গতকাল শুক্রবার বিকেলে শোলাকিয়া ঈদগাহ মাঠ পরিদর্শন শেষে কিশোরগঞ্জের পুলিশ সুপার মো. আনোয়ার হোসেন খান সাংবাদিকদের এসব জানান। তিনি বলেন, মাঠের ভেতর-বাইরে পুলিশ বাহিনীকে সহায়তার জন্য স্বেচ্ছাসেবক থাকবে। নিরাপত্তার স্বার্থে মুসল্লিদের ছাতা বা কোনো ধরনের ব্যাগ নিয়ে মাঠে ঢুকতে দেওয়া হবে না। মুসল্লিরা শুধু জায়নামাজ নিয়ে ঈদগাহে আসতে পারবেন।
পুলিশ সুপার বলেন, ঈদের দিন মাঠের চারদিকের সব প্রবেশপথ বন্ধ করে দিয়ে মাঠের দক্ষিণ দিকে তিনটি, পূর্ব দিকে তিনটি ও উত্তর পাশে একটি প্রবেশপথসহ মোট সাতটি পথ দিয়ে মুসল্লিরা আসতে পারবেন। এর মধ্যে ছয়টি প্রবেশপথে আর্চওয়ে বসানো হবে। একটি পথ থাকবে গাড়ি প্রবেশের জন্য। মুসল্লিদের দেহ মেটাল ডিটেক্টর দিয়ে তল্লাশি করে মাঠে প্রবেশ করানো হবে। ঈদের দিন পর্যন্ত এলাকার কোনো বাসায় যাতে নতুন কোনো ভাড়াটে না ওঠে, সে ব্যাপারে বাড়িওয়ালাদের আহ্বান জানানো হয়েছে। অচেনা কোনো লোক এলাকায় ঘোরাফেরা করলে সে-সংক্রান্ত পুলিশকে জানাতে অনুরোধ করেছেন পুলিশ সুপার।
এবার শোলাকিয়ায় ঈদ জামায়াতে ইমামতি করবেন মাওলানা ফরিদউদ্দীন মাসউদ। সকাল ১০টায় জামাত শুরু হবে।
গত বছরের ৭ জুলাই ঈদুল ফিতরের দিন নামাজ শুরুর আগ মুহূর্তে শোলাকিয়া ঈদগাহ মাঠের কাছে পুলিশের তল্লাশির সময় জঙ্গিরা গ্রেনেড হামলা করে। এ ছাড়া তাদের চাপাতির কোপে দুই পুলিশ কনস্টেবল মারা যান। এ সময় আরও ১২ পুলিশ সদস্য আহত হন। পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে ঘটনাস্থলে আবির রহমান নামের এক জঙ্গি মারা যায়। উভয় পক্ষের গোলাগুলির সময় নিজ বাসায় গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান এলাকার গৃহবধূ ঝরনা রানী ভৌমিক। আটক করা হয় জঙ্গি শফিউল ও স্থানীয় তরুণ জাহিদুল ইসলাম ওরফে তানিমকে। পরে গত বছরের ৪ আগস্ট ময়মনসিংহ জেলার নান্দাইলে র্যাবের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে শফিউল নিহত হন।
শোলাকিয়া হামলা মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও কিশোরগঞ্জ সদর মডেল থানার ওসি (তদন্ত) মোহাম্মদ মুর্শেদ জামান বলেন, মামলায় দুই আসামি হাজতে রয়েছে। গ্রেপ্তার হওয়া জেএমবি নেতা জাহাঙ্গীর আলম ওরফে রাজীব গান্ধী এ ঘটনায় আদালতে দোষ স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন। দ্রুত সময়ে এ মামলার অভিযোগপত্র দেওয়া হবে।
শোলাকিয়া ঈদগাহ মাঠ কমিটির সভাপতি ও কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসক আজিমুদ্দিন বিশ্বাস প্রথম আলোকে বলেন, মুসল্লিদের বাড়তি নিরাপত্তায় প্রশাসন থেকে সব রকমের প্রস্ততি নেওয়া হচ্ছে। আশা করা হচ্ছে ঐতিহ্যবাহী এ মাঠে এবার অনেক মুসল্লির সমাগম হবে। সবাই নির্বিঘ্নে নামাজ আদায় করতে পারবেন।