হাঁপানি রোগে আক্রান্ত হলে চিকিৎসা নেয়ার পাশাপাশি এড়িয়ে চলতে হবে বেশকিছু বিষয়। যেসব জিনিস থেকে হাঁপানির আক্রমণ শুরু হয় সেগুলো বাড়ি থেকে দূরে রাখুন। এজন্য হাঁপানি রোগীদের এলার্জি পরীক্ষা করে জানা দরকার তার কোন দ্রব্যাদি থেকে এলার্জি শুরু হয়। হাঁপানি রোগে আক্রান্ত অনেকেরই পশুপাখির লোমে এলার্জি থাকে। এইসব প্রাণী বাড়ির বাইরেই রাখুন।
সিগারেটের ধোঁয়া হাঁপানির কষ্ট মারাত্মকভাবে বাড়িয়ে দেয়। শুধু হাঁপানিই নয়, ফুসফুস ও শ্বাসনালী সংক্রান্ত অনেক অসুখে অন্যতম কারণ ধূমপান। সিগারেটের ধোঁয়া থেকে প্রথমে ব্রঙ্কাইটিস, পরে ক্রনিক ব্রঙ্কাইটিস সৃষ্টি হয়। হাঁপানি রোগী থাকে সেখানেও কোনো স্মোকারের প্রবেশ নিষেধ। কারণ পরোক্ষ ধূমপানও হাঁপানির কষ্ট অনেকটা বাড়িয়ে দেয়।
ঘরে কার্পেট থাকলে তা বের করে দিন। এগুলোতে প্রচুর ধুলা জমে। নরম চেয়ার, কুশন ও বাড়তি বালিশও বের করে দিন। এগুলোতেও ধুলা জমে। তোশক ও বালিশে চেনটানা বিশেষ ধুলা রোধক ঢাকা ব্যবহার করুন, তা না থাকলে অন্তত পাতলা রেক্সিনের কাভার দিন।
পরিষ্কার ও খোলা হাওয়ার জন্য জানালা খোলা রাখুন! ভ্যাপসা ও দমবন্ধ লাগলে জানালাগুলো খুলে দিন, এমনকি রান্না করার সময় ধোঁয়া উঠলেও তা করতে পারেন। যখন বাইরে গাড়ির ধোঁয়া, ফ্যাক্টরির দূষণ ধুলা বা ফুল ও গাছের রেণু বেশি থাকে, তখন জানালা বন্ধ রাখুন।
প্রতিদিন নিয়ম করে হাল্কা ব্যায়াম করা খুব জরুরী। তবে একটা ব্যাপার ভুললে চলবে না বেশি ব্যায়ামের জন্য যেন হাঁপানির টান না ওঠে। হাঁটা, সাঁতার কাটা, সাইকেল চালানো এগুলো কিন্তু হাঁপানি রোগীদের পক্ষে ভাল ব্যায়াম। হাঁটার সময়ে সামনে ঝুঁকে হাটবেন না। শিরদাড়া সোজা রেখে প্রতিদিন ২/৩ কিলোমিটার উন্মুক্ত বাতাসে সমতলে হাঁটুন।
কোন কারণে ভয় পেলে, মানসিক উদ্বেগ দুশ্চিন্তা বা শোক পেলেও হাঁপানির টান হতে পারে। তাই মনটাকে রাখতে হবে টেনশন ফ্রি, শরীর মন শিথিল করে দেয়া রপ্ত করতে হবে।
হাঁপানি রোগীর অনুপস্থিতে কয়েকটি কাজ সেরে রাখুন। ঘরদোর মুছে ভ্যাকুয়াম করে বা ঝাঁট দিয়ে রাখুন, পোকা মাকড়ের জন্য স্প্রে করুন, কড়া গন্ধযুক্ত রান্নাবান্না সেরে রাখুন, ঘরে ফেরার আগে হাওয়া খেলতে দিন।
হাঁপানি চিকিৎসা চলাকালীন রোগীকে প্রচুর পরিমাণ পানি খেতে দিন। কারণ শরীরে জলের ঘাটতি থাকলে হাঁপানির ওষুধ কাজ করে না। এছাড়া জলের অভাবে কফ জমে যায় ও সহজে বেরোতে পারে না, ফলে শ্বাসকষ্ট আরও বেড়ে যায়।
বেশি রাতে ভরপেট খেলে টান উঠতে পারে। তাই রাতে পেট ভরে ভুলেও খাবেন না। হাঁপানি রুখতে নিয়ম করে হাতে কিছুটা সময় নিয়ে খেতে হবে, অকারণে তাড়াহুড়া করা চলবে না, ঝাল মসলাদার খাবারের বদলে বাড়িতে রান্না করা খাবার খাওয়াই বাঞ্ছনীয়। ফ্রিজ থেকে বের করে সঙ্গে সঙ্গে ঠাণ্ডা জিনিস খাওয়া উচিত নয়। রুম টেম্পারেচারে এলে তবেই খাবেন, ঠাণ্ডা কোল্ড ড্রিঙ্কস বা ফ্রিজের জল প্রচণ্ড গরমেও খাওয়া উচিত নয়।
শীতকালে ঘর গরম রাখতে পারলে ভাল হয়। ঘরে বাতানুকূল ঘরের বাইরে বারবার যাতায়াত করা উচিত নয়। যন্ত্রের হাওয়াটা যেন সোজাসুজি গায়ে এসে না লাগে এটাও দেখা প্রয়োজন।
সানবিডি/ঢাকা/এসএস