ঢালিউডে ইমুর অভিষেক হওয়ার কথা ছিল দুই বছর আগে। শাহ আলম মণ্ডলের ছবি ‘জানে মন তুই জীবন’-এ সুযোগ পেয়েছিলেন শাকিব খানের বিপরীতে। কিন্তু সম্মতি দেয়নি পরিবার। পড়াশোনা শেষ করার আগে কোনোভাবেই শোবিজে নাম লেখাতে দেবেন না তাঁরা। মা-বাবা দুজনই থাকেন আমেরিকায়। এক ভাই লন্ডন, আর এক ভাই ইতালিতে। সবাই একজোট হয়ে বোঝালেন ইমুকে। মন খারাপ করে ছেড়ে দিলেন চুক্তিবদ্ধ হওয়া ছবিটি। মন দিলেন পড়াশোনায়। অ্যাকাউন্টিংয়ে অনার্স করে ভর্তি হয়েছেন নর্দান বিশ্ববিদ্যালয়ে, এমবিএ করতে। এদিকে প্রযোজক-পরিচালকরা এখনো তাঁর পিছু ছাড়ছেন না। একের পর এক প্রস্তাব দিয়েই যাচ্ছেন। অনার্স শেষ হওয়ায় শেষ পর্যন্ত মন গলেছে পরিবারের। এবার আর যায় কোথায়! মাত্র এক মাসে পাঁচটি ছবিতে চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন ইমু—তাজু কামরুলের ‘গোপন সংকেত’, রফিক শিকদার বুলবুলের ‘খুশি’, ওয়াজেদ আলী সুমনের ‘ফালতু’, অপূর্ব রানার ‘এক রাতের জন্য’, উত্তম আকাশের ‘জেনারেশন গ্যাপ’। বিপরীতে নায়ক রিয়াজ, আরিফিন শুভ, সাইমন, মোশাররফ করিমের মতো তারকারা।
ইমু বলেন, ‘আমি ভীষণ ভাগ্যবতী। জনপ্রিয় সব অভিনেতার বিপরীতে চুক্তিবদ্ধ হয়েছি। বড় বাজেটের ছবি। গল্পও দারুণ। শুটিং চলছে সব ছবির। এভাবে চললে আগামী বছর ইন্ডাস্ট্রির সবচেয়ে বেশি ছবির নায়িকা হব আমি। ’
ইমুর বাবা ছিলেন হিন্দু, মা মুসলিম। বিয়ের পর তাঁরা চলে যান আমেরিকায়। ইমুর জীবনের বেশির ভাগ সময় কেটেছে সেখানেই। পরে দাদুর বাড়ি কলকাতায়ও থেকেছেন অনেক দিন। এখন থিতু হয়েছেন ঢাকায়। কলকাতায় নাচ শিখেছিলেন সুমন সরকারের কাছে। অভিনয়টাও শিখেছেন সেখানে। কিন্তু তখনো ভাবেননি শোবিজে ক্যারিয়ার গড়বেন। চেয়েছিলেন শখের বসে দু-একটি নাটক বা বিজ্ঞাপনে কাজ করবেন। এখন তো চলচ্চিত্র নিয়ে ভীষণ সিরিয়াস। ‘মা-বাবা চেয়েছিলেন তাঁদের সঙ্গে থাকি। একটা সময় আমিও সেটা মেনে নিয়েছিলাম। ভেবেছিলাম, পড়াশোনা শেষ করে চলে যাব আমেরিকা। এখন আর সম্ভব নয়। একের পর এক ছবিতে চুক্তিবদ্ধ হচ্ছি। সময়টা দারুণ উপভোগ করছি। প্রতিদিনই কেউ না কেউ এসে গল্প শোনাচ্ছেন, শিডিউল চাইছেন—এটা অন্য রকম আনন্দ। এখন আর চলচ্চিত্র ছেড়ে অন্যদিকে ক্যারিয়ার গড়ার কথা চিন্তাও করতে পারি না’—বললেন ইমু।
বন্ধুপ্রিয় মানুষ হিসেবে ইমুর বেশ নামডাক। ক্যাম্পাসের বেশির ভাগ ছাত্র-ছাত্রীই তাঁকে চেনে। বন্ধুদের আবদার ফেলতে পারেন না। বন্ধুদের সেই আবদারের তালিকায় থাকে সিনেমা দেখা, দল বেঁধে খেতে যাওয়া থেকে শুরু করে দেশের বাইরে পর্যন্ত ঘুরতে যাওয়া। এতে বেশ তৃপ্তি পান তিনি। ইমু বলেন, ‘বন্ধুদের সঙ্গে থাকলে মন বেশ ফুরফুরে থাকে। চাঙ্গা মনে হয়। একটু সময় পেলেই আমি ওদের ডাকি। আর আমার আমন্ত্রণ পাওয়া মানেই তো ওদের কাছে ঈদের খুশি। ’
শুধু বড় পর্দা থেকেই নয়, ছোট পর্দায় অভিনয়েরও ডাক পান ইমু। কিন্তু সাড়া দেন না। এ মুহূর্তে কোনোভাবেই নাটকে অভিনয় করতে চান না তিনি। তবে বিজ্ঞাপন করতে অসুবিধা নেই। এর মধ্যে একটি ইলেকট্রিক পণ্যের মডেলও হয়েছেন। আসছে ঈদে বিভিন্ন চ্যানেলে প্রচারিত হবে সেটি। নাটকে অভিনয় না করার বিষয়ে বলেন, ‘বড় পর্দার অভিনেতাদের নাটক করা ঠিক নয়। এতে জনপ্রিয়তা কমে। চ্যানেল ঘুরিয়ে ফ্রিতে আপনাকে কেউ দেখলে টাকা খরচ করতে আর হলে যাবে কেন? যত দিন বড় পর্দায় চাহিদা থাকবে তত দিন ছোট পর্দায় অভিনয় করব না। এই সিদ্ধান্তে অনড় থাকতে চাই। ’