প্রেগন্যান্সি ইস্যুতে এবার মুখ খুললেন শাবনূর
প্রকাশ: ২০১৭-০৮-১৪ ১২:১১:২৬
বাংলা সিনেমার একসময়কার তুমুল জনপ্রিয় নায়ক সালমান শাহ আত্মহত্যা করেছিলেন নাকি তাঁকে খুন করা হয়েছিল গত ২০ বছরেও পুরোপুরি মীমাংসা হয়নি এ প্রশ্নের। ১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর রাজধানীর ইস্কাটনের নিজ ফ্ল্যাটে সিলিং ফ্যানের সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া গিয়েছিল তার লাশ। এদিকে সালমান শাহ মৃত্যু রহস্য ইস্যুতে একের পর এক নতুন নতুন তথ্য দিয়ে চাঞ্চল্য তৈরি করছেন সালমান শাহ ‘হত্যা মামলা’র আসামী রুবি সুলতানা।
আমেরিকা প্রবাসী এই রুবি সুলতানাই এখন সরগরম করে রেখেছেন বাংলাদেশের সিনেমার অঙ্গন। আর একের পর এক ভিডিও বার্তা প্রকাশ করে আলোচনায় থাকেছন তিনি। আজ ১৩ আগস্ট আমেরিকার অনলাইট টিভি টাইম টেলিভিশনে লাইভে এসে আরো কিছু নতুন তথ্য তুলে ধরেন রুবি।
এক ঘণ্টা ১৭ মিনিটের এই ভিডিওর ৩৪ মিনিটের মাথায় রুবি বলেন, ‘সামিরা আমাকে বলেছিল যে শাবনূরের সঙ্গে ইমনের (সালমান শাহ’র) এফেয়ার ছিল। শাবনূর প্রেগনেন্টও হয়েছিল। সিঙ্গাপুরে নিয়ে ইমন তার অ্যাবোর্শন করিয়েছে। এগুলো সব সামিরার কাছ থেকে শুনেছি।’
আর এ বিষয়ে শাবনূরের মন্তব্য ‘আমি আসলে তার (রুবির) ইন্টারভিউটি দেখিনি। তাই আসলে কিছু বলতে পারছি না। আমাকে দেখতে হবে। তারপর বলতে হবে। তবে এগুলো সে কেন করছে, কী কারণে করছে, সেগুলো আগে জানা দরকার। আর তদন্ত হওয়া উচিত। এগুলো সে কেনো এমন করছে। কে কী বললো এসব নিয়ে মাথা ঘামানোর সময় আমার নেই। যারা সালমান শাহর বিষয়টির তদন্ত করছেন। তারাই একদিন না একদিন তদন্ত শেষে বিষয়টির সুরহা করবেন। এর চেয়ে আর বেশি কিছু বলার নাই। সত্যি কখনও চাপা থাকে না।’
‘শাবনূর প্রেগনেন্ট হয়েছিল’ রুবির দাবি করা এ ধরনের তথ্যকে বানোয়াট বলে অভিহীত করেছেন ৯০ দশকের জনপ্রিয় অভিনেত্রী শাবনূর। তিনি বলেন,‘রুবি যদি এ ধরনের বানোয়াট মিথ্যা কথা বলে থাকে এটা খুবই দুখ:জনক। তিনি কেনো বানিয়ে বানিয়ে এ ধরনের মিথ্যা কথা বলছেন তা আমার বোধগম্য নয়। আমি নিজেই বুঝতেছি না। কেন তিনি আমাকে জড়িয়ে এ ধরনের কথাগুলো বলেছেন?। তবে আমি এটুকু বলতে পারি তার দাবি সত্যি নয়।’
সামিরার প্রসঙ্গ টেনে শাবনূর বলেন,‘সামিরাকে (সালমান শাহর স্ত্রী) তো আমি অনেক পছন্দ করি। আমি যখন সালমান শাহর সঙ্গে শুটিং করতাম সামিরা তখন সব সময় ছবির শুটিং ইউনিটে থাকত। আর ওকে ছাড়া সালমান কখনও আমার শুটিং ইউনিটে আসেনি। আর সামিরা রুবিকে এরকম কিছু বলতে পারে বলে আমার মনে হয় না। ওকে আমি ব্যক্তিগতভাবে চিনি। ও ভালো একটা মেয়ে। সে যদি এরকম বাজে বাজে কথা বলে জনগণের কাছে আমাকে হেয় পতিপন্ন করতেই থাকে। আমি মানহানির মামলা করব। মানসম্মান রক্ষার জন্য মামলা করা ছাড়া আর কোন উপায় থাকবে না। তিনি মিথ্যা কথা এক জনের উপর চাপিয়ে দিচ্ছেন। বিষয়টা তো ঠিক নয়।’
এদিকে ‘সালমান-সামিরার দাম্পত্য কলহের জন্য দায়ী শাবনূর’। গণমাধ্যমে এমন খবরও গত কয়েকদিন আগে প্রকাশ হয়েছে। এদিকে সালমান শাহের পরিবারের সন্দেহের তালিকায় রয়েছেন সালমান শাহের স্ত্রী সামিরা ও সামিরার বর্তমান স্বামী মোস্তাক ওয়াইজ। তিনি সালমান শাহের বাল্যবন্ধুও। সালমানের মৃত্যুর তিন বছর পর মোস্তাক ওয়াইজ বিয়ে করেন সামিরাকে। মোস্তাক গণমাধ্যমকে বলেছেন, ‘সালমান-সামিরার মধ্যে শাবনূর তৃতীয় ব্যক্তি। তিনিও একটি রোল প্লে করেছেন। বিভিন্ন সময় তাকে নিয়ে ঝগড়া করতেন সালমান-সামিরা।’
এ প্রসঙ্গে শাবনূরের মন্তব্য জানতে চাইলে তিনি বলেন,‘সালমান শাহর বয়সের তুলনায় আমি তো ছোট ছিলাম। সে আমাকে পিচ্চি বলে ডাকত। যেমন-শুটিংয়ের সময় এই পিচ্চি এই দিকে আয়। মানে তুই বলে সম্বোধন করত। আবার বলত, পিচ্চি কাজটা ঠিকভাবে করিস। সালমান বলতো, দেখ-আমার কোন বোন নেই। তুই আমার বোন। আর সালমান শাহর মাও নিজে বিভিন্ন সময় এ কথা সাক্ষাৎকারে বলেছেন।’
অকালপ্রয়াত এই জনপ্রিয় নায়কের মৃত্যু নিয়ে রহস্যের জাল ভেদ না হলেও সহশিল্পীও ভক্তদের মনে রয়ে গিয়েছেন ঠিকিই। মাত্র তিন বছরের চলচ্চিত্র জীবনে সালমান শাহ অভিনয় করেছেন ২৭টি ছবিতে। আর তার ১৪টি ছবিতে তাঁর নায়িকা ছিলেন শাবনূর। আর এ নায়কের অকালে চলে যাওয়া মেনে নিতে পারেন নি শাবনূরও। ‘সে আমার একজন ভাল সহ-শিল্পী ছিল। তাকে সম্মান করি। এখনও সবাই ওকে ভালোবাসে। আর কেউই এটা আশা করেনি। যে এভাবে ও চলে যাবে। একদিন না একদিন সাধারণ মানুষ ওর মৃত্যুর সত্য ঘটনা জানবেই। সবকিছুর একটা সুরহা হোক এটাই আমিও চাই।’ বললেন শাবনূর।