গে ৩৬২নং কক্ষে। তারা জানান, ডাক্তার এখনও আসেনি। এভাবেই শিশু ওয়ার্ডসহ অন্যান্য ওয়ার্ডে ডাক্তারের স্বল্পতা দেখা যায়।
বেলা ১১টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত ইন্টার্ন চিকিৎসকদের মানববন্ধন কর্মসূচি চলাকালে বগুড়া বিএমএ সভাপতি ডা. মোস্তফা আলম নান্নু বলেন, আমরা চাই ঐক্যবদ্ধভাবে এ সমস্যার সমাধান হবে। ইন্টার্ন চিকিৎসকদের কর্মসূচিতে বিএমএ, স্বাচিপ একত্মতা ঘোষণা করেছে। তবে চিকিৎসকরা ধর্মঘটে এখনও যাননি।
ইন্টার্ন চিকিৎসকদের মুখপাত্র কুতুব উদ্দিন বলেন, আমাদের অভিভাবক সংগঠন বিএমএ, স্বাচিপ আমাদের সঙ্গে আছে। না থাকলেও আমাদের সমস্যা নেই। আমরা আন্দোলন করতে জানি। আমাদের বিরুদ্ধে শাস্তি মওকুফ করতে হবে। তা না হলে এমন একটা সিদ্ধান্তের কারণে আরো এ ধরনের ঘটনা ঘটবে।
তিনি আরো বলেন, শুনেছি শাস্তি মওকুফ করা হয়েছে। লিখিত কাগজ না পাওয়া পর্যন্ত ধর্মঘট চলবে। সোমবার বিকেলে এ খবর লেখা পর্যন্ত ইন্টার্ন চিকিৎসকদের ধর্মঘট অব্যাহত ছিল।