‘দয়া করে অদ্ভুত বাধ্যতামূলক ব্যাপার পরিহার করেন’
প্রকাশ: ২০১৭-০৭-১২ ১১:১৩:৩৩
যৌথ প্রযোজনার ছবি নিয়ে বেশ হৈ চৈ চলছে দেশের বিনোদন জগতে। এছাড়া একপক্ষে আরেকপক্ষের বিরুদ্ধে নানারকম অরুচিকর কথাও প্রচার করছে। এমতাবস্থায় বাংলাদেশ সরকার নতুন নিয়ম না হওয়া পর্যন্ত যৌথ প্রযোজনার ছবি মুক্তির ব্যাপারে স্থগিতাদেশ প্রদান করেছে।
এ বিষয়ে নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে ব্যক্তিগত মতামত তুলে ধরে দীর্ঘ একটি পোস্ট করেছেন বাংলাদেশের আন্তজার্তিকভাবে খ্যাতি পাওয়া পরিচালক মোস্তফা সরোয়ার ফারুকী।
তার পোস্টটি হুবহু নিচে তুলে ধরা হলো-
”তথ্য মন্ত্রনালয়কে ধন্যবাদ ভারত-বাংলাদেশ যৌথ প্রযোজনার চলচ্চিত্র নীতিমালা মূল্যায়ন ও সংশোধন সুপারিশে নতুন কমিটি তৈরি করার জন্য। এবং আরো ধন্যবাদ জানাই এই কাজের জন্য যোগ্য ব্যক্তিটিকে কমিটির প্রধান করায়। হারুন ভাইয়ের জ্ঞান এবং প্রজ্ঞা আমাদেরকে একটা সময়োপযোগী নীতিমালা দিবে, এই বিষয়ে আমার পূর্ণ বিশ্বাস আছে।
পরে কখনো হারুন ভাইয়ের সঙ্গে কথা হলে বিস্তারিত বলবো।
তবে এই ফাঁকে কয়টা কথা বলে রাখি।
কয় সপ্তাহ আগে যখন কোলকাতায় গেলাম তখন বেশ কিছু পত্রিকায় দীর্ঘ সাক্ষাৎকার দিতে হয়েছিলো। সেখানে এই কথাগুলো বলেছি। বাংলাদেশ আর ভারতের মধ্যে সত্যিকার যৌথ প্রযোজনা দুই দেশের জন্যই লাভজনক হবে যদি দুই দেশের অংশগ্রহনে ভারসাম্য থাকে।
এখন সেই ভারসাম্য মানে কিন্তু এক ছবিতে দুই দেশের দুই পরিচালক থাকা না। দয়া করে এই অদ্ভুত বাধ্যতামূলক ব্যাপার পরিহার করেন। এর কারনেই এই দেশের প্রযোজকের নাম পরিচালক হিসাবে দেখা যায়।
বরং নীতিমালায় এমন ফিল্টার তৈরি করেন যাতে এটা নিশ্চিত করা যায় যে, বছরে দশটা যৌথ প্রযোজনার ছবি হলে ন্যুনতম পাঁচটার গল্প, পরিচালক, এবং লোকেশন যেনো এই দেশের হয়। শিল্পীদের ক্ষেত্রেও ভারসাম্য আনেন।
এতে যেটা হবে, ঢাকা বা কোলকাতা কোথাও অসন্তোষ তৈরি হবে না। কেউ ভাববে না, আমাদেরকে কেবল ভোক্তা বানানো হচ্ছে। তখনই কেবল এটা কাজে আসবে। নাহলে এটা দীর্ঘমেয়াদে ফলপ্রসূ হবে না এবং এমনকি এটার জন্য অনাকাংখিত রাজনৈতিক মূল্য দিতে হবে।
আর এই সাফটা চুক্তির আওতায় ছবি বিনিময় জিনিসটা পুরোপুরি নিরুৎসাহিত করা উচিত। এটা অনিয়ম এবং ফাঁকিবাজির সুযোগ তৈরি করে এবং আখেরে যা দুই দেশের সম্পর্কে বাজে চাপ ফেলবে। এটাকে নিরুৎসাহিত করে যৌথ প্রযোজনাকে উৎসাহিত করেন।
আরেকটা কথা, এখন যৌথ প্রযোজনার ছবিকে দুইবার নিরীক্ষণের মধ্য দিয়ে যেতে হয়। একটা কমিটি স্ক্রিপ্ট পড়ে অনুমোদন দেয়। তারপর ছবি তৈরি হলে সেই কমিটি ছবি দেখে অনুমোদন দেয়। তারপর সেটা আবার সেন্সর বোর্ড দেখে।
এক মুরগী বারবার জবাই করার এই ক্লান্তিকর পদ্ধতি বাদ দিয়ে সহজ এবং যথাযথ পরীক্ষণের পদ্ধতি বের করুন, দয়া করে।
আপনাদের স্বাগত। সবাই আশা নিয়ে তাকিয়ে আছে যাতে নিয়ম-নীতির মধ্যে সুন্দরভাবে ছবিগুলো তৈরি হয়।”