বেশ কিছুদিন ধরেই ঢাকাই চলচ্চিত্রে অস্থির অবস্থা বিরাজ করছে। একের পর তৈরী হচ্ছে সমস্যা। একটি সমস্যার সমাধান হতে না হতেই নতুন একটি সম্যসার জন্ম হচ্ছে। এভাবেই চলছে গত দেড় মাস ধরে।
গত মাসের শুরুর দিকে চিত্রনায়ক শাকিব খান চলচ্চিত্র পরিচালক ও কলাকুশলীদের ছোট করে কথা বলায় পরিচালক সমিতি থেকে উকিল নোটিশ পাঠায়। এরপর পরিচালক সমিতিসহ চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্ট ১৩ সংগঠন শাকিব খানকে বয়কট করে। পরবর্তীতে শাকিব ক্ষমা চাওয়ায় বয়কট তুলে নেয় সংগঠনগুলো। এরপর চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচনের দিন রাতে শাকিব খানের ওপর হামলা হয়। নির্বাচনের আপিল বোর্ডে ভোট গণনায় ত্রুটি নিয়ে ওমর সানির অভিযোগের পর এর সুরাহা, চলচ্চিত্র প্রযোজক ও অভিনেতা রমিজ উদ্দিনের আবেদন অনুযায়ী আদালত পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত নতুন কমিটির কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর না করার জন্য অন্তবর্তিকালীন অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা জারি করেন। বিষয়টি এখনো সে অবস্থায়ই রয়েছে।
এসব ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই জনপ্রিয় চিত্রনায়ক বাপ্পারাজের কাছে পরিচালক সমিতি নোটিশ পাঠিয়েছে। নোটিশে বলা হয়েছে, একজন চলচ্চিত্র পরিচালক হিসেবে আপনি পরিচালক সমিতিকে হেয় প্রতিপন্ন করে ‘দৈনিক কালেরকণ্ঠ’ সহ বিভিন্ন অনলাইন পত্রিকায় যে সাক্ষাৎকার প্রদান করেছেন, বাংলাদেশ চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতি মনে করে, উল্লেখিত সাক্ষাৎকারে আপনি সমিতিকে হেয় প্রতিপন্ন এবং সমিতির শৃঙ্খলা ভঙ্গ করেছেন। সমিতিকে হেয় প্রতিপন্ন করে আপনি যে সাক্ষাৎকার দিয়েছেন, সে বিষয়ে আপনি গণমাধ্যমে অদ্যবধি কোনো প্রতিবাদলিপি প্রেরণ করেননি বা দুঃখ প্রকাশও করেননি। তাই সমিতি মনে করে আপনার সাক্ষাৎকারের বক্তব্যের বিষয়টি আপনি ইচ্ছাকৃতভাবে প্রদান করেছেন।
এমতাবস্থায় গঠনতন্ত্রের ৫ (ক) ধারা মোতাবেক কেন আপনার সদস্যপদ বাতিল করা হবে না পত্রপ্রাপ্তির ৭ কার্যদিবসের মধ্যে উল্লেখিত বিষয়ে সমিতি বরাবর সন্তোষজনক ব্যাখ্যা প্রদানের জন্য অনুরোধ করা হলো।’
এ সব বিষয় নিয়ে কী ভাবছেন রাজ পরিবার? এমন প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে কথা হয় নায়ক রাজের ছোট ছেলে চিত্রনায়ক সম্রাটের সঙ্গে। তিনি রাইজিংবিডিকে জানান, চলমান বিষয় নিয়ে বিব্রত রাজ পরিবার। তারা বিএফডিসির সকল সংগঠন থেকে নিজেদের গুটিয়ে নেওয়ার কথা ভাবছেন।
সম্রাট বলেন, ‘আমি ভাবছি, প্রযোজক সমিতিতে আমার সদস্যপদ রয়েছে। সেটা সারেন্ডার করে আসব। এ ছাড়া শিল্পী সমিতিতেও সারেন্ডার করব। এসবে এখন আর আগ্রহ নেই। বিএফডিসির ভেতরে পুলিশ, মারামারি এর আগে কখনো হয়নি। আমরা শিল্পী মানুষ সম্মানের সাথে সম্মিলিতভাবে কাজ করেছি।’
তিনি আরো বলেন, ‘আমার ব্যক্তিগত মতামত হলো-আমি একজন শিল্পী। চলচ্চিত্র ক্যারিয়ারে আমার দশ বছর পেরিয়ে গেছে। ভোটের দিন ভোট দিতে গেলাম- গেটে পুলিশ আমাদের আটকে দিল। পুলিশ চিত্রনায়ক বাপ্পারাজ, সম্রাটকে চিনল না। আমরাই যদি এফডিসিতে ঢুকতে না পারি তা হলে কারা ঢুকবে? রাজ্জাক সাহেবের ছেলেরাও যদি এফডিসিতে স্বাভাবিকভাবে ঢুকতে না পারে তা হলে এই ইন্ডাস্ট্রিতে রাজ পরিবারের থাকার প্রয়োজন নেই। আমরা সুন্দর মতো চলে আসতে চাই। আমাদের ইজ্জত আমাদের জায়গায়।’
তিনি বলেন, ‘খুব খারাপ লাগছে বলেই চলে আসতে চাই। আমরা ঝগড়া-ঝাটি করতেও পারব না, কোনোদিন করিওনি, কারো সাথে মনোমালিন্য হয়নি। যতদিন কাজ করেছি সবার সঙ্গে মিলে মিশে আপন মনে করে করেছি।’