মালদ্বীপের মডেল-ছাত্রী রাউধা আতিফকে (২০) রাজশাহীতেই দাফন করা হয়েছে। শনিবার সকালে তার পরিবারের সদস্যরা পুলিশকে তাদের এই সিদ্ধান্তের কথা জানান। পরে দুপুরে তাকে নগরীর হেতেম খা কবরস্থানে দাফন করা হয়।
নগরীর শাহ মখদুম থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) জিল্লুর রহমান জানান, পরিবারের সদস্যরা রাজশাহীতেই তাকে দাফনের ব্যাপারে তাদের মতামত দেন। পরে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে লাশ দাফন করার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
ওসি জানান, মালদ্বীপের রাষ্ট্রদূতের উপস্থিতিতে রাউধার পরিবারের সদস্যরা এ সিদ্ধান্তের কথা জানান।
গত বুধবার বেলা ১১টার দিকে রাজশাহীর ইসলামী ব্যাংক মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের হোস্টেল থেকে এমবিবিএস দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী রাউধার ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। তিনি আত্মহত্যা করেছেন বলে পুলিশ প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে। রাউধার বাড়ি মালদ্বীপের মালেতে। তার বাবা মোহাম্মদ আতিফ পেশায় একজন চিকিৎসক।
২০১৬ সালের অক্টোবরে বিখ্যাত 'ভোগ ইন্ডিয়া' সাময়িকীর নবম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর সংখ্যায় এশিয়ার বিভিন্ন দেশের মডেলদের নিয়ে প্রচ্ছদ প্রতিবেদন প্রকাশ করে। 'বৈচিত্র্যে সৌন্দর্য উদযাপন' (সেলিব্রটিং বিউটি ইন ডাইভার্সিটি) শিরোনামের ওই প্রতিবেদনে স্থান পেয়েছিলেন মালদ্বীপের নীলনয়না এই মডেল। উঠতি মডেল হিসেবে রাউধার আন্তর্জাতিক খ্যাতি ছিল।
রাউধার লাশ উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছিল। এরপর ওই দিনই নগরীর শাহ মখদুম থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা দায়ের করে ইসলামী ব্যাংক মেডিকেল কলেজ কর্তৃপক্ষ।
বৃহস্পতিবার রাজশাহী আসেন মালদ্বীপের মালদ্বীপের রাষ্ট্রদূত আইশাদ শান শাকির ও কমনওয়েলথের সেকেন্ড সেক্রেটারি ইসমাইল মুফিদসহ একটি প্রতিনিধি দল। পরে আসেন রাউধা আতিফের মা-বাবা ও ভাই। এরপর শুক্রবার সকালে তারা রামেক হাসপাতালের হিমঘরে রাখা রাউধার লাশ দেখতে যান। এ সময় তারা কান্নায় ভেঙে পড়েন। এরপর তারা লাশের ময়নাতদন্তের সিদ্ধান্ত নেন।
শুক্রবার দুপুরে রাজশাহী মেডিকেল কলেজের (রামেক) মর্গে ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়। রামেক হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগের চিকিৎসক ডা. মনসুর রহমানকে প্রধান করে তিন সদস্যবিশিষ্ট টিম গঠন করা হয়। টিমের অন্য সদস্যরা হলেন ফরেনসিক বিভাগের চিকিৎসক ডা. এমাদাদুর রহমান ও ডা. এনামুল হক।
ময়নাতদন্ত শেষে টিমের প্রধান ডা. মনসুর রহমান জানিয়েছিলেন, মৃত্যুর কারণ নিশ্চিত হতে ভিসেরা পরীক্ষা করা হচ্ছে। দু’একদিনের মধ্যে ময়নাতন্তের প্রতিবেদন পুলিশকে দিয়ে দেওয়া হবে। তখন মৃত্যুর কারণ নিশ্চিতভাবে বলা যাবে। এর আগে তিনি এ ব্যাপারে কোনো মন্তব্য করতে চাননি।