ভুঁড়ি হয়েছে, আর তা নিয়ে অস্বস্তি নেই—এমন ব্যক্তি মনে হয় খুঁজে পাওয়া যাবে না কোথাও। হাঁটাচলা, বসা এমনকি শোয়া বা খুব পছন্দের কাজ খাওয়ার সময় পর্যন্ত নানা ধরনের সমস্যা হয় এই ভুঁড়ির জন্য। ভুঁড়ি নিয়ে অস্বস্তিতে আছি—এমন অভিযোগ যখন সবার মুখে মুখে, তখন অধুনার এই আয়োজন ভুঁড়ি কমানোর জন্যই।
বেড়ে যাওয়া বা একটু একটু করে বাড়তে শুরু করা ভুঁড়ির ওপর দখল আনার আছে নানা বুদ্ধিও। ঢাকার বারডেম জেনারেল হাসপাতালের প্রধান পুষ্টিবিদ শামসুন্নাহার নাহিদ বলেন, ‘প্রয়োজনের অতিরিক্ত শর্করা বেশি গ্রহণ করলেই মানুষের ভুঁড়ি হয়। ভুঁড়ি নিয়ন্ত্রণ করতে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে শর্করা। সে ক্ষেত্রে শর্করা যত কমিয়ে আনা যাবে, তত সুবিধা। আমাদের প্রতিদিনের খাবারের প্লেটকে দুই ভাগে ভাগ করতে হবে। তাতে এক ভাগ থাকবে সবজি আর সালাদ। বাকি অর্ধেককে করতে হবে আরও তিন ভাগ। তাতে এক ভাগ থাকবে শর্করা। আর বাকি দুই ভাগ আমিষ (মাছ, মাংস, ডিম, ডাল)।’
খাদ্যাভ্যাসের জন্যই অনেকের মধ্যে অতিরিক্ত শর্করা নেওয়ার প্রবণতা থাকে। সে ক্ষেত্রে সকালে শর্করা খেতে পারবেন বেশি। আর রাতে নিতে হবে খুব কম। তাহলেই কিন্তু ভুঁড়ির হাত থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে।
শর্করা আছে, যেমন রুটি, পাউরুটি, বনরুটি, ভাত ইত্যাদি খাবারে যাঁদের নির্ভরতা খুব বেশি, তাঁদের কী হবে তাহলে? বা খুব বেশি খেতে ভালোবাসা লোক যখন আগেই তৈরি করে ফেলেছেন বিশাল এক ভুঁড়ি, তাঁর কী করণীয়?
তাঁদের জন্যও উপায় আছে। দিলেন শামসুন্নাহার নাহিদ নিজেই। বললেন, বড় হয়ে যাওয়া ভুঁড়ি কমাতে কিছু নিয়ম মানতে হবে। সবার আগে জেনে নিতে হবে সারা দিনে একজন মানুষ কতটা শর্করা নিতে পারেন। এবার যেহেতু তিনি আগেই ভুঁড়ি বানিয়ে ফেলেছেন, তাই এখন কিন্তু একটু সচেতন হতে হবে। যতটা শর্করা তিনি নিতে পারেন, তার থেকে কম নিতে হবে। এ ছাড়া খাবারের পরপরই যদি কেউ বসে বা শুয়ে থাকেন, তাহলেও কিন্তু ভুঁড়ি হয়। সে ক্ষেত্রে খাবারের পরপর শুয়ে-বসে থাকা যাবে না একেবারেই। হালকা হাঁটাচলা করতে হবে। এ ছাড়া ভুঁড়ি কমাতে ফ্রি হ্যান্ড এক্সারসাইজ, ইয়োগা, অ্যারোবিক্স, স্কিপিং, সাঁতার ইত্যাদি ব্যায়ামও করতে পারেন। স্কিপিং পুরো শরীরের ব্যায়াম আর একসঙ্গে অনেকটা ক্যালরি বার্ন করে বলে স্কিপিং বেশ উপকারী হবে। অনেকের ধারণা, সাইকেল চালালে ভুঁড়ি কমতে পারে। সেটা হওয়ার কিন্তু সুযোগ নেই।’
এ ছাড়া ডিটক্স পানি পান করলেও কমে যাবে ভুঁড়িসহ শরীরের বাড়তি ওজন। এ লিফটের বদলে সিঁড়ি ব্যবহার, চিনিযুক্ত খাবার না খাওয়া, ভাজাপোড়া বা ফাস্ট ফুডে অভ্যস্ত না হয়ে ফল ও চিনি ছাড়া ফলের রসের মতো কিছু সাধারণ পরিবর্তন সুস্থ ও সুন্দর জীবন গড়ে তুলতে পারে।