সবাইকে পিছনে ফেলে দিলেন কট্টর হিন্দুত্ববাদী যোগী আদিত্যনাথ। ভারতের সবচেয়ে জনবহুল রাজ্য উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রীর তখতে বসছেন বিজেপি-র এই সন্ন্যাসী এমপি।
‘চরম হিন্দুত্ববাদী’ বলেই যোগী আদিত্যনাথের পরিচিতি। গত কয়েক বছর ধরেই নানারকম বিতর্কিত মন্তব্য এবং হিন্দুত্বের পক্ষে কথা বলে বার বারই হইচই তৈরি করেছেন যোগী আদিত্যনাথ। এক সময়ে কংগ্রেস, বামেরাসহ বিজেপিবিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি যোগী আদিত্যনাথের বিরুদ্ধে পার্লামেন্টে রাজনৈতিক সমালোচনাও জুড়ে দিয়েছিল।
উত্তরপ্রদেশ বিধানসভা নির্বাচনে ঐতিহাসিক জয় পাওয়ার পরে এহেন বিতর্কিত ‘চরম হিন্দুত্ববাদী’ যোগী আদিত্যনাথকেই সেই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে বেছে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং অমিত শাহরা। সরকারিভাবে উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে যোগী আদিত্যনাথের নাম ঘোষণা নিয়ে সকাল থেকেই জল্পনা চলছিল।
জাত-পাতের অঙ্ক মাথার রেখে উত্তর প্রদেশে দু’জন উপমুখ্যমন্ত্রী রাখছে বিজেপি। একজন কেসবপ্রসাদ মৌর্য্য এবং অন্যজন মনোজ সিংহ। উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার দৌড়ে এবার এই দু’জনেই সবার আগে ছিলেন। কারণ, উত্তর প্রদেশের অখিলেশ-মুলায়মের সাইকেল চাকা পাংচার করে দেয়া থেকে বিএসপি-র মায়াবতীর দলিত ভোটব্যাংক লুঠে নিয়ে আসার পিছনে এই দু’জনের ব্লুপ্রিন্ট মারাত্মকভাবেই কাজ করেছে বলে স্বীকারও করেছে বিজেপি-র কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব।
উত্তর প্রদেশে যোগী আদিত্যনাথের মতো একজন ‘চরম হিন্দুত্ববাদী’-কে নিয়ে তাস খেলাটা বিপজ্জনক হয়ে যাবে না তো? এমন প্রশ্নও অনেকে তুলছেন। বিজেপি-র একটা সূত্রে দাবি করা হচ্ছে, উত্তর প্রদেশে বিজেপি এবার রামমন্দির নির্মাণে সচেষ্ট হবে। এই মন্দির তৈরি করা নিয়ে বিতর্কের শেষ নেই। উত্তর প্রদেশে বিজেপি যেভাবে রেকর্ড সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করেছে, তাতে অবিলম্বে রামমন্দির নির্মাণে উদ্যোগী না হলে পরবর্তীকালে রাজনৈতিকভাবে এই নিয়ে বিরোধীরা চাপ বাড়াতে পারে। তাই, রামমন্দির নির্মাণের মতো দীর্ঘদিনের এজেন্ডাকে বাস্তবায়িত করতে এখন মরিয়া বিজেপি-র গৈরিকপন্থী নেতারা। তাই যোগী আদিত্যনাথের মতো ‘চরম হিন্দুত্ববাদী’-কে মুখ্যমন্ত্রী বানানোর জন্য সিলমোহর পড়ল।
যোগী আদিত্যনাথ আবার রামজন্মভূমি আন্দোলনের অন্যতম পথিকৃৎ মহন্ত অবৈদ্যনাথের শিষ্য। সুতরাং, যোগী আদিত্যনাথের হাত দিয়ে রামমন্দির নির্মাণের স্বপ্ন বাস্তবায়িত করা গেলে মহন্ত অবৈদ্যনাথকেও শ্রদ্ধা জানানো যাবে বলে মনে করছেন বিজেপি-র অন্দরে থাকা আরএসএস-পন্থী এবং হিন্দুত্ববাদী নেতারা।
দিল্লি থেকে বিশেষ বার্তা পেয়ে শনিবার বিকেলেই রাজধানীতে পা রেখেছেন গোরক্ষপুরের সাংসদ যোগী আদিত্যনাথ। সেখানে তিনি নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে দেখা করেন। পরে অমিত শাহের সঙ্গেও বৈঠক হয় তার। অমিত শাহ আবার যোগী আদিত্যনাথকে সঙ্গে করে আরএসএস নেতাদের সঙ্গেও নাকি বৈঠক করেছেন।