পদত্যাগ করার পর কেবল দায়মুক্তিই পাচ্ছেন না জিম্বাবুয়ের সাবেক প্রেসিডেন্ট রবার্ট মুগাবে। প্রেসিডেন্ট থাকা অবস্থায় যে বেতন পেতেন তার পুরোটাই পাবেন জীবনভর। সঙ্গে পাবেন বড় অঙ্কের বরাদ্দ। আর তাঁর মৃত্যুর পরে স্ত্রী গ্রেস মুগাবেও আর্থিক সহায়তা পেতে থাকবেন।
সেনাবাহিনী জিম্বাবুয়ের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেওয়ার পর গত মঙ্গলবার অভিশংসনের মুখে পদত্যাগে বাধ্য হন মুগাবে। ইতি ঘটে তাঁর ৩৭ বছরের শাসনের। রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যমের খবর, দায়মুক্তির শর্তে তিনি পদত্যাগে রাজি হন।
এখন জানা যাচ্ছে, রবার্ট ও গ্রেস মুগাবে নির্বাসনের পরিবর্তে জিম্বাবুয়েতে আয়েশি জীবনযাপন করবেন। প্রেসিডেন্ট হিসেবে থাকার সময় বাৎসরিক দেড় লাখ ডলার বেতন পেতেন মুগাবে। এই অঙ্কের পুরোটাই পেতে থাকবেন বাকি জীবন। এর পাশাপাশি পদত্যাগের প্যাকেজ হিসেবে এক কোটি ডলারের বেশি দেওয়া হবে সাবেক প্রেসিডেন্ট দম্পতিকে। এর অর্ধেক দেওয়া হবে একসঙ্গে। বাকি অর্থ ধাপে ধাপে।
আর মুগাবের মৃত্যুর পর তাঁর স্ত্রী, যিনি গুচি গ্রেস নামে পরিচিত, মুগাবের বাৎসরিক বেতনের অর্ধেক পেতে থাকবেন। সাবেক প্রেসিডেন্ট হিসেবে মুগাবে সব ধরনের নিরাপত্তা পাবেন।
স্থানীয় গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়, মুগাবে পদত্যাগের জন্য নিজের এবং স্ত্রীর দায়মুক্তি ও আর্থিক স্বাচ্ছন্দ্যের শর্ত দেন। পদত্যাগের আলোচনার সমঝোতাকারীরাও বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
একটি সূত্র জানায়, অভিশংসনের মুখে পদত্যাগের জন্য মুগাবে রাজি হওয়ার পর সেনা কর্মকর্তারা জরুরি বৈঠক ডাকেন। সেখানে প্রেসিডেন্টের শর্তগুলো নিয়ে আলোচনা হয় এবং ইতিবাচক সিদ্ধান্ত হয়।
১৯৬০ এবং ৭০-এর দশকে স্বাধীনতা আন্দোলনের সময় বেশ জনপ্রিয় ছিলেন মুগাবে। ১৯৮০ সালে ব্রিটিশ শাসনের অবসান ঘটে। এরপর স্বাধীনতাযুদ্ধের নায়ক মুগাবে টানা ৩৭ বছর ক্ষমতায় ছিলেন। ১৯৯৬ সালে তিনি বিয়ে করেন গ্রেস মুগাবেকে। গ্রেসকে ক্ষমতায় বসানোর পরিকল্পনা জনগণ ভালোভাবে নেয়নি। এর থেকে সৃষ্ট সংকটেই মুগাবের শাসনাবসান হয়।
তবে মুগাবের প্রতি সম্মান জানাতে ভোলেনি নতুন প্রেসিডেন্ট এমারসন মানাঙ্গাগোয়া। তিনি শুক্রবার প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেওয়ার পর দেওয়া বক্তৃতায় মুগাবেকে নিজের ‘পিতা’ এবং ‘পরামর্শদাতা’ হিসেবে উল্লেখ করেন। বলেন, ‘মুগাবে স্বাধীনতাসংগ্রামে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। খুবই জটিল সময়ে দেশের দায়িত্ব নিয়েছিলেন।’