টানা বৃষ্টিতে কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফের ক্যাম্পগুলোতে আশ্রয় নেয়া নারী এবং শিশুরা পড়েছেন বিপাকে। পলিথিনে মোড়ানো টংঘরে বৃষ্টি প্রবেশ করে সহজেই। বৃষ্টির পানিতে হাঁটু পানি জমে গেছে প্রতিটি ক্যাম্পে। ফলে হতভাগ্য নারী ও শিশুরা পড়েছে চরম দুর্ভোগে ।
সরেজমিন কক্সবাজারের উখিয়ার কুতুপালং, বালুখালী, থ্যাংখালী, পালংখালী, টেকনাফের নয়াপাড়া ও লেদাসহ বিভিন্ন ক্যাম্প ঘুরে দেখা যায়, প্রতিটি ক্যাম্পে আশ্রয় নেয়া পরিবারগুলোতে অধিকাংশ শিশু। পলিথিনে মোড়ানো টংয়ে ঠাঁই হয়েছে তাদের। রোদ-বৃষ্টি সহজেই টং ঘরে প্রবেশ করে। পলিথিনের ছাউনির ভেতরটা ফাঁকা। মাটিতে বা পলিথিনের উপরে শুয়ে আছে অধিকাংশ শিশু, ভিজছে বৃষ্টিতে।
সেনাদের নির্যাতন থেকে বাঁচতে রাখাইনের নাড়ুপাড়া থেকে কুতুপালং ক্যাম্পে আশ্রয় নিয়েছেন ৭ সন্তানের জননী, অন্তঃসত্ত্বা আমিনা বেগম। তিনি যুগান্তরকে বলেন, ঘরের মধ্যে অনবরত পানি ডুকছে। এছাড়া বাতাসে ঘর উড়িয়ে নিয়ে যাওয়ার অবস্থা। শুয়ে থাকার কোনো উপায় নেই। বাচ্চাদের নিয়ে কোনোমতে মাটিতে বসে আছি।
একই অবস্থা থ্যাংখালী ক্যাম্পে আশ্রায় নেয়া তাসলিমা বেগমের। চার সন্তানসহ থ্যাংখালী ক্যাম্পের পাহাড়ের চূড়ায় ঠাঁই হয়েছে তার। ঘরে পানি ঢুকছে, প্রচণ্ড বাতাস তার সঙ্গে মুষলধারে বৃষ্টি । গায়ের কাপড় না থাকায় শিশুরা কাঁপছে। কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্পের সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম যুগান্তরকে বলেন, বৃষ্টিতে ক্যাম্পগুলোর অবস্থা অত্যন্ত ভয়াবহ। ভেজা শরীরে রয়েছে নারী ও শিশুরা। ক্যাম্পে রোগ-বালাইয়ের প্রকট বৃদ্ধি পেয়েছে।
উখিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্রের কর্মকর্তা মেজবাহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, বৃষ্টির কারণে ক্যাম্পগুলো বসবাসের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। বেশিরভাগ শিশু ডায়রিয়া, হাম, জ্বর, কাশি, অ্যালার্জি, শ্বাসতন্ত্রের সমস্যা ও নিউমোনিয়ায় ভুগছে। পাশাপাশি আছে আঘাতজনিত সমস্যা, চর্মরোগ ও তীব্র পুষ্টিহীনতা। শিশু ও স্তন্যদায়ী মায়েরা অসুস্থ হচ্ছেন বেশি। প্রায় প্রতি ঘরেই এক বা একাধিক রোগী রয়েছে।