চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জে জঙ্গি আস্তানা সন্দেহে ঘিরে রাখা বাড়িটিতে দ্বিতীয় দিনের মতো অভিযান শুরু করেছে সোয়াট ও কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের সদস্যরা। অভিযানের শুরুর আগ মুহূর্তে বেশ কয়েক রাউন্ড গুলির শব্দ শোনা গেছে।
বৃহস্পতিবার সকাল সোয়া নয়টার দিকে গুলির শব্দ শোনা যায়। তবে বাড়ির ভেতর থেকে এসব গুলি করা হয়েছে নাকি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা গুলি করেছেন বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
শিবগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হাবিবুল ইসলাম বলেন, অভিযানের জন্য অ্যাম্বুলেন্স ও ফায়ার সার্ভিস প্রস্তুত করা হয়েছে। সোয়াট সদস্য ঘটনাস্থলে আছেন। অন্য একটি দলও রওনা হয়ে পথে রয়েছে। তারাও কিছুক্ষণের মধ্যেই পৌঁছে যাবে।
অভিযানকে ঘিরে বাড়িটির চারপাশে বিপুল সংখ্যক অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়। এছাড়া রয়েছে মহিলা পুলিশের একটা টিমও। সংবাদ সংগ্রহের জন্য ভোর থেকেই গণমাধ্যম কর্মীরা সেখানে অবস্থান করছেন।
ঘটনাস্থলে থাকা ঢাকাটাইমসের প্রতিনিধি জহুরুল ইসলাম জানান, বাড়িটির আশপাশে কাউকে যেতে দেয়া হচ্ছে না। সংবাদকর্মীরা বাড়িটির ৪০০ মিটার দূরে অবস্থান করছেন। ভেতরের আসল চিত্র তারা পাচ্ছেন না। তাছাড়া আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকেও তাদের বিস্তারিত কিছু জানানো হয়নি। ভেতরে আসলে কতজন আছে তার সঠিক কোনো তথ্য জানাতে পারেনি কেউ।
গতকাল সকালে কানসাট ইউনিয়নের আব্বাস বাজার এলাকার তিনটি বাড়ি ঘেরাও করে কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের সদস্যরা। তবে সেখানে কোনো জঙ্গির সন্ধান পায়নি তারা। পরে চককীর্তি ইউনিয়নের ত্রিমোহী চাতরা বাজারের শিবগনগর এলাকায় অন্য একটি বাড়ি ঘেরাও করে তল্লাশি চালাতে যায় তারা। এ সময় বাড়িটি থেকে পুলিশকে লক্ষ্য করে গ্রেনেড ও গুলি ছোঁড়া হয়। জবাবে কাউন্টার টেরোরিজমের সদস্যরা কয়েক রাউন্ড গুলি ছোড়ে। বিকালে ঢাকা থেকে পুলিশের বিশেষায়িত সোয়াট টিম ঘটনাস্থলে আসলে সন্ধ্যার পর সেখানে অভিযান শুরু হয়। চলে প্রায় দুই ঘণ্টা চলা ওই অভিযানের মধ্যে ওই আস্তানার ভেতর থেকে মুহুর্মুহু গুলির শব্দ শোনা যায়। বিদ্যুতের সংযোগ কেটে দেয়ায় বাড়িটির ভেতরের অবস্থাও জানতে সমস্যা হওয়ায় রাতের মধ্যে অভিযান স্থগিত করার ঘোষণা দেন সিটিটিসি’র স্পেশাল অ্যাকশন গ্রুপের (এসএজি) উপ-পুলিশ কমিশনার প্রলয় কুমার জোয়ার্দার। এ সময় তিনি বলেন, ‘বৃহস্পতিবার ভোরের আলো ফোটার সঙ্গে সঙ্গে অভিযান আবারও শুরু করা হবে।’
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, ‘আমরা এখনও ভেতরে প্রবেশ করতে পারিনি। ফলে ভেতরে কয়জন আছে, তা বলতে পারছি না।’ তবে ভেতরে যারা আছেন তারা জেএমবির সদস্য বলে ধারণা করা হচ্ছে।
জঙ্গি আস্তানা সন্দেহে ঘিরে রাখা বাড়িটির ভেতর আবু নামে এক জঙ্গি ও তার স্ত্রীসহ কয়েকজন থাকতে পারে বলে ধারণা করছেন সিটিটিসির সদস্যদের। একটি আমবাগানের ভেতরে বাড়িটির অবস্থান। সাধারণ লোকজনের চলাফেরা নিয়ন্ত্রণের জন্য আশপাশের এলাকায় জারি করা ১৪৪ ধারা এখনো বলবৎ আছে।