রোহিঙ্গা শরণার্থীদের মিয়ানমারে ফিরিয়ে নিতে বিশ্বজনমত সৃষ্টির লক্ষ্যে বাংলাদেশে জাতীয় ঐক্য চায় বিএনপি।
বৃহস্পতিবার দুপুরে এক অনুষ্ঠানে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এমন আহ্বান জানিয়ে বলেন, লাখ লাখ রোহিঙ্গাকে মিয়ানমারে ফিরিয়ে দেয়া আজ একটা চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় তৈরি করতে হবে বিশ্বজনমত।
রোহিঙ্গা ইস্যুতে বিশ্বজনমত তৈরি করতে সরকারকে জাতীয় ঐক্য সৃষ্টির আহ্বান জানান তিনি।
জাতীয় ঐক্য সৃষ্টি সম্পর্কে সরকার বা রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ হয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ঐক্য সৃষ্টির চেষ্টা করতে করতে আমরা ক্লান্ত হয়ে গেছি। আমাদের সরকার তো আপনার ঐক্যের কথা বিশ্বাসই করেন না। সংস্কৃতিতে একটা কথা আছে- এক নেইবো দ্বিতীয়াম। অর্থ আমি ছাড়া আর কেউ নেই, আওয়ামী লীগ ছাড়া কেউ নেই। সুতরাং তারা একাই সবকিছু করতে চায়।’
নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ঢাকা মহানগর দক্ষিণের উদ্যোগে রোহিঙ্গা ত্রাণ তহবিলে অর্থ দেয়ার লক্ষ্যে এই অনুষ্ঠান হয়।
দক্ষিণের সভাপতি হাবিব উন নবী খান সোহেল ও সাধারণ সম্পাদক কাজী আবুল বাশার সংগঠনের পক্ষে ২ লাখ টাকার অর্থ মহাসচিবের হাতে হস্তান্তর করেন। অনুষ্ঠানে বিএনপির স্বেচ্ছাসেবকবিষয়ক সম্পাদক মীর সরফত আলী সপু, সহ-প্রচার সম্পাদক আসাদুল করীম শাহিন, মহানগর দক্ষিণের সাংগঠনিক সম্পাদক সাইফুল ইসলাম পটুসহ মহানগর নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
ফখরুল বলেন, সরকার শুরুতে রোহিঙ্গা ইস্যুটাতে কোনো গুরুত্বই দেয়নি। উপরন্তু তারা রোহিঙ্গাদের ঠেলে পেছনে পাঠিয়ে দিতে চেয়েছিলেন। আমাদের চিৎকারে, আমাদের সোচ্চার কণ্ঠ উচ্চারিত হওয়ার কারণে, দেশবাসীর সোচ্চার কণ্ঠ উচ্চারিত হওয়ার কারণে, জনমত তৈরি হওয়ার কারণে বিশ্ববাসী যখন এগিয়ে আসতে শুরু করল তখনই তারা বাধ্য হয়েছে, বোধদয় হয়েছে তারা স্বজ্ঞানে ফিরে এসেছেন। এখন তারা রোহিঙ্গা আশ্রয় দিয়েছেন।
তিনি অভিযোগ করেন, সরকার এখন পর্যন্ত সেখানে প্রোপার ম্যানেজমেন্ট তৈরি করতে পারেননি। এখনও লাখ লাখ মানুষ বৃষ্টির মধ্যে ভিজছে, কাদার মধ্যে ডুবে আছে। তাদের সুপেয় পানি ও খাদ্য-বস্ত্রের একটা সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা তারা গড়ে তুলতে পারেননি। আমি অনুরোধ করব, সরকার অবিলম্বে এই বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
ফখরুল বলেন, এটাকে শুধুমাত্র রোহিঙ্গা মুসলমান বলার কারণ নেই। নির্যাতন হচ্ছে মানুষের ওপরে, মানবতার ওপরে। মানবতার যে অপমান করা হচ্ছে, মানবতাকে যে হত্যা করা হচ্ছে তার বিরুদ্ধে আমরা সবাই সোচ্চার হয়ে উঠেছি। আমরা বলে এসেছি, এ বিষয়ে সরকারের উদ্যোগ নেয়া উচিত জাতীয় ঐক্যের।