যৌতুকের টাকা না পেয়ে স্বেচ্ছায় তালাক দিতে রাজি না হওয়ায় স্ত্রীকে এসিড মেরে হত্যার হুমকি দিয়েছেন পুলিশের সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) মো. বিল্লাল হোসেন। এতে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন বিল্লাল হোসেনের স্ত্রী জামালপুর সরকারি আশেক মাহমুদ কলেজের মাস্টার্সের ছাত্রী সহিদাতুজ জান্নাত। তিনি নিরাপত্তা চেয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে লিখিতভাবে আবেদন জানিয়েছেন।
জান্নাতের বাড়ি জামালপুর জেলার দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার সানন্দবাড়ী এলাকায়। আর বিল্লাল হোসেনের বাড়ি শেরপুর সদর উপজেলার হালগড়া গ্রামে। জানা গেছে, ২০১৫ সালে একটি অনুষ্ঠানে জামালপুর পুলিশ লাইন্সে কর্মরত পুলিশ কনস্টেবল বিল্লাল হোসেনের সঙ্গে জান্নাতের পরিচয় হয়। পরে ফোনের মাধ্যমে তার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলেন এবং বিয়ের প্রস্তাব দেন বিল্লাল। গত বছরের অক্টোবর মাসে বিল্লাল হোসেন এএসআই পদে পদোন্নতি পান। পরে জান্নাতকে বিয়ে করে জামালপুর শহরে বাসা ভাড়া নিয়ে থাকার প্রস্তাব দেন। মাস্টার্স পরীক্ষার কথা বলে সময় চাইলে বিল্লাল খুব শিগগির বদলি হয়ে যাবেন বলে তাকে জানান। এক পর্যায়ে তিনি মেয়েটির বাড়িতে গিয়ে তার স্বজনদের কাছে বিয়ের প্রস্তাব দেন। এতে উভয় পক্ষের সম্মতিতে গত বছরের ৫ নভেম্বর ছয় লাখ টাকার দেনমোহর উল্লেখ করে তাদের দুজনের বিয়ে হয়। বিয়ের চারদিন পর বিল্লাল হোসেন তার স্ত্রীকে পাঁচ লাখ টাকা যৌতুক এনে দিতে বলেন এবং ১০ দিনের মধ্যে না দিতে পারলে তাকে তালাক দেয়ার হুমকি দেন। পরে বিল্লাল হোসেনের বিরুদ্ধে যৌতুক নিরোধ আইনে জামালপুর আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন জান্নাত।
পুলিশের চাকরি হারানোর ভয়ে গত ৫ জানুয়ারি বিল্লাল হোসেন আদালতে হাজির হয়ে কখনও যৌতুক দাবি করবে না বলে মুচলেকা দিয়ে জামিনে মুক্ত হন। কিছুদিন পর স্বেচ্ছায় তালাক দেয়ার জন্য চাপ দিতে শুরু করেন বিল্লাল হোসেন। কিন্তু মেয়েটি এতে রাজি না হওয়ায় তাকে এসিড মেরে অথবা গাড়ি চাপা দিয়ে হত্যার হুমকি দেন।
সহিদাতুজ জান্নাত এ প্রতিবেদককে বলেন, 'আমি আমার স্বামীকে ভালোবাসি। তার সঙ্গে আমি সংসার করতে চাই। তাই বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটলে আমার আত্মহত্যা করা ছাড়া আর কোনো রাস্তা খোলা থাকবে না।' অভিযুক্ত এএসআই মো. বিল্লাল হোসেন বলেন, 'সহিদাতুজ জান্নাত আমার স্ত্রী। তাকে আমি নির্যাতন করি নাই। কোনো হুমকিও দেই নাই। আমি তার কাছে যৌতুকের টাকার জন্য চাপ দেই নাই। আমাকে হয়রানি করার জন্য মিথ্যা অভিযোগে আমার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে।'
এএসআই বিল্লাল হোসেন বলেন, 'আমি আদালতে মুচলেকা দিয়ে তাকে স্ত্রীর অধিকার দিয়েছি। আমি তার সঙ্গে এসব বিষয়ে নিয়ে আপসে থাকার দৃষ্টিভঙ্গিতে কথা বলতে চাইলে সে (জান্নাত) রাজি হয় না। সে (জান্নাত) আসলে আমাকে হয়রানি করার জন্যই এসব করছে।'