এছাড়া স্মার্টফোনের দাম নাগালের মধ্যে না থাকা, বিক্রয়োত্তর সেবার ঘাটতি এবং স্মার্টফোন ব্যবহার সংক্রান্ত প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা না থাকাতেও বাড়ছে স্মার্টফোনের ব্যবহার।
সম্প্রতি এক গবেষণা প্রতিবেদনে এমন তথ্য বেরিয়ে এসেছে। দেশে স্মার্টফোনের ব্যবহার এবং ইন্টারনেট সেবা সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক ও স্থানীয় কিছু প্রতিবেদনের প্রেক্ষিতে এলিট মোবাইল এ গবেষণা পরিচালনা করে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, স্মার্টফোনে ব্যবহার করা ইংরেজি ভাষা, অ্যান্ড্রয়েডের অপারেটিং সিস্টেমের জটিলতা থাকার কারণে সাধারণ মানুষ ফিচার ফোন থেকে স্মার্টফোনে আসার আগ্রহ পায় না।
স্মার্টফোন ব্যবহারের অজ্ঞতার কারণে প্রত্যন্ত অঞ্চলের অনেক মানুষ ইন্টারনেট সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন, যা তাদের জীবন যাত্রার মান উন্নয়নের ক্ষেত্রে বাধা সৃষ্টি করছে। রাজধানী বা বড় শহরগুলোতে স্মার্টফোনের ব্যবহার আধিক্য থাকলেও গ্রামাঞ্চলে সাধারণ খেটে খাওয়া বা অল্প আয়ের মানুষ স্মার্টফোন ব্যবহারে সাহস পায় না।
কাস্টমস অফিসের তথ্যমতে, ২০১৪ সালে দেশে ২ কোটি ৪০ লাখ মোবাইল আমদানি হলেও স্মার্টফোন আমদানি হয়েছে মাত্র ৪০ লাখ। মোবাইল আমদানিকারকদের সংগঠন বাংলাদেশ মোবাইল ফোন ইম্পোটার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমপিআইএ) এক জরিপ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত বছরের চেয়ে ২০১৫ সালে মোবাইল আমদানি বেড়ে ২ কোটি ৬০ লাখ হবে। এর মধ্যে স্মার্টফোন থাকবে মাত্র ৬৩ লাখ।
বিটিআরসির গত ২০ অক্টোবর প্রকাশিত প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, দেশে মোবাইল ফোন ব্যবহারকারীর সংখ্যা ১৩ কোটি ১৪ লাখ ৩৬ হাজার। বর্তমানে দেশে মোট ইন্টারনেট গ্রাহকসংখ্যা ৫ কোটি ৪০ লাখ ৫৮ হাজার। এর মধ্যে মোবাইলে ইন্টারনেট ব্যবহার করছেন প্রায় ৫ কোটি ২০ লাখ গ্রাহক।
বিটিআরসির হিসেবে এখনও শুধু মোবাইল ফোন ব্যবহারকারীদের মধ্যে ৭ কোটি ৯৪ লাখ ৩৬ হাজার গ্রাহক মোবাইল ইন্টারনেট সেবার বাইরে রয়েছেন।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে গত ২১ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত ডিজিটাল উন্নয়নের জন্য জাতিসংঘের ব্রডব্যান্ড কমিশনের সভায় আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশিত ২০১৫ সালের বিশ্ব ব্রডব্যান্ড পরিস্থিতি নিয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০১৫ সালে উন্নয়নশীল দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশে বাসা বাড়ি প্রতি ইন্টারনেট ব্যবহারের হার ৬ দশমিক ৪ শতাংশ এবং ব্যক্তিগত পর্যায়ে ইন্টারনেট ব্যবহারের হার ৯ দশমিক ৬ শতাংশ।
মোবাইল ইন্টারনেট ব্যবহারের সুবিধার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থান অনেকটা পিছিয়ে আছে বলে মনে করছে জাতিসংঘের ব্রডব্যান্ড কমিশন।
এলিট মোবাইলের প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নের জন্য সবার হাতে হাতে স্মার্টফোন পৌঁছে দেওয়ার আবশ্যকতা রয়েছে। সহজ যোগাযোগ এবং ইন্টারনেটে প্রবেশের জন্যও স্মার্টফোনের প্রয়োজনীয়তা বেশি। দেশে স্বল্পমূল্যের স্মার্টফোন, বাংলা মোবাইল অ্যাপস ও ইন্টারনেট ভিত্তিক প্রশিক্ষণ বাড়ালে স্মার্টফোনের ব্যবহার বাড়বে। এ জন্য সরকার, রেগুলেটরি, মোবাইল অপারেটর, হ্যান্ডসেট ব্যবসায়ীরা উদ্যোগ নিতে পারেন।
সানবিডি/ঢাকা/রাআ