মিসরে তিন মাসের জরুরি অবস্থা জারির ঘোষণা দিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ আল-সিসি।সব ধরনের আইনগত ও সাংবিধানিক পদক্ষেপের পরই জরুরি অবস্থা বলবৎ হবে।জরুরি অবস্থায় দেশটির কর্তৃপক্ষ বিনা পরোয়ানায় সন্দেহভাজন ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করতে পারবে। পরোয়ানা ছাড়াই সন্দেহজনক বাড়িতে তল্লাশি চালাতে পারবে
দেশটির কপটিক খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের দুটি গির্জায় গতকাল রোববার আত্মঘাতী বোমা হামলায় কমপক্ষে ৪৪ জন নিহত হওয়ার পর জরুরি অবস্থা জারির ঘোষণা এল। ওই হামলায় শতাধিক মানুষ আহত হয়েছেন।
আজ সোমবার বিবিসি অনলাইনের প্রতিবেদনে জানানো হয়, জরুরি অবস্থা বলবৎ করার ক্ষেত্রে মিসরের পার্লামেন্টের অনুমোদন নিতে হবে। পার্লামেন্টে সিসির প্রয়োজনীয় সংখ্যাগরিষ্ঠতা আছে। দুই গির্জায় হামলার পর এ নিয়ে জাতীয় প্রতিরক্ষা কাউন্সিলের সঙ্গে বৈঠক করেন সিসি। এরপর প্রেসিডেন্টের ভবনে ভাষণ দেন।সিসি সতর্ক করে বলেন, জঙ্গিদের বিরুদ্ধে লড়াই দীর্ঘ ও বেদনাদায়ক হতে পারে।
জরুরি অবস্থা জারির ঘোষণার আগে সারা দেশে সেনা মোতায়েনের আদেশ দেন সিসি। গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামোর সুরক্ষার জন্য এই আদেশ দেন তিনি।
দেশটির উত্তরের দুই শহর তান্তা ও আলেকজান্দ্রিয়ায় চালানো দুই হামলার দায় স্বীকার করেছে জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেট (আইএস)।আইএসের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, তাদের যোদ্ধারাই তান্তা ও আলেকজান্দ্রিয়ার দুই গির্জায় হামলা চালিয়েছে।
মিসরের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, তান্তা শহরে নিহত হয়েছেন ২৭ জন। আহত হয়েছেন কমপক্ষে ৭৮ জন। অন্যদিকে, আলেকজান্দ্রিয়ায় নিহত হয়েছেন ১৭ জন। আহত হয়েছেন ৪০ জন।আগেও আইএসের হামলার শিকার হয়েছে কপটিক সম্প্রদায়। গত বছরের ডিসেম্বরে কায়রোয় কপটিক সম্প্রদায়ের গির্জায় আত্মঘাতী হামলা চালিয়ে ২৫ জনকে হত্যা করে জঙ্গিগোষ্ঠীটি। তারা আরও হামলার হুমকি দিয়েছিল।
কপটিক খ্রিষ্টানরা মিসরের জনসংখ্যার প্রায় ১০ শতাংশ। কপটিকরা মিসরের খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের মধ্যে সবচেয়ে বড় গোষ্ঠী। তারা দীর্ঘদিন ধরেই দেশের বিচার বিভাগ, বিশ্ববিদ্যালয়, পুলিশসহ প্রশাসনে নিয়োগের ক্ষেত্রে বৈষম্যের অভিযোগ করে আসছে।
মিসরের জঙ্গি ও ইসলামপন্থীদের অভিযোগ, কপটিকরা ইসলামপন্থী প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুরসিকে উৎখাতে সামরিক বাহিনীর কাজে সমর্থন দিয়েছিল।