এসব খাবারে বেশি করে ফাইবার বা আঁশ থাকে, কিন্তু ক্যালরি থাকে কম। এতে ক্ষুধা নিবারণ হয় এবং পেট ভরা থাকে। জেনে নিন এ ধরনের কয়েকটি খাবার সম্পর্কে:
ব্রোকলি: শূন্য ক্যালরির খাবারে প্রসঙ্গ উঠলেই বিশ্বের অন্যতম সেরা খাবার হিসেবে উঠে আসে ব্রোকলির নাম। এটি স্বাস্থ্যের জন্য দারুণ উপকারী। সালাদে ও রান্নায় এখন অনেকেই ব্রোকলি খান। পুষ্টিবিদেরা ব্রোকলিকে দারুণ পুষ্টিকর সবজি বলেন। এতে দুর্দান্ত কিছু উপকারী উপাদান আছে, যা দ্রুত বুড়িয়ে যাওয়া ঠেকাতে পারে।
এতে প্রচুর ভিটামিন সি আছে। আমেরিকান ক্যানসার রিসার্চ ইনস্টিটিউটের তালিকায় ক্যানসার প্রতিরোধী দশম খাবার হিসেবে স্থান করে নিয়েছে ব্রোকলি। পুষ্টিবিদদের তথ্য অনুযায়ী, ব্রোকলিতে আয়রনের পরিমাণ বেশি থাকে। ভিটামিন এ এর একটি ভালো উৎস। এটি ত্বকের জন্য ভালো। কোলেস্টেরল কমাতে সহায়তা করে। প্রচুর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট আছে এতে। প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম রয়েছে। শরীর থেকে বর্জ্য পদার্থ দূর করতে সাহায্য করে।
শসা: শসার রয়েছে হরেক গুণ। রূপচর্চা ও মেদ নিয়ন্ত্রণসহ নানা উপযোগিতা আছে এই সহজলভ্য সবজির। শসার ৯০ শতাংশই পানি। শসার মধ্যে যে পানি থাকে, তা আমাদের দেহের বর্জ্য ও বিষাক্ত পদার্থ অপসারণে অনেকটা অদৃশ্য ঝাটার মতো কাজ করে। ফলে যাঁরা দেহের ওজন কমাতে চান, তাঁদের জন্য শসা আদর্শ টনিক হিসেবে কাজ করবে। যাঁরা ওজন কমাতে চান, তাঁরা স্যুপ ও সালাদে বেশি বেশি শসা ব্যবহার করবেন। কাঁচা শসা চিবিয়ে খেলে তা হজমে বড় ধরনের ভূমিকা রাখে। নিয়মিত শসা খেলে দীর্ঘমেয়াদি কোষ্ঠ-কাঠিন্য দূর হয়।
ফুলকপি: ফুলকপি পুষ্টিসমৃদ্ধ সবজি। ফুলকপি শুধু স্বাদের জন্যই নয়, এতে থাকা সালফার সুস্বাস্থ্য ধরে রাখার জন্য উপকারী। যকৃৎ থেকে ক্ষতিকর বিষাক্ত উপাদান দূর করে এটি সুস্থ রাখতে পারে ফুলকপি। এতে প্রচুর ফাইবার আছে, যা শরীরে কোলস্টেরলের মাত্রা ঠিক রাখতে সাহায্য করে। গবেষণায় দেখা গেছে, ফুলকপি মস্তিষ্ক ভালো রাখে, ওজন কমায় এবং সর্দি-কাশিসহ নানা রোগ প্রতিরোধ করে। ফুলকপিতে আছে ভিটামিন ‘বি’, ‘সি’ ও ‘কে’, যা এ সময়ের সর্দি, ঠান্ডা, কাশি জ্বর ভাব, নাক বন্ধ হয়ে যাওয়া, গা-ব্যথা দূর করতে সাহায্য করে। এ ছাড়া ফুলকপির আরও সব প্রয়োজনীয় উপাদান রোগ প্রতিরোধেও অংশ নেয়। এই সবজিতে আছে প্রচুর আয়রন। রক্ত তৈরিতে আয়রন রাখে গুরুত্বপূর্ণ অবদান। গর্ভবতী মা ও অতিরিক্ত শারীরিক পরিশ্রম করা মানুষের জন্য ফুলকপি অত্যন্ত জরুরি।
স্ট্রবেরি : যাঁরা ওজন কমাতে চান তাঁদের জন্য ক্যানবেরি, স্ট্রবেরি উৎকৃষ্ট। এগুলো মূত্রবর্ধক। দেহের অতিরিক্ত পানি বের করে দিতে পারে। হজমে সাহায্য করার পাশাপাশি হৃদযন্ত্র ভালো রাখে বেরি। স্ট্রবেরি, ব্লুবেরি, জাম জাতীয় ফল বিশ্বের অধিক পুষ্টিকর খাদ্যের মধ্যে অন্যতম। বেরি জাতীয় ফলগুলোতে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্টস থাকে। আর এই অ্যান্টিঅক্সিডেন্টস মানবদেহের কোষের ক্ষতি করতে পারে এমন উপাদান থেকে মানবদেহকে রক্ষা করে। প্রাকৃতিক আঁশের অন্যতম একটি ভাণ্ডার হচ্ছে বেরি জাতীয় ফল। যে বেরি জাতীয় ফলগুলোতে এই উপাদান থাকে তা গ্রহণ করলে হজমশক্তি ঠিক থাকে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য আশংকা থাকে না।
বিট: নিয়মিত বিট খাবেন তো শরীর ফিট। বিটে পটাশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, আয়রন, ভিটামিন বি৬, এ, সি, নাইট্রেট আছে। শরীরকে বিষমুক্ত করার উপাদান আছে বিটে। নিয়মিত বিটের জুস খেলে শরীরের বিভিন্ন অংশে জমা বিষাক্ত উপাদান দূর হয়ে শরীর পরিষ্কার হয়, ত্বক সুন্দর হয়। সবচেয়ে ভালো ফল পেতে প্রতিদিন সকালে সতেজ বিটের জুস খেতে হবে। তথ্যসূত্র: ইনডিপেনডেন্ট, হেলথলাইন।