মিয়ানমারের রাখাইনে রোহিঙ্গাদের ওপর সেনাবাহিনীর বর্বরতা রোধে গণতন্ত্রীপন্থী নেত্রী অং সান সুচিকে শেষ সুযোগ দেয়া হয়েছে বলে হুশিয়ারি জানিয়েছেন জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস।
রোহিঙ্গা পরিস্থিতির ভয়াবহতা নিয়ে উদ্বেগ জানিয়ে তিনি বলেন, সুচি এখনই কোনো ব্যবস্থা না নিলে পরিস্থিতি ভয়ংকর হবে। খবর বিবিসির।
জাতিসংঘ মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের ওপর নির্যাতনকে 'জাতিগত হত্যাযজ্ঞ' উল্লেখ করে তা বন্ধে বারবার সতর্ক করে আসছে।
তবে মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ সেনাবাহিনীর অভিযানকে সন্ত্রাসবাদবিরোধী বলে আখ্যা দিয়ে এতে কোনো বেসামরিক লোক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে না বলে দাবি করেছে।
বিবিসির হার্ডটক অনুষ্ঠানে জাতিসংঘ মহাসচিব বলেন, সাধারণ পরিষদের বৈঠকের আগে রোহিঙ্গাদের ওপর সেনা অভিযান বন্ধের শেষ সুযোগ পাবেন সুচি। পরিস্থিতির পরিবর্তনে সুচি কোনো ব্যবস্থা না নিলে ভয়ংকর অবস্থার সৃষ্টি হবে। ভবিষ্যতে এ পরিস্থিতি কীভাবে পরিবর্তন আসবে তা নিয়েও ভয়ের কারণ রয়েছে। আর আসলে আমি জানি না সেই ভয়ানক পরিস্থিতির পরিবর্তন কীভাবে আসবে।
জাতিসংঘ মহাসচিব শিগগিরই রোহিঙ্গা সংকট নিরসন করে শরণার্থীদের ফিরিয়ে নেয়ার ব্যবস্থা করার আহ্বান জানান।
গত ২৪ আগস্ট মিয়ানমারের রাখাইনে পুলিশ পোস্ট ও সেনাক্যাম্পে হামলার পর রোহিঙ্গাদের ওপর দমন-পীড়ন শুরু হয়। ফলে বাংলাদেশ সীমান্তে নতুন করে রোহিঙ্গা শরণার্থীর ঢল শুরু হয়। জাতিসংঘের হিসাবে এ পর্যন্ত চার লাখের মতো রোহিঙ্গা বাংলাদেশে ঢুকে পড়েছে এবং পরিস্থিতির উন্নতি না হলে তা ১০ লাখে পৌঁছাতে পারে।
তবে অভিযোগ রয়েছে, ২৫ আগস্ট মংডুর নিরাপত্তাচৌকিতে রোহিঙ্গা বিদ্রোহীদের হামলার অভিযোগ তুলে সেনা অভিযান শুরু হলেও তার বেশ কিছু দিন আগেই মংডুতে অবস্থান নিতে শুরু করে মিয়ানমার সেনাবাহিনী। তারা ২ আগস্ট একটি গ্রাম কর্ডন করে বৌদ্ধ মিলিশিয়াদের নিয়ে রোহিঙ্গাদের ওপর হামলা ও তাদের বাড়িঘরে আগুন দেয়। এরপর থেকেই বাড়ানো হয় সেনাসদস্যদের উপস্থিতি। এ সময় সরিয়ে নেয়া হয় বৌদ্ধদের। এরপর ২৫ আগস্ট হামলার দাবি করে ‘ক্লিয়ারেন্স অপারেশন্স’ শুরু করেন মিয়ানমারের সেনারা।