নবমবারের মত সারাদেশে প্রাথমিক ও অষ্টমবার ইবতেদায়ী শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা শুরু হয়েছে আজ রোববার থেকে। রাজধানীসহ বিভাগীয় শহরের বড় স্কুল ও মাদরাসার পরীক্ষার্থীরা নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানেই পরীক্ষা দিচ্ছে। এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অন্য স্কুলের অভিভাবকরা।
সকাল ১১টা থেকে বেলা দেড়টা পর্যন্ত উভয় ধারায় (প্রাথমিক ও ইবতেদায়ী) ইংরেজি পরীক্ষা শান্তিপূর্ণ পরিবেশে এবং অনেকটা উৎসব আমেজে কোমলমতি শিশুদের পরীক্ষা হলে প্রবেশ করতে দেখা গেছে। সারাদেশে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনার বা বিশৃংখলার কোনো খবর পাওয়া যায়নি।
ঘোষিত পরীক্ষাসূচি অনুযায়ী আগামীকাল পরীক্ষার দ্বিতীয় দিনে প্রাথমিক ও ইবতেদায়ীতে বাংলা বিষয়ে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।
সারা দেশের সাত হাজার ২৭৯টি স্কুল ও মাদরাসা এবং বিদেশের ১২টি কেন্দ্রে প্রাথমিক ও ইবেতেদায়ী সমাপনী পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
সকাল ১১টা থেকে দুপুর দেড়টা পর্যন্ত পরীক্ষা চলছে। আড়াই ঘণ্টাব্যাপী পরীক্ষা নেয়া হচ্ছে।
আজ প্রথম দিনে স্কুল ও মাদরাসায় অনুষ্ঠিত ইংরেজি পরীক্ষায় এক লাখ ছয় হাজার ১৭ জন প্রাথমিকে আর ইবতেদায়ীতে ৩৮ হাজার ৯১২ জন শিক্ষার্থী অনুপস্থিত ছিল।
নবমবারের প্রাথমিক এবং অষ্টমবারের ইবতেদায়ী সমাপনী পরীক্ষায় এবছর প্রাথমিকে ২৮ লাখ চার হাজার ৫২৪ জন এবং ইবতেদায়ীতে দুই লাখ ৯১ হাজার ৫৬৬ জন শিক্ষার্থী এবারের পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে বলে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের (ডিপিই) নিয়ন্ত্রণ কক্ষের দেয়া তথ্য জানানো হয়েছে।
ডিপিই’র দেয়া তথ্যে জানা গেছে, প্রাথমিকে ও ইবতেদায়ীতে প্রথম দিনের পরীক্ষায় কোনো বহিষ্কারের ঘটনা ঘটেনি।
এদিকে, আজ সকাল ১১টায় প্রাথমিক ও ইবতেদায়ী সমাপনী পরীক্ষা উৎসব মুখর পরিবেশে শুরু হয়েছে। সারাদেশে একযোগে আট সেট প্রশ্নপত্রে সাড়ে ৩০ লাখের বেশি কোমলমতি শিশু এ পরীক্ষায় অংশ নেয়।
সকালে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান রাজধানীর পরীক্ষা শুরুর দিন রাজধানীর আইডিয়াল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মতিঝিল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, শান্তিনগর কো-অপারেটিভ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও রাজারবাগ পুলিশ লাইন্স সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পরীক্ষা কেন্দ্র পরিদর্শন করেন।
পরিদর্শনকালে মন্ত্রীর সাথে ছিলেন মন্ত্রণালয়ের সচিব মোহাম্মদ আসিফ-উজ-জামান ও অতিরিক্ত সচিব ড.এ এফ এম মনজুর কাদির, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. আবু হেনা মোস্তফা কামাল এনডিসি, ঢাকা বিভাগের উপপরিচালক ইন্দু ভূষণ দেব।
তবে ক্ষুদে কোমলমতি পরীক্ষার্থীদের মনোযোগে ব্যাঘাত যেন না ঘটে সেজন্য মন্ত্রী কেন্দ্র পরিদর্শন করলেও কোনো পরীক্ষার কক্ষের ভেতরে প্রবেশ করেননি। তিনটি কেন্দ্রের বাইরে অপেক্ষামান অভিভাবক এবং এর আগে কেন্দ্র সচিব ও প্রতিষ্ঠান প্রধানের সাথে কথা বলেন। পরীক্ষা গ্রহণের গৃহীত ব্যবস্থা সম্পর্কে খোঁজ-খবর নেন।
পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে মন্ত্রী বলেন, সারা দেশে সুষ্ঠু ও নির্বিঘ্নে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এ পরীক্ষা সম্পূর্ণ করতে তিনি সবার সহযোগিতা কামনা করেন।
মন্ত্রী কেন্দ্রের বাইরে অপেক্ষামান অভিভাবকদের সাথে কুশল বিনিময় করেন ও পরীক্ষা সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলেন।
মন্ত্রী পরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, প্রশ্নপত্র ফাঁস গুজব ছাড়া কিছু নয়। কেউ কেউ গুজব ছড়াতে প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগ তুলছেন। প্রশ্ন ফাঁসের কোনো সুযোগ নেই।
মন্ত্রী বলেন, সাধারণত গণিত ও ইংরেজি পরীক্ষা নিয়ে অভিভাবক-পরীক্ষার্থীদের বাড়তি চিন্তা তৈরি হয়। এ কারণে রুটিনের প্রথমদিকে এ দুটি পরীক্ষা দেয়া হয়েছে। এ পরীক্ষায় কেউ একটু কম নম্বর পেলে তার জীবন নষ্ট হয়ে যাবে না।
পিইসি-সমাপনী পরীক্ষা কতদিন চলবে সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের উত্তরে মন্ত্রী বলেন, সরকার যতদিন চাবে ততদিন এ পরীক্ষা চলবে।