শান্তিচুক্তির আলোচনায় ‘অনিচ্ছুক’ ফিলিস্তিনিদের সাহায্য বন্ধের হুমকি দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
মঙ্গলবার টুইটারে দেওয়া এক বার্তায় তিনি বলেন, সাহায্যের বিনিময়ে যুক্তরাষ্ট্র কোনো ধরণের ‘কৃতজ্ঞতা কিংবা সম্মান পাচ্ছে না’।
জেরুজালেমকে ইসরায়েলের রাজধানী হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ায় সবচেয়ে বিভাজিত ইস্যু ‘সরিয়ে রেখেই’ নতুন শান্তি আলোচনা শুরু করা সম্ভব বলেও মন্তব্য করেন ট্রাম্প, খবর বিবিসির।
দশককালের মার্কিন নীতি পাল্টে ডিসেম্বরে এক বিতর্কিত ঘোষণায় জেরুজালেমকে ইসরায়েলের রাজধানী হিসেবে স্বীকৃতি দেন ট্রাম্প; তেল আবিব থেকে দূতাবাস জেরুজালেমে সরিয়ে নেওয়ারও ঘোষণা দেন তিনি।
এ ঘোষণার পরপরই অঞ্চলজুড়ে নতুন করে সহিংসতা শুরু হয়।
যুক্তরাষ্ট্রের এ অবস্থানে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানায় ফিলিস্তিন। শান্তি প্রক্রিয়ায় মার্কিনিদের আর ‘নিরপেক্ষ মধ্যস্থতাকারী’ হিসেবে বিবেচনা করা হবে না বলেও জানায় তারা।
নির্বাচনী প্রচারে দেওয়া প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন করতে গিয়ে জাতিসংঘেও যুক্তরাষ্ট্রকে প্রায় ‘একঘরে’ করে ফেলেন ট্রাম্প। নিরাপত্তা পরিষদে যুক্তরাষ্ট্র বাদে সবাই ট্রাম্পের নতুন স্বীকৃতির বিরোধিতা করে।
Donald J. Trump
✔
@realDonaldTrump
It's not only Pakistan that we pay billions of dollars to for nothing, but also many other countries, and others. As an example, we pay the Palestinians HUNDRED OF MILLIONS OF DOLLARS a year and get no appreciation or respect. They don’t even want to negotiate a long overdue...
10:37 PM - Jan 2, 2018
9,850 9,850 Replies 17,953 17,953 Retweets 66,114 66,114 likes
Twitter Ads info and privacy
সাহায্য বন্ধের হুমকির মধ্যেই সাধারণ পরিষদে মধ্যপ্রাচ্য এবং ইউরোপের ঘনিষ্ঠ মিত্রসহ ১২৮টি দেশ যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থানের বিপক্ষে ভোট দেয়।
এরপরই জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থায় মার্কিন সাহায্য কমানোর ঘোষণা আসে।
নতুন বছরের শুরুতে পাকিস্তানে সাহায্য বন্ধের ঘোষণা দেন ডোনাল্ড ট্রাম্প; কোটি কোটি ডলার সাহায্যের বিনিময়ে দেশটির কাছ থেকে ‘মিথ্যা ও প্রতারণা’ ছাড়া আর কিছুই মেলেনি বলে মন্তব্য করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।
ওই টুইটের ধারাবাহিকতায় ফিলিস্তিনকেও সাহায্য বন্ধের হুমকি দেন তিনি।
“কেবল পাকিস্তানই নয়, যাদেরকে কোনো কারণ ছাড়াই কোটি কোটি ডলার দিয়েছি আমরা। উদাহরণ হিসেবে বলতে পারি, ফিলিস্তিনিদের আমরা প্রতিবছর কয়েকশ কোটি ডলার দিয়েও কোনো কৃতজ্ঞতা বা সম্মান পাচ্ছি না। তারা ইসরায়েলের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে ঝুলে থাকা শান্তি আলোচনায়ও আগ্রহ দেখাচ্ছে না।”
জেরুজালেমকে ইসরায়েলের রাজধানী হিসেবে ঘোষণা দেওয়ায় শান্তি আলোচনা শুরু হলে তেল আবিবকে ছাড় দিতে হবে বলেও মন্তব্য করেন ট্রাম্প।
“আলোচনার সবচেয়ে জটিল অংশ জেরুজালেমকে আমরা টেবিল থেকে সরিয়ে নিয়েছি; এর জন্য ইসরায়েলকে আরও (ছাড়) দিতে হবে। কিন্তু যেখানে ফিলিস্তিনিরা শান্তি চুক্তি নিয়ে কথা বলতেই আগ্রহী নয়, কেন আমরা তাদের পেছনে কাড়ি কাড়ি টাকা ঢালবো?,” মঙ্গলবার সন্ধ্যায় দেওয়া টুইটে বলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।
এর আগে জাতিসংঘে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত নিকি হ্যালি ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের নিয়ে কাজ করা জাতিসংঘের ত্রাণ সংস্থায় মার্কিন সাহায্য বন্ধ হতে পারে বলে জানান।
শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও সামাজিক বিভিন্ন কর্মসূচি চালানো জাতিসংঘের ত্রাণ সংস্থায় একক দেশ হিসেবে সবচেয়ে বেশি অর্থ সাহায্য করে যুক্তরাষ্ট্র; ২০১৬ সালে সংস্থাটিকে প্রায় ৩৭ কোটি ডলার দিয়েছিল তারা।
সংবাদ সম্মেলনে হ্যালি বলেন, “ফিলিস্তিনিরা আলোচনার টেবিলে আসতে রাজি না হওয়া পর্যন্ত প্রেসিডেন্ট নতুন করে আর সাহায্য না দেওয়া কিংবা তা একেবারেই বন্ধের কথা বলেছেন।”
মার্কিন প্রেসিডেন্টর সিদ্ধান্ত নিয়ে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে হওয়া ভোট ‘পরিস্থিতির জন্য সহায়ক হয়নি’ বলেও মন্তব্য করেন হ্যালি।
“ফিলিস্তিনিদের দেখাতে হবে যে, তারা আলোচনায় বসতে ইচ্ছুক। এখন পর্যন্ত তারা আলোচনায় বসতে রাজি নয় কিন্তু ঠিকই সাহায্য চাইছে। আমরা সাহায্য দেব না। আমরা নিশ্চিত করতে চাই যেন তারা আলোচনার টেবিলে আসে,” বলেন জাতিসংঘে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত।