আর কয়েক দিন পরেই বাংলা নববর্ষ। নববর্ষ উদযাপনের প্রস্তুতি চলছে রাজধানীসহ সারা দেশে। নববর্ষকে ঘিরে পরিকল্পনা ছিল সদ্য প্রয়াত কবি সাযযাদ কাদিরের। কিন্তু পয়লা বৈশাখের মাত্র সাত দিন আগে তিনি বিদায় নিলেন পৃথিবী থেকে।
গত ৪ এপ্রিল এই কবি ও সাংবাদিক ফেসবুকে স্ট্যাস্টাসে লিখেছিলেন, ‘এবারের ১লা বৈশাখ কাটাবো আড্ডা, কবিতা, গান, আবৃত্তিতে... রাজধানীর উপকণ্ঠ বেরাইদ-এ...’। এমনকি পোস্টের একটি কমেন্টসে তিনি লিখেন, ‘এবার আষাঢ়ে যাওয়ার ইচ্ছে ছিল রাজশাহীতে।’
কিন্তু কবির এই দুটো ইচ্ছাই অপূর্ণ রয়ে গেল। ফেসবুকে পোস্ট দেওয়ার মাত্র দুই দিন পরেই বৃহস্পতিবার দুপুর ২টায় রাজধানীর জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে মারা যান তিনি।
কবি সাযযাদ কাদিরের বৈশাখপ্রীতি অনেক পুরনো। ঠিক দুই বছর আগে এমনই বৈশাখে কবি অনলাইন নিউজপোর্টাল রাইজিংবিডিতে এক নিবন্ধে লিখেছিলেন, ‘বৈশাখ এলে মনে পড়ে আমার সাত-আট বছর বয়সের জীবনটাকে। ওই জীবনে আমাদের বাড়ির, গাঁয়ের বাড়ির আর মামার বাড়ির সবাই ছিলেন আমার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। তাঁদের আদেশ-উপদেশ মেনে চলার পাশাপাশি তাঁদের নজর এড়িয়েও চলেছি অনেক। সেই এড়িয়ে চলার জীবনটাতেই ছিল যত মজা’।
নিজের ছোটবেলার বৈশাখ সর্ম্পকে এই কবি আরো লিখেছেন, ‘আমাদের বাড়ি টাঙ্গাইল শহরে, গাঁয়ের বাড়ি দেলদুয়ারে, মামার বাড়ি মিরের বেতকায়। শহর থেকে দক্ষিণ-পূবে দেলদুয়ার ১২ কিলোমিটার দূরে। মিরের বেতকাও দক্ষিণ-পূবে। তবে শহরের উপকণ্ঠে, দূরত্ব মাত্র তিন কিলোমিটার। তখনও যমুনা নদীকে শাসাতে বন্যারক্ষা বাঁধ হয়নি, আমরা ছ’মাস শুকনায় আর ছ’মাস ডুবে থাকতাম। দেলদুয়ার-মিরের বেতকা শুকনাকালে যেতাম টমটমে, আর বর্ষা কালে যেতাম নৌকায়। আমাদের ঘুম-ঘুম শহরের পাশ দিয়ে বয়ে যেত লৌহজঙ্গ নদী। বর্ষায় ফুলেফেঁপে উঠলেও বৈশাখে সত্যিই হাঁটুজল নিয়ে হয়ে পড়ত আঁকেবাঁকে বয়ে চলা ছোট নদী।