ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এফবিসিসিআই) ২০১৭-১৯ মেয়াদের নির্বাচনে সম্মিলিত গণতান্ত্রিক পরিষদ থেকে ১৬ জন এবং ব্যবসায়ী ঐক্য ফোরাম থেকে দুই জন প্রার্থী বিজয়ী হয়েছেন। গতকাল রবিবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রের সেলিব্রেটি হলে সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত এ ভোট গ্রহণ চলে। এফবিসিসিআই’র ১ হাজার ৯০৫ জন ভোটারের মধ্যে নির্বাচনে ১ হাজার ৬৬৯ জন ভোটার ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন।
ভোট গণনা শেষে গতকাল রাত ১১টার পর ফলাফল ঘোষণা করেন নির্বাচন বোর্ডের চেয়ারম্যান সংসদ সদস্য অধ্যক্ষ মো. আলী আশরাফ। এবারের নির্বাচনে অ্যাসোসিয়েশন গ্রুপ থেকে এ বছর ব্যবসায়ী ঐক্য ফোরাম ও সম্মিলিত গণতান্ত্রিক পরিষদ নামে দুটি পৃথক প্যানেলে ৩৬ জন পরিচালক প্রার্থী নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। সম্মিলিত গণতান্ত্রিক পরিষদ থেকে নির্বাচনে অংশ নেয়া ১৮ জনের মধ্যে ১০ জনই বর্তমান মেয়াদের পরিচালক। প্যানেলটির লিডার হিসেবে রয়েছেন শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন। আর ব্যবসায়ী ঐক্য ফোরামের সমন্বয়কারী কাজী ইফতেখার হোসেন বাবলু।
ফলাফলে জানা গেছে, নির্বাচনে সর্বোচ্চ ১ হাজার ২০৬টি ভোট পেয়েছেন খন্দকার রুহুল আমিন। দ্বিতীয় স্থানে থাকা আবু মোতালেব পেয়েছেন ১ হাজার ১৯৫ ভোট। তৃতীয় স্থানে থাকা নাজিম উদ্দিন পেয়েছেন ১ হাজার ১৪৫ ভোট। ১ হাজার ১৪১ ভোট পেয়ে চতুর্থ স্থান অধিকার করেছেন শফিকুল ইসলাম ভরসা। পঞ্চম স্থানে থাকা মুনতাকিম আশরাফ পেয়েছেন ১ হাজার ১০৫ ভোট। আর ১ হাজার ৭৭ ভোট পেয়ে ৬ষ্ঠ স্থান দখল করেছেন শমী কায়সার।
এছাড়া নির্বাচিতদের মধ্যে রয়েছেন- রাশেদুল হোসাইন চৌধুরী রনি (১০৫২), হাবিব উল্লা ডন (১০৩৪),সাফকাত হায়দার (১০১৭), ড. কাজী এরতেজা হাসান (১০০১), হেলেনা জাহাঙ্গীর (৯৮৪), আমজাদ হোসাইন (৯৭৭), নিজামুদ্দিন রাজেশ (৯৭৬), হাফেজ হারুন (৯৭৪), এসএম জাহাঙ্গীর হোসাইন (৯৬৫), আবুল আয়েছ খান (৯৬২), আবু নাছের (৯২৮) এবং খন্দকার মঈনুর রহমান জুয়েল (৯২৩)।
এদের মধ্যে ন্যাশনাল অ্যাসোসিয়েশন অব স্মল অ্যান্ড কটেজ ইন্ডাস্ট্রিজ অব বাংলাদেশ (নাসিব)-এর হেলেনা জাহাঙ্গীর এবং ল্যান্ড ডেভেলপারস অ্যাসোসিয়েশনের ড. কাজী এরতেজা হাসান ব্যবসায়ী ঐক্য ফোরামের ব্যানারে নির্বাচন করে জয় লাভ করেছেন।
এছাড়া চেম্বার গ্রুপ থেকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিতরা হলেন, বাগেরহাট চেম্বারের হাসিনা নেওয়াজ, বরিশাল চেম্বারের মো. নিজাম উদ্দিন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া চেম্বারের আজিজুল হক, চুয়াডাঙ্গা চেম্বারের দীলিপ কুমার আগারওয়ালা, কুমিল্লা চেম্বারের মাসুদ পারভেজ খান ইমরান, ফেনী চেম্বারের এ কে এন শাহেদ রেজা, গাজীপুর চেম্বারের মো. আনোয়ার শাদাত সরকার, গোপালগঞ্জ চেম্বারের শেখ ফজলে ফাহিম, জামালপুর চেম্বারের মো. রেজাউল করিম রঞ্জু, কিশোরগঞ্জ চেম্বারের গাজী গোলাম আশরিয়া, লালমনিরহাট চেম্বারের শেখ আব্দুল হামিদ, মানিকগঞ্জ চেম্বারের তাবারুকুল তোদাদ্দেক হোসেন খান টিটু, মুন্সিগঞ্জ চেম্বারের মো. কহিনুর ইসলাম, নরসিংদী চেম্বারের প্রবীর কুমার সাহা, নোয়াখালি চেম্বারের আতাউর রহমান ভুঁইয়া, রাঙামাটি চেম্বারের মো. বজলুল রহমান, সুনামগঞ্জ চেম্বারের খায়রুল হুদা চপল টাংগাইল চেম্বারের আবুল কাশেম আহমেদ।
নিয়মানুযায়ী, এবার এফবিসিসিআইর ৬০ পরিচালক পদের মধ্যে চেম্বার ও অ্যাসোসিয়েশন গ্রুপ থেকে ১৮টি করে মোট ৩৬টি পরিচালক পদে সরাসরি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। বাকি ২৪টি পদে সরকার মনোনয়ন দেবে, যার ১২টি চেম্বার ও ১২টি অ্যাসোসিয়েশন থেকে। তবে সমঝোতার মাধ্যমে চেম্বার গ্রুপ থেকে সরকার সমর্থক প্যানেলের ১৮ প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। ফলে নির্বাচনে ৬০ পরিচালক পদের মধ্যে ১৮টি পদে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়।
আগামী ১৬ মে পরিচালকদের ভোটে এফবিসিসিআই’র সভাপতি, প্রথম সহ-সভাপতি ও সহ-সভাপতি নির্বাচিত হবেন। ১৭ মে পরিচালক পদের বিপরীতে আপিল করা যাবে। আর ২০ মে ঘোষণা করা হবে চূড়ান্ত ফলাফল।