রাজধানীর গুলশান-২ এর ১৫৯ নম্বরে এক বিঘা ১৩ কাঠা জমির ওপর নির্মিত বাড়িটি দখলমুক্ত করতে বুধবার অভিযান চালাচ্ছে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক)। এ সময় দীর্ঘ তিন যুগ ধরে বাড়িটিতে সপরিবারের বাস করে আসা বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মওদুদ আহমদ বলেন, ‘কি আর করবো? রাতে ফুটপাতে শুয়ে থাকবো’।
এর আগে, গত রবিবার এ সংক্রান্ত মামলায় সুপ্রিম কোর্টের রিভিউ খারিজ করে দেওয়া চূড়ান্ত রায়ে প্রমাণিত হয়েছে, বাড়ির মালিকানা তার বা তার ভাই মনজুর আহমেদের নয়। এর তিনদিনের মাথায় বুধবার দুপুর থেকে অবৈধ দখলমুক্ত করে বাড়িটি অধিগ্রহণ করছে রাজউক।
উচ্ছেদ অভিযান শুরুর সময় বাড়িতে ছিলেন না মওদুদ। দুপুর তিনটার পরে বাড়িটির গেটের সামনে বসে কিছুক্ষণ মালামাল সরাতে প্রতিবন্ধকতাও সৃষ্টি করেন। তবে রাজউকের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও পুলিশ তাকে সরিয়ে গেটের একপাশে বসিয়ে দেন। পরে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন বিএনপির এই সিনিয়র নেতা।
এ সময় সাংবাদিকরা মওদুদকে প্রশ্ন করেন ‘এখন কি করবেন?’ জবাবে তিনিবলেন, ‘আমার আর কি করার আছে? কি আর করবো? রাতে ফুটপাতে শুয়ে থাকবো’।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, গুলশানের যে বাড়িটিতে মওদুদ আহমদ ও তার পরিবার থাকছেন, তার প্রকৃত মালিক ছিলেন পাকিস্তানি নাগরিক মো. এহসান। ১৯৬০ সালে তৎকালীন ডিআইটির কাছ থেকে এই বাড়ির মালিকানা এহসান পান। ১৯৬৫ সালে বাড়ির মালিকানার কাগজপত্র এহসানের স্ত্রী অস্ট্রিয়ার নাগরিক ইনজে মারিয়া প্লাজের নামে নিবন্ধন করা হয়।
১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে এহসান স্ত্রীসহ ঢাকা ত্যাগ করেন। তারা আর ফিরে না আসায় ১৯৭২ সালে এটি পরিত্যক্ত সম্পত্তির তালিকাভুক্ত হয়। ওই বছরই মওদুদ ওই বাড়ির দখল নেন। এরপর ১৯৭৩ সালের ২ অগাস্ট তারিখে তিনি ইনজে মারিয়া প্লাজের নামে একটি ‘ভুয়া’ আমমোক্তারনামা তৈরি করান এবং নিজেকে তার ভাড়াটিয়া হিসেবে দেখিয়ে ওই বাড়িতে বসবাস করতে থাকেন বলে মামলায় অভিযোগ করা হয়।