বাংলাদেশ-ভারত ম্যাচ সমর্থকদের ওপর বিরক্তি প্রকাশ করেছেন কলকাতার জনপ্রিয় অভিনেতা আবির চক্রবর্তী। এবেলায় লেখা কলামে তিনি বলেন, ইদানীং মনে হয়, প্রতিবেশীর সঙ্গে সম্পর্কের জায়গাটাই গুলিয়ে যাচ্ছে। বিষয়টা বড্ড বেশি চোখে পড়ে, যখন দু’দেশের ক্রিকেট ম্যাচ থাকে। যেমন হচ্ছে এখন। সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং ওয়েবসাইট দেখতেও খুব বিরক্তবোধ করছি।
''আমরা যখন ছোট ছিলাম, ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ নিয়ে ঠিক এই কাণ্ডটাই হতো। তখন অবশ্য সোশ্যাল মিডিয়া ছিল না, এই যা বাঁচোয়া। যত দিন গেছে, ভারত-পাকিস্তান ম্যাচের সংখ্যা কমেছে নানা কারণে। যেটুকু হয়, সেটাও খুব একপেশে হয়ে গেছে। ''
তিনি আরও বলেন, ''অন্যদিকে, গত কয়েক বছরে বাংলাদেশ ক্রিকেট ক্রমশ শক্তিশালী এবং সমৃদ্ধ হয়ে উঠছে। হয়তো সে জন্যই আমাদেরও ফোকাস ঘুরে গেছে। এখন আমাদের শত্রু বাংলাদেশ। বাকস্বাধীনতার নামে যে ইচ্ছে লিখছে ফেসবুকে-হোয়াটস্অ্যাপে। মনে করছেন, বাক্স্বাধীনতার নামে বুঝি যা খুশি করা যায়! যখন তখন নিজের মতো আঘাত করা যায়। ''
আবিরের মতে, উপমহাদেশে ক্রিকেট একটা ধর্ম। হতেই পারে। ক্রিকেট ঘিরে সত্যিই সেই উন্মাদনা আছে। কিন্তু যে কোনো ধর্মই অন্যের প্রতি সহনশীল হতে শেখায়। ক্রিকেট ধর্মেরও সেটা মনে রাখা দরকার। শচীন টেন্ডুলকারও তো তাই বলেছেন। তাঁকে নিয়ে তৈরি ছবিতে তিনি বলেছেন, ক্রিকেট তাঁর জীবনের পঞ্চাশ শতাংশ। যা মাঠে থাকে। আর বাকি পঞ্চাশ শতাংশ পরিবার। সেটা বাড়িতে। দু'টি গুলিয়ে ফেললে মুশকিল।
সবশেষে তিনি বলেন, যত দিন যাচ্ছে, আমাদের জীবন থেকে ধৈর্য শব্দটা কার্যত হারিয়ে যাচ্ছে। আমরা বড় ছবি দেখতে চাই না। লম্বা গান শুনতে চাই না। মোটা বই পড়তে চাই না। সোশ্যাল মিডিয়াতেও তারই প্রতিফলন। কোনো দেশের মানুষই অন্যদেশের মানুষের প্রতি ধৈর্য দেখাচ্ছেন না। গালাগাল করা খুব সহজ হয়ে গেছে। বিদ্বেষ ছড়াচ্ছে। গালাগাল আমরা সবাই জানি। জানি না, কোথায় তার প্রয়োগ ঘটাতে হয়।