বিদায়ী ২০১৭ সালে রেকর্ড ১০ লাখ ৮ হাজার ৫২৫ জন কর্মীর বিদেশে কর্মসংস্থান হয়েছে। চলতি বছর ১২ লাখ কর্মীর বিদেশে কর্মসংস্থান হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী নুরুল ইসলাম বিএসসি। তিনি জানান, ২০১৬ সালের তুলনায় ২০১৭ সালে ৩৩ শতাংশ বেশি কর্মী বিদেশে গমন করেছে।
বুধবার রাজধানীর ইস্কাটনে প্রবাসীকল্যাণ ভবনে মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে ২০১৭ সালে জনশক্তি রফতানির নানা সাফল্য তুলে ধরতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রী বলেন, ২০১৮ সালে ১২ লাখ কর্মী বিদেশে প্রেরণের পরিকল্পনা রয়েছে। তবে বর্তমান ধারা অব্যাহত রাখাসহ আরও বেশি সংখ্যক দক্ষ ও প্রশিক্ষিত কর্মী প্রেরণের ওপর গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। কর্মী প্রেরণের ক্ষেত্রে সংখ্যার তুলনায় গুণগত মানের ওপর সর্বাধিক গুরুত্ব দেয়া এবং সে লক্ষ্যে ক্রমান্বয়ে অদক্ষ কর্মী প্রেরণ কমিয়ে আধাদক্ষ ও দক্ষ কর্মী প্রেরণ বৃদ্ধি করার পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের। কর্মী পাঠানোর ক্ষেত্রে সেবা প্রদানে আরও বিকেন্দ্রীকরণ ও ডিজিটালাইজেশন ব্যবস্থাপনার ওপর গুরুত্বারোপ করছি। বিদেশ ফেরত কর্মীদের ইউনিয়নভিত্তিক ডাটাবেজ প্রণয়নের পরিকল্পনা রয়েছে।
নুরুল ইসলাম বিএসসি বলেন, বিভিন্ন দেশে ১০ লাখ ৮ হাজার ৫২৫ জন জনশক্তি রফতানি হয়েছে, যা জনশক্তি রফতানির ইতিহাসে সর্বোচ্চ। এর মধ্যে সর্বোচ্চ সংখ্যক ৫ লাখ ৫১ হাজার ৩০৮ জন শুধু সৌদি আরবেই গমন করেছে। এরপরই মালয়েশিয়া, ওমান, কাতার ও কুয়েতে যথাক্রমে : ৯৯ হাজার ৭৮৭ জন, ৮৯ হাজার ৭৪ জন, ৮২ হাজার ১২ জন ও ৪৯,৬০৪ জন। বিদায়ী বছরে ১ লাখ ২১ হাজার ৯৪১ জন নারী কর্মীর বিদেশে কর্মসংস্থান হয়েছে। এর মধ্যে সৌদি আরবে ৮৩ হাজার ৩৫৪ জন, জর্ডানে ১৯ হাজার ৮৭২ জন এবং ওমানে ৯ হাজার ১৯৯ জন। এ বছর প্রবাসী কর্মীদের প্রেরিত রেমিটেন্সের পরিমাণ ১৩ হাজার ৫২৬ দশমিক ৮৪ মিলিয়ন মার্কিন ডলার।
প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রী সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য তুলে ধরে বলেন, বর্তমানে ১৬৫ দেশে জনশক্তি রফতানি হচ্ছে। বিদ্যমান শ্রমবাজারসমূহ ধরে রাখার পাশাপাশি নতুন নতুন শ্রমবাজার সৃষ্টির ওপর জোর দেয়া হচ্ছে। একটি অভিজ্ঞ প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে বিদ্যমান এবং নতুন দেশসহ ৫২টি দেশে শ্রমবাজার সম্প্রসারণের লক্ষ্যে গবেষণা কার্যক্রম সমাপ্তের পথে। এক্ষেত্রে ১২টি দেশ ভিজিট করে এবং ৪২টি দেশ হতে তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করে শ্রমবাজারের চাহিদা নিরূপণের কার্যক্রম চলছে। শিগগিরই তার রিপোর্টের ভিত্তিতে পরবর্তী করণীয় নির্ধারণ করা হবে। অর্থাৎ চলতি বছরে আরও কয়েকটি দেশ বাংলাদেশের শ্রমবাজারের সঙ্গে যুক্ত হবে বলে আশা প্রকাশ করেন নুরুল ইসলাম বিএসসি।
এ সময় মন্ত্রী বিদেশগামী কর্মীদের ট্রেনিং, সেবার মান বাড়ানোসহ সরকারের নেয়া নানা উদ্যোগের কথা তুলে ধরেন। এছাড়া জনশক্তি রফতানিতে পিছিয়ে পড়া ৪২ জেলার তরুণ-তরুণীদের প্রশিক্ষণ দিয়ে দক্ষ করে দেশে-বিদেশে কর্মসংস্থান তৈরির বিভিন্ন প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি। সংবাদ সম্মেলনে প্রবাসী কল্যাণ সচিব ড. নমিতা হালদার, অতিরিক্ত সচিব আমিনুল ইসলাম, যুগ্ম সচিব মোহসিন চৌধুরীসহ মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।