ঈদ মানে খুশি, ঈদ মানেই বিনোদন। ঈদের দিনগুলোতে দেশের প্রায় সব চ্যানেলেই প্রচারিত হয় বিভিন্ন ধরণের বিনোদনমূলক অনুষ্ঠান। এই বিনোদন উপভোগের অন্যতম মাধ্যম হচ্ছে টেলিভিশন। বিনোদন পিপাসুদের জন্য নিঁখুত ফিনিশিং ও আকর্ষণীয় আউটলুকের ৬৭ মডেলের এলইডি (লাইট এ্যামিটিং ডায়োড) টেলিভিশন বাজারে বিক্রি করছে ওয়ালটন। ঈদুল ফিতরকে ঘিরে স্থানীয় বাজারে এলইডি টিভির যে বাড়তি চাহিদা তৈরি হয়েছে তা পূরণে বিশেষ প্রস্তুতিও নিয়ে রেখেছে প্রতিষ্ঠানটি। এবার ওয়ালটনের টার্গেট গত ঈদুল ফিতরের চেয়ে প্রায় ৪০ শতাংশ বেশি এলইডি টিভি বিক্রি।
জানা গেছে, এবারের ঈদে দেশব্যাপী এলইডি টেলিভিশনের চাহিদা তুলনামূলক বেশি। আর এই বাড়তি চাহিদা পূরণে সকল শ্রেণী-পেশার গ্রাহকদের জন্য ৬৭ মডেলের এলইডি টিভি বিক্রি করছে দেশীয় ব্র্যান্ড ওয়ালটন।
কর্তৃপক্ষ জানান, গাজীপুরের চন্দ্রায় স্থাপিত ওয়ালটন মাইক্রো-টেক করপোরেশনে সর্বাধুনিক ইউরোপিয়ান প্রযুক্তি ও মেশিনারিজের সমন্বয়ে বার্ষিক ১.৩ মিলিয়ন এলইডি টেলিভিশন প্রস্তুতকরার ক্ষমতাসম্পন্ন কারখানা স্থাপন করা হয়েছে। গড়ে তোলা হয়েছে আদ্রতা, তাপ ও ধূলারোধী আইএসও ৭:১০০০০ মানের ক্লিন রুম। রয়েছে প্লাস্টিক কেবিনেট, স্পীকার, রিমোট কন্ট্রোল ইউনিট, মাদার বোর্ড এবং প্যানেল প্রডাকশনের জন্য পৃথক ম্যানুফাকচারিং লাইন। যেখানে এলইডি টিভির মৌলিক কাঁচামাল থেকে প্রয়োজনীয় সকল যন্ত্রাংশসহ তৈরি করা হচ্ছে।
ওয়ালটনের বিপণন বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, তাদের রয়েছে ১৯, ২০, ২৪, ২৮, ৩২, ৩৯, ৪০, ৪৩, ৪৯ ও ৫৫ ইঞ্চির অসংখ্য চোখ ধাঁধানো মডেলের এলইডি টিভি। আরো রয়েছে ৩২, ৩৯, ৪৩, ৪৯ ও ৫৫ ইঞ্চির এন্ড্রয়েড স্মার্ট টিভি। যুগের সাথে তাল মিলিয়ে এইচডি, ফুল এইচডি ও ফোর-কে রেজ্যুলেশনের এলইডি ও স্মার্ট টিভি উৎপাদন ও বাজারজাত করছে ওয়ালটন।
ওয়ালটন টেলিভিশন বিপণন বিভাগের প্রধান মো. আব্দুল বারী বলেন, রমজান মাসে প্রতিবছরই টেলিভিশনের চাহিদা ও বিক্রি বাড়ে। তবে, আইসিসি চ্যাম্পিয়নস ট্রফি’তে বাংলাদেশ দলের অংশগ্রহণের ফলে গত কয়েকদিন এলইডি টিভি ব্যাপক বিক্রি হয়েছে। ঈদ উপলক্ষ্যে বাড়তি চাহিদাতো রয়েছেই। আর বাড়তি এই চাহিদার সিংহভাগ নিজেদের দখলে নিতে ঈদে ৫৭ হাজার এলইডি টেলিভিশন সেট বিক্রির টার্গেট নিয়েছে ওয়ালটন। ইতোমধ্যে চলতি মাসে প্রথমার্ধে প্রায় ৩০ হাজার এলইডি টিভি বিক্রি হয়েছে। এই ধারাবাহিকতা বজায় থাকলে টার্গেটের চেয়েও বেশি টেলিভিশন বিক্রি হবে বলে প্রত্যাশা করছেন আব্দুল বারী।
ওয়ালটনের মার্কেটিং বিভাগের প্রধান এমদাদুল হক সরকার বলেন, স্থানীয় বাজারে গ্রাহকদের চাহিদা, রুচি ও সাধ্যের মধ্যে বিশ্বমানের এলইডি টিভি বাজারে সরবরাহ করায় অতি দ্রুত গ্রাহক পছন্দের শীর্ষে ওয়ালটন। যার প্রমাণ- এলইডি টিভি বিক্রিতে গত বছর ৩০০ শতাংশের বেশি প্রবৃদ্ধি অর্জন করার রেকর্ড।
তিনি জানান, ২০১৬ সালের জানুয়ারি থেকে মে এই ৫ মাসের তুলনায় চলতি বছরের একই সময়ে ওয়ালটন এলইডি টিভির বিক্রি বেড়েছে প্রায় ১০৯ শতাংশ। ২০১৬ সালের মে মাসের তুলনায় চলতি বছরের মে মাসে প্রায় ৯৭ শতাংশ বেশি এলইডি টিভি বিক্রি হয়েছে।
ওয়ালটনের টেলিভিশন সোর্সিং ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের এ্যাডিশনাল ডিরেক্টর মোস্তফা নাহিদ হোসেন বলেন, ওয়ালটন কারখানায় স্থাপন করা হয়েছে দেশের অন্যতম বৃহৎ টেলিভিশন গবেষণা ও উন্নয়ন বিভাগ। যেখানে দেশের অসংখ্য মেধাবী, দক্ষ প্রকৌশলীরা টেলিভিশন প্রযুক্তির উৎকর্ষ সাধনে নিয়মিত গবেষণা চালাচ্ছেন। ইতোমধ্যে তারা ইলেকট্রনিক্স, অপ্টিক্যাল এবং মেকানিক্যাল ডিজাইনিংসহ সকল ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য সাফল্য অর্জন করেছেন। এসব ক্ষেত্রে ওয়ালটনের উদ্ভাবিত ২৮ টি পেটেন্ট অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে। তারা গবেষণা করছেন ৯৮.৭ শতাংশ পর্যন্ত প্রকৃত রঙ প্রদর্শনের ক্ষমতাসম্পন্ন আগামী প্রজম্মের কোয়ান্টাম ডট প্লাস প্রযুক্তির স্পেকট্রাকিউ টিভি নিয়ে। যা চলতি বছরের মধ্যেই সাফল্যের মুখ দেখতে পারে বলে তিনি আশাবাদী।
তিনি আরো বলেন, ওয়ালটন মেকানিক্যাল ডিজাইন আরএন্ডডি কর্তৃক সম্পূর্ণ নিজস্ব ডিজাইনের ৬৭ মডেলের এলইডি টিভি বাজারে ছাড়া হয়েছে। নিজস্ব ইউনিক ডিজাইনে তৈরি ওয়ালটন এলইডি টিভি স্থানীয় বাজারের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক বাজারেও ক্রেতাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছে।
বর্তমানে বাজারে ১৯ ইঞ্চি এলইডি টিভি মাত্র ৮,৯৯০ টাকায় বিক্রি করছে ওয়ালটন। ২৪ ইঞ্চি এলইডি টেলিভিশন বিক্রি হচ্ছে মাত্র ১৩,৭০০ টাকায়। উন্নতমানের পিকচার কোয়ালিটি সম্পন্ন ২৮ ইঞ্চি ও ৩২ ইঞ্চি এলইডি টিভি বাজারে পাওয়া যাচ্ছে যথাক্রমে ১৬,৯০০ ও ১৮,৮০০ টাকায়। সিলভার কালারের ৩৯ ইঞ্চি এলইডি টিভির দাম ৩২,৯৯০ টাকা। এছাড়া ওয়ালটন মাত্র ২৩,৯০০ টাকায় দিচ্ছে ৩২ ইঞ্চি ইন্টারনেট ভিত্তিক স্মার্ট টিভি। ৪৩ ইঞ্চির ওয়ালটন এলইডি ও স্মার্ট টিভির দাম পড়বে যথাক্রমে ৪১,৯০০ টাকা ও ৪৮,৯০০ টাকা।
ওয়ালটন এলইডি টিভিতে দেয়া হচ্ছে ৬ মাসের রিপ্লেসমেন্ট গ্যারান্টি। এলইডি প্যানেল ও খুচরা যন্ত্রাংশের জন্য ২ বছরের ওয়ারেন্টির সঙ্গে থাকছে ৫ বছরের বিক্রয়োত্তর সেবা।
উল্লেখ্য, দ্রুত বিক্রয়োত্তর সেবা পৌঁছে দিতে বাংলাদেশে একমাত্র ওয়ালটনেরই আছে আইএসও স্ট্যান্ডার্ড সার্ভিস ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম। দেশব্যাপী রয়েছে ৬৭টি সার্ভিস সেন্টার ও ৩ শতাধিক সার্ভিস পয়েন্ট। যেখানে কাজ করছেন প্রায় ২ হাজার ৫’শ হাজার প্রকৌশলী ও টেকনিশিয়ান।