জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে গতকাল বুধবার ১৯ এপ্রিল প্রথমবারের মতো সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হলো। রাষ্ট্রপতি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর মো. আবদুল হামিদ সমাবর্তন অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন। তিনি বলেন, সমাবর্তন বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কার্যক্রমের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ । এ স্মরণীয় অনুষ্ঠানের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সাফল্য ও অর্জনকে যেমন আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি দেয়া হয় তেমনি তাদের দায়িত্বও অর্পণ করা হয় । সে দায়িত্ব পরিবার, সমাজ ও দেশের প্রতি । আমার বিশ্বাস, জাতীয় কবির কালজয়ী আহবান ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রাজুয়েটগণ তাদের মেধা, দেশপ্রেম,মানবিক মূল্যবোধ ও সৃজনশীলতা দিয়ে ভবিষ্যতে দেশ ও জাতির কল্যাণে কাজ করবে,জাতির পিতার স্বপ্নের “সোনার বাংলা” বাস্তবায়নে সচেষ্ট থাকবে ।
সমাবর্তনে ১ হাজার ৩৯৯ জন গ্র্যাজুয়েট অংশগ্রহণ করেন। এ ছাড়া সমাবর্তনে ২৯ শিক্ষার্থীকে ৩২টি স্বর্ণপদক দেওয়া হয়। সমাবর্তনের শুরুতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মোহীত উল আলম। তিনি বলেন,বিশ্ববিদ্যালয় শুভবুদ্ধি ও মুক্তবুদ্ধির মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের নীতি নৈতিকতার শিক্ষা দেয় । জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার পাশাপাশি সাহিত্য-সংস্কৃতি ও নজরুল চর্চায় অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে ।
সমাবর্তন বক্তা ইমেরিটাস প্রফেসর ড. রফিকুল ইসলাম বলেন,স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি বঙ্গবন্ধু ১৯৭২ সালের মে মাসে বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামকে সপরিবারে কলকাতা থেকে ঢাকায় আনয়ন এবং রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় কবিকে অধিষ্ঠিত করেন ।
বিশেষ অতিথি ইউজিসি ‘র চেয়ারম্যান প্রফেসর আবদুল মান্নান বলেন,সমাবর্তন যেকোন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ ও আনন্দের দিন। সেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্মৃতিময় ছাত্রজীবন শেষে কর্মক্ষেত্রে প্রবেশের পূর্বে সর্বশ্রেষ্ঠ অর্জন রাষ্ট্রপতির হাত থেকে গর্বের সার্টিফিকেট পেয়ে থাকে । আনন্দ আর আবেগ যেন মনের গভীরে প্রবেশ করে ।
সমাবর্তন অনুষ্ঠানটি হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবন সংলগ্ন পুরাতন খেলার মাঠে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫ম ব্যাচের শিক্ষার্থী সুলতান মাহমুদ বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম সমাবর্তনে অংশগ্রহন করতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করছি। ক্যাম্পাসে থাকতেই আমরা সমাবর্তন পাচ্ছি এটা যেন বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের সেরা প্রাপ্তি । আমরা সত্যিই অনেক গর্বিত ।
সন্ধ্যায় ‘শিরোনামহীন’ ব্যাণ্ড ও সুবীর নন্দীর অংশগ্রহনে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে সমাবর্তন অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘোষণা করা হয় ।
সমাবর্তন অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) কৃষিবিদ ডক্টর মো. হুমায়ুন কবীর এবং নাট্যকলা ও পরিবেশনা বিদ্যা বিভাগের প্রভাষক মাজহারুল হোসেন তোকদার ।
উল্লেখ্য, ২০০৬ সালের ৯ মে, কবি নজরুলের স্মৃতি বিজড়িত ময়মনসিংহ শহরের অদূরে ত্রিশালে প্রতিষ্ঠা করা হয় জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়। এ শিক্ষালয়টি দেখতে দেখতে ১১ বছরে পা রাখলো। বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পর আজ ১৯ এপ্রিল, ২০১৭ প্রথম সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হয়।
সানবিডি/জাককানইবি/আজিজার/এসএস