ভিক্টোরিয়া লিডস কে, জানেন কি? এতদিনে নিশ্চয়ই জেনে গিয়েছেন, ওটা ‘বেওয়াচ’এ প্রিয়াঙ্কা চোপড়ার চরিত্র। আর এতদিনে নিশ্চয়ই এটাও জেনে গিয়েছেন, কান চলচ্চিত্র উৎসবে গোটা বলিউড একদিকে আর নিউইয়র্কে একা প্রিয়াঙ্কা।
যেভাবে একের পর এক প্রমোশনাল ইভেন্টে আলোচিত হচ্ছেন প্রিয়াঙ্কা, তাতে একটা বিষয় স্পষ্ট-কান প্রিয়াঙ্কাকে টানছে না! আর তার পোশাকও বলিউডের সব কান যাত্রীদের চমকে দেবে।
ঝলমলে সিলভার ড্রেসে সোমবারই নিউইয়র্কে দেখা গেল প্রিয়াঙ্কাকে। ‘বেওয়াচ’এর স্ক্রিনিংয়ে। প্রাক্তন মিস ওয়ার্ল্ড প্রিয়াঙ্কা মিনি ফ্রকের সঙ্গে লেয়ার্ড মিলিটারি স্টাইল জ্যাকেটে নজর কাড়লেন। অ্যাকসেসরি হিসেবে বেছে নিলেন রিং এবং হোয়াইট চোকার। মেকআপ? স্মোকি আইজ এবং ন্যুড মভ লিপ। ভাবছেন শুধু মুখ দেখিয়েই চলে এলেন প্রিয়াঙ্কা? একেবারেই না। ইনস্টাগ্রামে একটা ভিডিও পোস্ট করেছিলেন তিনি। লিখেছিলেন, ‘ক্যাচ মি ইফ ইউ ক্যান! অ্যাট আ থিয়েটার নিয়ার ইউ’!
লোকজন বলাবলি করছে, পামেলা অ্যান্ডারসনকেও হার মানাতে পারেন প্রিয়াঙ্কা। সম্প্রতি বিকিনি পরে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন কিনা! বিদেশি সংবাদমাধ্যমে আবার চর্চা হচ্ছে নায়িকার ‘ক্লিভেজ’ নিয়ে! সুপার মডেল জিজি হাদিদ আমেরিকান মিউজিক অ্যাওয়ার্ডসে ছবার পোশাক বদলে ছিলেন। দিন দুয়েক আগে ভেনেসা হাজেন্স আটবার পোশাক বদলালেন বিলবোর্ডস মিউজিক অ্যাওয়ার্ডসে। প্রিয়াঙ্কা একদিনে তিন-তিনটে পোশাক বদলে ‘বেওয়াচ’এর প্রোমোশনে গেলেন। যা দেখে বিদেশি সংবাদমাধ্যম হাঁ!
নিউইয়র্কের রাস্তায় ‘বেওয়াচ’এর পোস্টার। দীপিকা পাড়ুকোনের ‘ট্রিপল এক্স: রিটার্ন অফ জ্যান্ডার কেজ’এর সময়ও পোস্টার পড়েছিল সেখানে। টুইট চালাচালি হয়েছিল বলিউডে। কিন্তু দীপিকা এখন ব্যস্ত কান’এ। সেখানে গিয়ে বলছেনও, যে প্রযোজক-পরিচালকদের সঙ্গে ‘র্যাপো’ করতেই গিয়েছেন! এদিকে প্রিয়াঙ্কাকে দেখুন। র্যাপো-ট্যাপোর বালাই নেই! ডোয়েন জনসনের সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠতা নিয়ে আলোচনা দিয়েই চোখ কপালে তুলে দিচ্ছেন অন্যদের। একাই একশো!
দীপিকার এবারের কান’এ মার্চেসা নত্তে গাউন নজর কেড়েছে কিছুটা হলেও। ফ্রস্টি ব্লু রঙের সূক্ষ্ম এমব্রয়ডারি করা ঘেরওয়ালা গাউন পরে ঐশ্বর্যা রাই বচ্চনকেও ডিজনি রাজকন্যাদের মতো দেখাচ্ছিল বটে। সোনম কাপুরও নজর কাড়ছেন।
কিন্তু, ওদিকে প্রিয়াঙ্কাও তার পোশাকে কাত করছেন বইকি! নিউইয়র্ক মানে একটা ব্যাপার তো বটেই! সেখানকার রাজপথে এমারেল্ড-হোয়াইট লো-কাট ড্রেসের সঙ্গে কো-অর্ডিনেটিং ডাস্টার কোট থেকে চোখ সরানো দায়। এ তো গেল
একটা পোশাকের কথা। ‘ফ্লার্টি’ জুয়েল-হিউড ফ্রকের সঙ্গে টু-টোন্ড স্কার্ট। উফফ! সরু কোমরের খাঁজটা স্পষ্ট করে দিচ্ছিল সেই ড্রেস। স্কার্টের কয়েকটা বোতাম আবার খোলা...!
‘গুড মর্নিং আমেরিকার মতো জনপ্রিয় শো’এ গিয়েছিলেন যেটা পরে, সেটা আরও সেক্সি। কাফ-লেংথ পার্পল লেদার জ্যাকেটের সঙ্গে ফ্লেয়ার্ড স্কার্ট এবং রাফল্ড হোয়াইট শার্ট। সঙ্গে বো-টাই কো-অর্ডিনেটিং হিল্স। একবার চোখ বন্ধ করে
ভাবুন ড্রেসটার কথা! প্রিয়াঙ্কা এভাবেই কিন্তু হলিউড কাঁপাচ্ছেন। তার ‘কনটেন্ডার’ বলতে দীপিকা। আর তো কেউ নেই। এককালে যে ঐশ্বরিয়া রাই বচ্চন কান কাঁপিয়েছেন, তিনিও অবশ্য এখন কান’এই। সোনম কপূরও ওই রেড কার্পেট
পর্যন্তই হেঁটেছেন। এবারও তাই। কিন্তু প্রিয়ঙ্কা মনে হচ্ছে, কান ছাড়াই যথেষ্ট!
গোল্ডেন গ্লোব এবং অস্কারে প্রেজেন্টার ছিলেন প্রিয়াঙ্কা। অথচ কান’এর মতো উত্সবে তিনি নেই। কেন? হয়তো নিজের দাপুটে ব্যাপারটা সবাইকে দেখাতেই। এটা প্রমাণ করে দিতে, যতই কান-কান করো, আমি তো অস্কার! হয়তো
কান’এ যাওয়ার ‘হ্যাংলামো’টা তাঁর নেই। হয়তো, এনডোর্সমেন্টের চক্করে পোশাক পরে রেড কার্পেটে হাঁটার ইচ্ছেটাই তাঁর নেই।
নিজে মুখে এই কথাগুলো বলেন না বটে, তবে আন্দাজ তো করাই যায়! সম্প্রতি মেট গালা’তেই তো
দীপিকাকে দশ গোল দিলেন ফ্যাশন সেন্সে। তার উপর আবার হুপি গোল্ডবার্গ, মেরিল স্ট্রিপ, রবার্ট ডি নিরো’র সঙ্গে এক ফ্রেমে ছবি।
বলিউডের নিন্দকেরা বলছেন, প্রিয়াঙ্কা দেখিয়ে দিচ্ছেন ওসব কান-টানে কোনও লাভ নেই। এলেন
ডিজেনারেস, জিমি কিমেলের শো’য়েও তো সেই প্রিয়াঙ্কাই। তিনিই তো সেই ‘ইন্ডিয়ান অ্যাক্ট্রেস’, যিনি হলিউডে স্বাগত!
এখন হলিউডে ভারতীয় অভিনেত্রী মানেই প্রিয়াঙ্কা চোপড়া। না হলে কেউ দীপিকা পাড়ুকোনকে দেখে বলে, ওই দ্যাখো! প্রিয়াঙ্কা চোপড়া এসেছেন।