মিয়ানমার সরকারের নির্যাতনের শিকার হয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের নিঃশর্তভাবে ফিরিয়ে নেয়ার আহবান জানিয়েছে কমনওয়েলথ পার্লামেন্ট অ্যাসোসিয়শন (সিপিএ)। ঢাকায় অনুষ্ঠিত সম্মেলনের পক্ষ থেকে এ আহবান জানানো হয়।
সম্মেলন থেকে রোহিঙ্গারা যে মানবেতর সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে, তা সমাধানে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কেও দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার আহ্বান জানানো হয়।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে সিপিএ’র ৬৩তম সম্মেলনের সাধারণ অধিবেশনের সমাপনী পর্বে বাংলাদেশসহ সদস্য দেশগুলোর দাবির পরিপ্রেক্ষিতে বিবৃতিটি উত্থাপন করা হয়। পরে সর্বসম্মতভাবে বিবৃতিটি গ্রহণ করা হয়।
সম্মেলন থেকে এই বিবৃতিটি সিপিএভুক্ত সব সংসদ সদস্য, জাতিসংঘের মহাসচিব এবং সংশ্লিষ্ট আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক সংস্থাকে পাঠানোর জন্য সিপিএ সেক্রেটারি জেনারেলকে বলা হয়েছে।
একইসঙ্গে মিয়ানমারে এই উদ্বেগজনক ঘটনা অব্যাহত থাকলে সিপিএ’র পরবর্তী সম্মেলনের সাধারণ অধিবেশনে তা উত্থাপন করতে বলা হয়েছে।
সিপিএ চেয়ারপারসন ও স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাপনী অধিবেশনে চার পৃষ্ঠার এই বিবৃতিটি উত্থাপনের পর অধিবেশন কক্ষে উপস্থিত প্রতিনিধিরা টেবিল চাপড়ে সিপিএ নেতাদের অভিনন্দন জানান।
এ সময় বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের নেতা ও ডেপুটি স্পিকার অ্যাডভোকেট মো. ফজলে রাব্বী মিয়া ফ্লোর নিয়ে আনুষ্ঠানিক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। সিপিএ’র বিবৃতি অনুযায়ী চলমান রোহিঙ্গা সংকট নিরসনে বিশ্ব নেতারা মিয়ানমারের ওপর আরও বেশি চাপ সৃষ্টি করবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
সম্মেলন শেষে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, সিপিএ সম্মেলনে কোনো নির্ধারিত এজেন্ডা না থাকলেও সদস্য দেশগুলোর প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে সম্মেলনে রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে একটি প্রেস ব্রিফিংয়ের আয়োজন করা হয়। সেখানে বাংলাদেশের পদক্ষেপ ও সমস্যা সমাধানে বাংলাদেশের প্রস্তাবের পক্ষে অংশগ্রহণকারী প্রতিনিধিরা স্বতঃস্ফূর্ত সমর্থন জানায়। তাদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে একটি বিবৃতি গ্রহণ করা হয়েছে। যার মাধ্যমে এই সংকটের দ্রুত সমাধান হবে বলে সিপিএ আশা করছে। আর কমনওয়েলথভুক্ত দেশগুলো বাংলাদেশের পাশে থাকার যে প্রতিশ্রতি দিয়েছে তা সমস্যা সমাধানে বড় ধরনের ভূমিকা রাখবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
বিবৃতিতে রোহিঙ্গা ইস্যুতে বাংলাদেশ সরকারের গৃহীত পদক্ষেপের প্রশংসা করে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ সীমান্ত খুলে দিয়ে কয়েক লাখ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়েছে। তাদের খাদ্য, বস্ত্র, স্যানিটেশন ও চিকিৎসা ব্যবস্থা নিশ্চিত করেছে। এই সমস্যা সমাধানে বাংলাদেশে পাশে থাকার জন্য কমনওয়েলথভুক্ত রাষ্ট্রগুলোর প্রতি অনুরোধ জানানো হয়।
এ বিষয়ে সম্প্রদায়ের পক্ষ থেকে উদ্যোগ গ্রহণের আহ্বান জানিয়ে বলা হয়েছে, জাতিসংঘের সুপারিশ, বিশ্ব মানবাধিকার ঘোষণা, ইন্টার-পার্লামেন্টারি ইউনিয়ন (আইপিইউ)’র ১৩৭তম সম্মেলনে গৃহীত প্রস্তাব এবং জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের প্রস্তাবনার আলোকে এই সমস্যার দ্রুত সমাধান করা হোক।