বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হিন্দিতে অনূদিত আত্মজীবনীগ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন করবেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। আগামী ৮ এপ্রিল ঢাকা-নয়াদিল্লি দ্বিপক্ষীয় বৈঠক শেষে এ মোড়ক উন্মোচন করা হবে।
নয়াদিল্লিস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশনের মিনিস্টার (প্রেস) ফরিদ হোসেন বাংলানিউজকে এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগেই বাংলা থেকে বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনী গ্রন্থটি হিন্দিতে অনুবাদ করা হয়েছে।
তিনি বলেন, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আমন্ত্রণে আগামী ৭ এপ্রিল সকালে ঢাকা থেকে রওয়ানা হয়ে দুপুর বারোটার দিকে দিল্লি পৌঁছুবেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী।
ভারতের ভারী শিল্প ও পাবলিক এন্টারপ্রাইজ প্রতিমন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয় প্রধানমন্ত্রীকে বিমানবন্দরে স্বাগত জানাবেন।
বিমানবন্দর থেকে সরাসরি তিনি যাবেন রাষ্ট্রপতি ভবনে। নয়াদিল্লিতে তিনি সেখানেই অবস্থান করবেন।
প্রধানমন্ত্রীর সফরসঙ্গী ৫ মন্ত্রী পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাহমুদ আলী, আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, পানিসম্পদমন্ত্রী আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আকম মোজাম্মেল হক ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলমও থাকবেন রাষ্ট্রপতিভবনে।
নয়াদিল্লি পৌছে কিছুক্ষণ বিশ্রামের পর দুপুরের আহার সারবেন শেখ হাসিনা। বিকেল তিনটায় তার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ।
সন্ধ্যায় বাংলাদেশ হাইকমিশনে আয়োজিত সংবর্ধনায় অংশ নেওয়ার পর রাতে হাইকমিশনার সৈয়দ মোয়াজ্জেম আলীর বাসভবন ‘বাংলাদেশ হাউজে’ নৈশভোজে অংশ নেবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
৮ এপ্রিল সকাল ৯টায় রাষ্ট্রপতি ভবনের ‘ফোর কোর্টে’ বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে দেওয়া হবে গার্ড অব অনার। এ সময় ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি পাশে থাকবেন। সেখান থেকে রাজঘাটে যাবেন শেখ হাসিনা। ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানাবেন গান্ধীর সমাধিতে। সেখান থেকে সরাসরি চলে যাবে হায়দ্রাবাদ হাউজে। দ্বিপক্ষীয় বৈঠক শুরু হবে সেখানেই।
বৈঠকের আগে দুই দেশের প্রধানমন্ত্রীরা একান্তে আলাপ করবেন। আর বৈঠক শেষে বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনীর হিন্দি অনুবাদের মোড়ক উন্মোচন করবেন হাসিনা-মোদি।
এরপরই যৌথ ঘোষণা দেবেন তারা। ঘোষণা শেষে চলে যাবেন ভারতের প্রধানমন্ত্রীর আয়োজনে দুপুরের ভোজে অংশ নিতে।
এই সফরে ৫০টির মতো চুক্তি, সমঝোতা স্মারক ও বিভিন্ন দলিল সই হতে পারে বলে জানা গেছে।
ফরিদ হোসেন বলেন, ৮ এপ্রিল বিকেল সাড়ে তিনটায় দিল্লি ক্যান্টনমেন্টে মানেকশ সেন্টারে শেখ হাসিনা ৭১' এ শহীদ ভারতীয় যোদ্ধাদের স্বজনদের হাতে সিলভার ক্রেস্ট ও ৫ লাখ টাকা করে তুলে দেবেন। নরেন্দ্র মোদিও উপস্থিত থাকবেন সে সময়।
তিনি আরো বলেন, এ অনুষ্ঠান শেষে সন্ধ্যায় মওলানা আবুল কালাম আজাদ রোডে ভারতের উপরাষ্ট্রপতি মোহম্মাদ হামিদ আনসারির সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী।
তারপর ভারতের কংগ্রেসপ্রধান সোনিয়া গান্ধী রাষ্ট্রপতি ভবনে আসবেন শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করতে।
৯ এপ্রিল সকাল ন’টায় এয়ার ইন্ডিয়ার বিশেষ ফ্লাইটে জয়পুর যাবেন শেখ হাসিনা। সেখান থেকে হেলিকপ্টারে আজমীর শরিফে গিয়ে হযরত খাজা মঈনুদ্দিন চিশতি (রহ.) এর মাজার জিয়ারত করবেন তিনি।
সেখান থেকে ফিরে বিকেলে ভারতের রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জির সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন শেখ হাসিনা। সন্ধ্যায় রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উপভোগ করবেন।
রাতে রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জির দেওয়া নৈশভোজে অংশ নেবেন শেখ হাসিনা ও তার মন্ত্রীরা। নরেন্দ্র মোদিও উপস্থিত থাকবেন সেখানে।
সফরের শেষ দিন ১০ এপ্রিল সকালে দিল্লির তাজ প্যালেস হোটেলে দু’দেশের ব্যবসায়ীদের উদ্দেশে বক্তব্য দেবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেখানে ব্যবসায়ীদের কথাও শুনবেন তিনি।
তারপর রাষ্ট্রপতি ভবনে দুপুরের খাবার শেষে বিশ্রাম নেবেন প্রধানমন্ত্রী। বিকেলে ভারত সফরের সমাপ্তি টেনে দেশে ফিরবেন শেখ হাসিনা।