নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দিয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত (মোবাইল কোর্ট) পরিচালনা অবৈধ ও অসাংবিধানিক ঘোষণা করে হাইকোর্টের দেয়া রায়ের বিরুদ্ধে লিভ টু আপিলের শুনানির দিন ১৬ জানুয়ারি নির্ধারণ করেছেন আদালত।
এই শুনানি নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত মোবাইল কোর্ট পরিচালনা অব্যাহত থাকবে বলে আদেশ দিয়েছেন আপিল বিভাগ। ভ্রাম্যমাণ আদালতের পক্ষে শুনানিকারী ব্যারিস্টার আমীর-উল ইসলাম দেশের বাইরে থাকায় মঙ্গলবার শুনানির জন্য সময় আবেদন করা হয়।
এর পরিপ্রেক্ষিতে ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি মো. আবদুল ওয়াহহাব মিঞার নেতৃত্বাধীন ৫ বিচারপতির বেঞ্চ নতুন তারিখ দেন।
এর আগে ২ জানুয়ারি আপিল নিষ্পত্তি শুনানিতে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দিয়ে যেভাবে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হয়, তার কড়া সমালোচনা করেন আপিল বিভাগ।
আদালত ব্যারিস্টার এম আমীর-উল ইসলামকে উদ্দেশ করে বলেন, এখন তো মানুষের ইন্টিগ্রিটি (নৈতিকতা) নষ্ট হয়ে গেছে। আপনি মোবাইল কোর্টের সামনে পড়েছেন কোনো দিন? মোবাইল কোর্ট নিয়ে মানুষের মনে আতঙ্ক আছে। ঘটনাস্থলেই আপনি সাজা দিয়ে দিচ্ছেন অথচ তাকে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দিচ্ছেন না।
২০১১ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর ভবন নির্মাণ আইনের কয়েকটি ধারা লঙ্ঘনের অভিযোগে আবাসন কোম্পানি এসথেটিক প্রপার্টিজ ডেভেলপমেন্টের চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান খানকে ৩০ দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ডাদেশ দেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। ২০ সেপ্টেম্বর তিনি জামিনে মুক্তি পান।
এর পর ১১ অক্টোবর ভ্রাম্যমাণ আদালত আইনের (মোবাইল কোর্ট অ্যাক্ট ২০০৯) কয়েকটি ধারা ও উপধারার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে রিট আবেদন করেন তিনি।
রিটের শুনানি নিয়ে একই বছর রুল জারি করেন হাইকোর্ট।
আদালতের জারি করা রুলে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটদের দিয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার ৫ ধারা এবং ৬(১), ৬(২), ৬(৪), ৭, ৮(১), ৯, ১০, ১১, ১৩, ১৫ ধারা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। পরে এ ধরনের আরও দুটি রিট করা হয়।
তিন রিটে মোট ১৯ আবেদনকারীর শুনানি শেষে ১১ মে রায় ঘোষণা করা হয়।
এর পর রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনে এ আদেশ স্থগিত করে আপিল বিভাগের চেম্বার কোর্ট আদালত বিষয়টি পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে প্রেরণ করে আদেশ দেন। একই সঙ্গে হাইকোর্ট বিভাগের রায় প্রকাশ হলে রাষ্ট্রপক্ষকে নিয়মিত আপিল করারও নির্দেশ দেয়া হয়।